বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
বই বিক্রি শুধু নয়, এবছর পুজো উপলক্ষে দলের তরফে উৎসব প্রাঙ্গণে স্টল দেওয়ার ক্ষেত্রেও আগের সব হিসেবকে ছাপিয়ে গিয়েছে সিপিএম। বিভিন্ন জেলার হিসেব যোগ করে আলিমুদ্দিনের তরফে বলা হয়েছে, এবছর প্রায় ১১০০ স্টল দেওয়া হয়েছে গোটা রাজ্যে। বেশ কিছু জায়গায় বুধবার পর্যন্ত স্টল খোলা থাকায় এখনও বই বিক্রির পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রাথমিক যে হিসেব এসেছে, তাতে এবার প্রায় দু’কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। কলকাতার নেতাজিনগর এলাকার একটি স্টলে পুজোর প্রতিদিনই এক লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গোটা রাজ্যেই পার্টি পরিচালিত প্রকাশনা সংস্থা এনবিএ’র বই বিক্রি হয়েছে সর্বাধিক। আর চীনের বিষয় নিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের লেখা সর্বশেষ চটি-বই ‘স্বর্গের নীচে মহাবিশৃঙ্খলা’ এক্ষেত্রে এক নম্বর স্থান দখল করেছে। ইতিমধ্যেই বইটির দুটি সংস্করণ শেষ হয়েছে।
সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য স্বীকার করছে, গত কয়েকবারের মতো এবার পুজোর সময় স্টল তৈরির ক্ষেত্রে শাসকদলের তরফে কোনও বাধার মুখোমুখি হতে হয়নি। ভয়-ভীতির পরিবেশও ছিল না স্টল তৈরিকে কেন্দ্র করে। এই জন্য গোঘাট, হরিপাল বা আরামবাগের মতো ‘সন্ত্রাস কবলিত’ তল্লাটেও এবার স্বচ্ছন্দ্যে স্টল তৈরি করতে পেরেছেন স্থানীয় পার্টিকর্মীরা। তবে এবার পুজোর আগেই সব জেলা পার্টিকে আগাম নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, শত বাধা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট জায়গায় স্টল করতে হবে। প্রশাসন বা শাসকদলের বাধা এলে তা প্রতিহত করেই এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই কাজ করতে হবে। কলকাতায় দুটি স্টল তৈরির ক্ষেত্রে পুলিস আপত্তি জানিয়েছিল। কিন্তু দলের তরফে কার্যত চ্যালেঞ্জ নিয়ে দুই জায়গাতেই স্টল করা হয়। উল্লেখ্য, এবার পুজোর মধ্যেই বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিমের মতো শীর্ষস্থানীয় নেতারাও কলকাতার বেশ কয়েকটি স্টলে গিয়ে কর্মীদের বই বিক্রিতে উৎসাহিত করেন।
তবে এবার কেন বইয়ের বিক্রি এত বাড়ল, তা নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। আলোচনা চলছে দলের অন্দরেও। বিশেষ করে গত নির্বাচনে যে দল রাজ্যে মাত্র সাত শতাংশ ভোট পেয়েছে, সেখানে তাদের স্টলে এই বিপরীতধর্মী ছবি কীভাবে উঠে এল, সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। এবিষয়ে দলের পলিটব্যুরোর সদস্য সেলিমের ব্যাখ্যা, মার্কসীয় সাহিত্য ও বই পড়া মানে একটি আদর্শের চর্চা করা। রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের কোনও নির্দিষ্ট আদর্শ নেই। ওদের মানুষ এখন সুবিধাবাদী পার্টি বলেই মনে করছে। কিন্তু বিজেপি-আরএসএস একটি নির্দিষ্ট ভাবধারাকে সামনে রেখে এগতে চায়। তাই আমাদের মতাদর্শগত লড়াই মূলত তাদের বিরুদ্ধে। গত এক বছর ধরে বাংলায় যেভাবে গেরুয়া বাহিনীর দাপাদাপি বাড়ছে, তাতে তরুণ প্রজন্ম এখন তার বিপদ সম্পর্কে অবহিত হতে চাইছে। সেই কারণে আমাদের বই কেনায় আগ্রহ বেড়েছে মানুষের মধ্যে। সর্বোপরি, স্টল নিয়ে এবছর তরুণ পার্টিকর্মীদের উৎসাহও এবার চোখে পড়ার মতো। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের কাছে ইতিবাচক।