বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
প্রতি বছর দশমীর দিনটির জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকেন দুই বাংলার মানুষ। দেশ, বিদেশ, এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে লক্ষাধিক দর্শনার্থী টাকিতে জড়ো হন দশমীতে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দশমীর সকাল থেকেই ভিড় জমতে থাকে ইছামতির পাড়ে। দুপুর গড়াতেই নদীর পাড় যেন জনসমুদ্র। পাড়ে থাকা হোটেল, লজগুলির ছাদে থিকথিকে ভিড়। বিকেল তিনটে থেকে শুরু হল নিরঞ্জন পর্ব। নৌকায় ওঠানো প্রতিমা নিয়ে এবার বাংলার পুজো কমিটির সদস্যরা রওনা দিলেন ইছামতীর মাঝ বরাবর। বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এলাকার পুজো কর্তারাও নৌকায় প্রতিমা নিয়ে এগলেন। নিরাপত্তার কারণে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সীমানা দেওয়া পর্যন্ত নৌকাগুলি পৌঁছয়। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নির্দেশ মত দুই দেশের নৌকা বেশ কয়েক ফুট দূরত্বে থামে। এরপরেই শুরু হয়ে যায় দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়। এই মিলন পর্বে উচ্ছ্বাস আছড়ে পড়ে দুই পাড়ের দর্শনার্থীদের মধ্যে। এই সুযোগে নৌকায় থাকা দুই দেশের কেউ কেউ আত্মীয়দের সঙ্গে দূরে থেকেই কথাবার্তা বলেন। শুভেচ্ছার বিনিময় হয়। এই আনন্দের মুহূর্ত চলল বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত। টাকি শহর সহ সংলগ্ন এলাকার পুজো কমিটিগুলি একে একে প্রতিমা নিরঞ্জন করেন ইছামতী নদীর জলে। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এলাকা থেকে এবার দুর্গা প্রতিমা এসেছে কম।
ইছামতীর বিসর্জন দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন সংসদ সদস্য নুসরত জাহান। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী দলীয় এমপিকে লঞ্চে চাপিয়ে নদীতে ঘোরেন। নুসরত লঞ্চের খোলা জায়গায় এসে পুরো বিসর্জন পর্ব দেখেন। অভিনেত্রীকে দেখেও দর্শনার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। ইছামতীর ঘাটে প্রশাসনিক ব্যবস্থা দেখতে হাজির ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালী চক্রবর্তী সহ অন্যান্য উচ্চ পদস্থ পুলিস কর্তারা।
দশমীর এই বিসর্জনে এবার প্রশাসনিক অব্যবস্থা নিয়ে দর্শনার্থী, পর্যটকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, টোটো ইচ্ছেমত ভাড়া চেয়েছে। ১০ টাকার ভাড়া দিতে হয়েছে ৫০ টাকা। রাস্তায় সিভিক ভলান্টিয়াদের ভিড় সামাল দিতে দেখা গিয়েছে। রাজ্য পুলিস কর্মীর সংখ্যা তেমন ছিল না। ফলে একাধিক জায়গায় বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। ভিড় ঠেলে নদীর ঘাটে অনেকেই পৌঁছাতে পারেননি। পুজো কমিটির কর্তাদের অভিযোগ, প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য পুরসভার তরফে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়নি। ঘাট মালিকরা ইচ্ছে মত নৌকার ভাড়া চেয়েছেন। অনেক পুজো কমিটি চড়া ভাড়া দিয়ে প্রতিমা মাঝ নদীতে নিয়ে যেতে পারেনি।
বারাসত স্টেশন থেকে এবার স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা ছিল না। বরং ছুটির দিন বলে দুটি লোকাল ট্রেন বাতিল ছিল। এর জেরে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে দর্শনার্থীদের। টাকি পুরসভার চেয়ারম্যান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, পুরসভার তরফে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কোনও বিশৃঙ্খলা ঘটনা ঘটেনি। সুষ্ঠুভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। বুধবার, একাদশীতে হিঙ্গলগঞ্জেও ইছামতীর বিসর্জন দেখতে ভিড় উপচে পড়ে।