বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
আবির চট্টোপাধ্যায়; জয়া আহসান
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, লামা
‘বিসর্জন’ ছবির শেষেই পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় একটা আভাস দিয়েছিলেন যে এই ছবির সিক্যুয়াল হলেও হতে পারে। নিজের প্রেমকে গলা টিপে মেরে পদ্মা না হয় গণেশ মণ্ডলের সঙ্গে সংসার করতে রাজি হল। কিন্তু কী হল নাসেরের? অনেকটা এই প্রশ্নের উত্তর নিয়েই এল ‘বিজয়া’। প্রেমের আসল টান যে বিরহে, তা প্রেমিক মাত্রই জানে। নাসের আর পদ্মাও সেটা বুঝেছে। অসুস্থ স্বামী গণেশকে নিয়ে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য আসে পদ্মা। নাসেরের সঙ্গে অকস্মাৎ দেখা যাওয়ায় তার মনও হু হু করে ওঠে। ‘বিজয়া’র চুম্বক কলকাতায় পদ্মার সঙ্গে নাসেরের মোলাকাত। পুরনো স্মৃতির ঝাঁপি খুলে যায় এক লহমায়। গণেশের কাছেও এই সম্পর্কের অনেকটাই স্পষ্ট হয়। সে পড়ে ফাঁপড়ে। হৃদয়ের অসুখে ভোগা গণেশ কী করে নিজের ভালোবাসার পাত্রীর হৃদয়হরণকে মেনে নেয়? গণেশের চেকআপ চলতে থাকে। নাসেরের এক কামরার ঘরে পদ্মাকে নিয়ে উঠতে বাধ্য হয় সে। একদিকে মনের অস্থিরতা অন্যদিকে শরীরের অসুস্থতায় গণেশ যেন মরণের ডাক শুনতে পায়। রথের দিন নিরুদ্দেশ হয় গণেশ। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার হদিশ মেলে না। এই অবস্থায় নাসের পদ্মাকে বলে ছেলে মণ্টুকে (পিতৃপরিচয় গণেশের হলেও যে আসলে নাসেরের ঔরসজাত) নিয়ে কলকাতায় থেকে যেতে। এরপর কী হবে? সেটা না হয় হলে গিয়েই জানবেন দর্শক। নাটকীয় মোচড় এই ছবিতেও অব্যাহত রেখেছেন পরিচালক।
গণেশ মণ্ডলের চরিত্রে এবারও অনবদ্য কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। সংলাপ বলার ধরন, কয়েকটি দৃশ্যে তাঁর অভিব্যাক্তি অনেকদিন মনে থাকবে দর্শকের। মার্জিত ও আত্মগত অভিনয় করেছেন আবির চট্টোপাধ্যায় (নাসের) ও জয়া আহসান (পদ্মা)। ভালো লাগে অরিন্দোল বাগচী (ট্যাক্সি চালক), অরুণ গুহঠাকুরতা (লিয়াকত চাচা), লামার (লাউ) অভিনয়। দোহার ও ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তর সঙ্গীত ছবিকে আরও আবেগময় করেছে। ‘বিসর্জন’ এর সিক্যুয়েল নিয়ে দর্শকদের লাগামহীন প্রত্যাশা পূরণ করতে কৌশিক সার্থক। ওহো, সব শেষে কৌশিককে একটাই অনুরোধ— ট্রিলজির তৃতীয় অধ্যায়ের জন্য যেন দর্শককে খুব বেশি অপেক্ষা করতে না হয়। এ ছবি আসলে গভীর জীবনবোধের কথা বলে। সেই সঙ্গে দেশকাল, সীমানা ছাড়িয়ে এছবি মানবিকতার জয়ধ্বনিও দেয়। ছবি শেষ হলেও গণেশ মণ্ডল মায়ায় মোড়া আবেশ হয়ে রয়ে যায় হৃদকমলে।
গুঞ্জন ঘোষ