বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
কাহিনীর সূত্রপাত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্গত ঢাকার পল্টনের সাউ পরিবারকে সামনে রেখে। পেশায় তারা বই বিক্রেতা। চালায় পরিবারের বড় ছেলে দেবেন সাউ। শহরের সম্মাননীয় পরিবার। বইয়ের দোকানটিকে কেন্দ্র করে সাউ পরিবারটির সঙ্গে বুদ্ধিজীবীদের সহাবস্থান। একাত্তরের মুক্তি যুদ্ধ শুরু হতেই পাকসেনাদের নজর পড়ে পরিবারটির উপর। স্ত্রী চূর্ণী আর ভাই বীরেনকে নিয়ে দেবেনের সংসার। পাকা সাঁতারু, ছাত্র নেতা দেবেন আশ্রয় দিতে শুরু করে মুক্তি বিপ্লবীদের। কিন্তু পাক সেনাদের হাতে প্রতিবেশী, পরিজন, বন্ধুদের নির্বিচারে কচুকাটা হতে দেখে দেবেন সিদ্ধান্ত নেয় ভিটে ছাড়ার। স্ত্রী, ভাই আর পিতৃস্থানীয় হারুকাকাকে নিয়ে সে রওনা দেয় ‘ইন্ডিয়া’র উদ্দেশে। ওরা পড়ি দেয় ঘুরপথে। নদী পেরিয়ে চোরাপথে এসে পৌঁছয় শহর কলকাতায়। ঠাঁই হয় এক পতিতাপল্লিতে। অস্তিত্বের সংকটে পড়ে দেবেন। চূর্ণীকে যেভাবেই হোক রক্ষা করতে হবে। তৈরি করতে হবে আপন পরিচয়। কারণ, দেবেনরা কাঁটাতার ডিঙিয়ে আসেনি। তাই ওদের উদ্বাস্তু তকমাও নেই। ফলে যুদ্ধের পর দেশে ফিরে যাওয়ারও রাস্তা বন্ধ। বাঁচতে আর বাঁচাতে গেলে চাই ক্ষমতা, বাহুবল, সকলের থেকে শক্তিশালী হওয়ার কৌশল। চূর্ণীও কোমর বাঁধে লোলুপ লালসার ঘিনঘিনে ঘেরাটোপ থেকে বেরোনোর জন্য। ভাই বীরেন হয়ে ওঠে দাদা-বউদির পরিকল্পনার পৃষ্ঠপোষক। প্রতিষ্ঠা পেতে গেলে হতে হবে এই হতভাগ্য মানুষগুলির ‘রবিনহুড’। মুছে ফেলে ওরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পদবি। সাউ থেকে হয়ে যায় সেনাপতি। নয়া পরিচয়ে শহরের একাংশে ত্রাসের সাম্রাজ্য স্থাপন করে ‘দ্য সেনাপতিস’। কল্লোলিনীর কলজে চুইয়ে পড়তে শুরু করে টকটকে লাল রক্ত। সেই পিচ্ছিল নোনতা পথে লেখা হতে থাকে এক অন্য কলকাতার ক্লেদাক্ত কাহিনী।
পরিচালক রিঙ্গো বললেন,‘এটা একজনের বায়োপিক।’ কিন্তু কার? ‘পরিবারটির সঙ্গে চুক্তি আছে, নাম প্রকাশ করা যাবে না,’ বলে সন্তর্পনে পাশ কাটিয়ে গেলেন পরিচালক। শুধু সূত্র দিলেন এ এমন একজন ডনের কাহিনী, যার ডাকে কলকাতায় একটি ছবির প্রিমিয়ারে মেট্রো সিনেমায় হাজির হয়েছিলেন মুম্বইয়ের আন্ডার ওয়ার্ল্ড-এর তৎকালীন ত্রাস হাজি মস্তান আর তার শাগরেদ দাউদ ইব্রাহিম। পুরনো কলকাতা সহ গোটা মেট্রো সিনেমাটিকে পুনর্নির্মাণ করে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা হবে ওয়েব সিরিজটিতে, জানালেন রিঙ্গো। বললেন,‘কলকাতার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ে এই ধরণের এত বিস্তারিত কাজ এর আগে হয়নি।’ সিরিজটির প্রথম সিজনের সময়কাল ১৯৭১ থেকে ১৯৮৪। রাজীব মেহেতা জানালেন, প্রথম সিজিনটি শেষ হবে আইপিএস বিনোদ মেহেতা হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনা দিয়ে। দ্বিতীয় সিজনটির সময়কাল ১৯৮৫ থেকে ২০০১ পর্যন্ত। তৃতীয় সিজিনে রিঙ্গোর ক্যামেরায় প্রতিম্বিত হবে সমসাময়িক সময়, ২০০২ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত।
টাকিতে হয়েছে পূর্ব পাকিস্তান পর্বের শ্যুটিং। সম্প্রতি বেলগাছিয়া রাজবাড়িতে হয়ে গেল ওয়েব সিরিজটির প্রাথমিক পর্বের শ্যুটিং। দেবেনের ভূমিকায় অভিনয় করছেন শুভজিৎ কর। ভাই ‘বীরেন’ শুভদীপ (জয়) বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও আছেন চিরদীপ মিত্র দালাল ‘নান্টু’র ভূমিকায়।
প্রিয়ব্রত দত্ত ছবি: ভাস্কর মুখোপাধ্যায়