বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
প্রকাশিত সংবাদে জানা গিয়েছে, শহরে বিভিন্ন রাস্তার ধারে রয়েছে ১৭ হাজার টাইম কল। প্রতিদিন বাইরে থেকে কাজে আসা লক্ষাধিক মানুষ থেকে শুরু করে পথেঘাটে বেরনো মানুষের তৃষ্ণা নিবারণ ও ফুটপাতবাসীর নিত্যদিনের কাজ সারতে এমন ১৭ হাজার পানীয় জলের কল রয়েছে শহরে। শুধু তাই নয়, বহু বাড়ির লোকজনেরও রোজকার জীবনধারণের জন্য এই কলগুলিই একমাত্র ভরসা। অথচ এর বেশিরভাগ কলেরই মুখ নেই। যদিও নির্দিষ্টভাবে কত সংখ্যক কলের মুখ নেই, তার কোনও স্পষ্ট চিত্র নেই পুরসভার কাছে। এভাবে প্রতিদিন কত জল অপচয় হয়, তারও কোনও নির্দিষ্ট হিসেব নেই পুরসভার কাছে। এনিয়ে কখনও সমীক্ষাও হয়নি। আসা-যাওয়ার পথে একটু তাকিয়ে থাকলেই দেখা যাবে, যখন নিয়ম মতো জল আসে, সেই সময় মুখবিহীন কলগুলি থেকে অবিরাম জল পড়েই যায়। এভাবে প্রতিদিন কতটা জল অপচয় হচ্ছে, তারও কোনও ধারণা নেই পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের। তবে এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবই দায়ী। জনগণ যদি না দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ বন্ধ করে, তাহলে প্রশাসন আর কী করতে পারে?
একথাও ঠিক রাস্তার বহু কলেই মুখ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একমাস-দু’মাসের মধ্যে তা ভেঙে বা খুলে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। জানা গিয়েছে, পুরসভার ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েক বছর আগে ‘ওয়াটার লস ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্প হাতে নেয় পুরসভা। তাতে বাড়ি বাড়ি মিটার ও ব্লক মিটার বসিয়ে জলের জন্য কোনও কর না নিয়েও অপচয় অনেকটাই ঠেকানো গিয়েছে।
তবে দেশজুড়ে পানীয় জলের যে সঙ্কট চলছে, তা কলকাতাকে ছুঁয়ে ফেলতে দেরি নেই। চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুর মতো মহানগরীতে জলের সঙ্কট যে কতটা তীব্র হতে পারে, তা আমরা ইতিমধ্যেই প্রত্যক্ষ করেছি। পানীয় জলের জন্য মানুষকে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটতে হয়েছে। বোতলের জল কিনতে প্রচুর গ্যাঁটের কড়ি খরচ হয়েছে। ফলে, সেই দিনও আমাদের শহরকে স্পর্শ করতে পারে যে কোনও দিনই। কৃষিতে জলসেচে ও শহরে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে যেভাবে আমরা জল ব্যবহার করি, তা আদৌ গ্রহণযোগ্য কি না তা এবার অন্তত ভাবা দরকার। প্রাচীন কালে জলাভাবে বহু নগরী-জনপদ মরুভূমি হয়ে গিয়েছে। অনেক অঙ্গরাজ্য উজাড় হয়ে গিয়েছে অথবা স্থানান্তরিত করতে হয়েছে। ফলে, নগর ও সভ্যতা পত্তনের পর থেকে আমরা যেভাবে মাটি ও জলের ক্ষয়সাধন করে গিয়েছি, তার ক্ষতি আজ চোখে আঙুল দিয়ে ধরা পড়ছে আমাদের কাছে। প্রকৃতির প্রতি এই অহেতুক অত্যাচারের প্রতিশোধ নেওয়ার পালা শুরু হয়ে গিয়েছে ভুবন জুড়ে। ফলে, এখনই সাবধান! গাছ, জল, ভূমি, নদী বাঁচাতে এই মুহূর্ত থেকে গড়ে উঠুক এক জনজাগরণ।