বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
রেলমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাগীরথী নদীর উপর রেলসেতুসহ আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ নতুন রেললাইন স্থাপনের প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। এই প্রকল্পের জন্য বাজেট বরাদ্দ এবার কমানো হয়েছে। বরাদ্দ কমিয়ে নামমাত্র করা হয়েছে বালুরঘাট-হিলি নতুন রেল প্রকল্পে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে ঘোষিত বাংলার ডবললাইন স্থাপনের প্রকল্পগুলিও এবার দুয়োরানির সন্তান হয়ে গিয়েছে যেন। শুধু তাই-বা কেন, পিঙ্ক বুক বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে সামগ্রিকভাবে বাংলার বেশিরভাগ প্রকল্পই এবার মোদি সরকারের কৃপাদৃষ্টি লাভে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর নতুন রেললাইনের জন্য গত বছর প্রায় ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। এবার সেখানে দেওয়া হয়েছে মাত্র এক কোটি টাকা। দেওঘর-সুলতানগঞ্জ নতুন রেললাইনের জন্য এবার দেওয়া হয়েছে মাত্র ১০ লক্ষ টাকা, যেখানে বরাদ্দটা গতবার ছিল প্রায় ৬ কোটি টাকা। রেললাইন নবীকরণ কিংবা গেজ পরিবর্তনের মতো খাতেও বাংলা এবার পরিষ্কার বঞ্চনার শিকার হয়েছে। কলকাতা এবং শহরতলিকে কেন্দ্র করে যে একাধিক মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলছে সেগুলির প্রতিও এবারের বাজেটে সুবিচার করেনি মোদি সরকার। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হল, সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক-হলদিরাম মেট্রো প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ রসিকতার পর্যায়ে চলে গিয়েছে—স্রেফ ১০ লক্ষ টাকা।
বিজেপি কেন্দ্রে তিনবার ক্ষমতাসীন হয়েছে। ২০১৪ সালের পর নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ জুটি রাজ্যজয়ে বেরিয়ে উনিশটি রাজ্য স্পর্শ করে ফেলেছিলেন। কিন্তু বিজেপি কোনোদিনই বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাংলায়। সেই আক্ষেপ পূরণ করার প্রতিজ্ঞা নিয়েই এবার ভোটের প্রচারে বার বার বাংলায় এসেছিলেন মোদি এবং শাহ দু’জনেই। তাতে তাঁরা যে সাফল্য পেয়েছেন তাকে অপ্রত্যাশিতই বলতে হবে—দু’জন থেকে একেবারে আঠারোজন লোকসভার এমপি! ধরে নেওয়া হয়েছিল এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বাংলার মানুষের প্রতি বিজেপি নেতৃত্বের কৃতজ্ঞতার প্রকাশ থাকবে। সেই আশায় জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। তারপর ভাবা হচ্ছিল যে মোদি সরকার উন্নয়ন দিয়ে ব্যাপারটা পুষিয়ে দেবে। কিন্তু তা যে হওয়ার নয় তার টাটকা প্রমাণ এই বাজেটে বাংলার রেল প্রকল্পগুলির জন্য হাস্যকর সব অর্থবরাদ্দ। বলা দরকার, নোয়াপাড়া-বারাসত (ভায়া দমদম বিমানবন্দর) মেট্রোরেল প্রকল্প এবং চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানার জন্য বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এজন্য মোদি সরকার প্রশংসা পাবে। কিন্তু বাকি বিশাল ক্ষেত্রে যে ব্যাপক বঞ্চনার দৃষ্টান্ত রয়ে গেল তাতে ওই প্রশংসা কোনও কাজে আসবে বলে মনে হয় না। ২০২১ সালে বিধানসভার ভোট যদি উন্নয়নের তুল্যমূল্য বিচারে হয় তবে বিজেপিকে এর মূল্য গুনতে হতে পারে।