বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
রহমতপুর গ্রামের বাসিন্দা আনসার আলি বলেন, ছোট থেকেই আমরা নৌকায় নদী পারাপার করে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করি। শিক্ষা, কর্মসংস্থানের কারণে আমাদের নদী পার করে ওপারে যেতেই হয়। বহুবার বহু দুর্ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু অন্য কোনও পথ না থাকায় আমরা বাধ্য হয়েই নৌকা ব্যবহার করে থাকি। তবে বর্ষার সময়ে আমাদের সমস্যা চূড়ান্ত বেড়ে যায়। এবিষয়ে প্রশাসন আমাদের দিকে মুখ তুলে দেখলে আমরা খুশি হতাম। এলাকার ছাত্রদের বক্তব্য, প্রতিদিন আমরা এভাবেই নদীর ওপার থেকে এপারে এসে স্কুলে যাই। অন্য কোনও রাস্তা না থাকায় আমাদের নিত্যদিন এভাবেই আসতে হয়। বাড়ির লোকেরাও আতঙ্কে দিন কাটান। রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা এলাকার বাসিন্দা রেজাউল হক বলেন, এটা সত্যি কথা নদীর ওপারে থাকা কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা নিত্যদিন নৌকায় পারাপার করতে বাধ্য হন। বিশেষ করে রহমতপুরের বাসিন্দারা বেশি সমস্যায় আছেন। আমরা সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট হয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। আমাদের সরকার নিশ্চয়ই সাহায্য করবে। জেলা পরিষদের পরিষদীয় দলনেতা পূর্ণেন্দু দে বলেন, ওইসব এলাকার মানুষদের সমস্যা সমাধানের জন্য ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর থেকে নিমতলা ঘাটে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে আমরা পদক্ষেপ করছি।
গ্রামগুলির কিছুটা অংশ বিহারের মধ্যে হলেও বেশিরভাগটাই উত্তর দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত। প্রতিদিন নৌকায় চড়ে কয়েকশো মানুষ এপার ওপার করে থাকে। ব্যবসা, চাকরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সমস্ত কিছুর জন্যই তাঁদের নদী পার হয়ে আসতে হয়। ফলে তাঁদের ন্যূনতম যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব থেকেই গিয়েছে। সকাল ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নৌকা পরিষেবা চললেও তারপর বন্ধ হয়ে যায়। কোনও কারণে রাতে কেউ অসুস্থ হলে তাঁরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। কলা গাছের ভেলা বানিয়ে রোগীকে নিয়ে আসতে হয় হাসপাতালে। ২০১৭ সালে উত্তর দিনাজপুর জেলায় ভয়াবহ বন্যার সময়ে নৌকা পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা মনে পড়লে এখনও শিউরে ওঠেন বাসিন্দারা। নদীর এপার থেকে তাঁদের কাতর আর্তনাদ শুনেও সাহায্য করতে পারেননি এপারের বাসিন্দারা। দুই নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় ভাঙনের সম্ভাবনাও থাকে প্রবল। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির শিকার হন রহমতপুরের বাসিন্দারা। একেবারে দুই নদীর সংযোগস্থলে দ্বীপের মত অবস্থিত বলে এই গ্রামটির নাম হয়ে গিয়েছে দ্বীপনগর। তাই এবারেও বর্ষার মরশুম হতেই বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।