বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যেই বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরবকে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, আন্তর্জাতিক তেলের বাজার থেকে ভেনেজুয়েলা ও ইরানকে দূরে রাখতে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা আমেরিকার জন্য অত্যন্ত জরুরি। তবে দেশ দু’টি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকার ফলে যে সঙ্কট তৈরি হবে, তাতে তেলের দাম বাড়লে লাভবান হবে উৎপাদক দেশগুলোই। এটা ওপেক এবং রাশিয়া উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকা বারবার বলছে, ভেনেজুয়েলা ও ইরানের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার স্বাভাবিক রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে। ভারত-সহ যে দেশগুলি তাদের প্রয়োজনের অপরিশোধিত তেলের একটি বড় অংশ আমদানি করে তেহরান থেকে, আমেরিকা চাইছে, এবার সেই দেশগুলি তা বন্ধ করুক, অবিলম্বে। কিন্তু, অত সস্তায় তেল দেবে কে? এই সমস্যা মেটাতে, সৌদির মতো তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির কাছে ট্রাম্পের দাবি, উৎপাদন ২৫ শতাংশ বাড়ানোর মাধ্যমে যেন তেলের দাম আরও কমানো হয়। তাছাড়া আগামী বছর দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে নামবেন ট্রাম্প। কম দামে পশ্চিম এশিয়া থেকে তেল কিনতে সক্ষম হলে বিষয়টি নিজের কৃতিত্ব হিসেবে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করতে চাইবেন তিনি। অর্থাৎ, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কেমন হবে, তা আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প যতই চেষ্টা করুন না কেন, সব অঙ্ক গুলিয়ে দিয়ে রাতারাতি আন্তর্জাতিক তেলের বাজারের প্রধান নায়কে পরিণত হয়েছেন পুতিন।
উৎপাদন কমানোর পুতিনের ঘোষণায় খুশি নয় রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ইরানও। দেশটির তেলমন্ত্রী বিজান জানগানেহ ওই ঘোষণার সমালোচনা করে বলেছেন, এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসলে ওপেকের মৃত্যু ঘটতে চলেছে। তেল উৎপাদন ইস্যুতে সৌদি আরবের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতায়ও আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি। সম্প্রতি ওপেক-এর সদস্য দেশগুলোর সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা ছিল মূলত পুতিনের ঘোষণারই প্রতিধ্বনি। বিশ্ববাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত তেলের সরবরাহ কামানোর সিদ্ধান্ত নেয় ওপেক। ১ জুলাই ভিয়েনায় ওপেকভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিদের বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন সংস্থাটির মহাসচিব। তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের সরবরাহ সীমিত রাখার মেয়াদ ২০২০ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বাড়ানোর ব্যাপারে একমত হয়েছে সদস্য দেশগুলো। এর আগে রাশিয়ার জ্বালানি মন্ত্রী আলেক্সান্ডার নোভাক বলেন, তার দেশ তেলের উৎপাদন না-বাড়ানোর পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে। ওপেকের সাম্প্রতিক এই সম্মেলনে সংস্থাটির ওপর রাশিয়ার কর্তৃত্ব স্পষ্ট। আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে প্রশ্ন এখন একটাই, তাহলে কি পুতিনই ওপেকের নতুন বস? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সংস্থার সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ বলেন, ‘আমার মনে হয়, রাশিয়ার প্রভাবকে স্বাগত জানানো উচিত।’