সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় নজর দেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিশ্রমে শরীরে অবনতি। নানাভাবে অর্থ অপচয়। কর্মপরিবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি।প্রতিকার: ... বিশদ
কেন্দ্রীয় সরকারি রিপোর্ট বলছে, গত দু’সপ্তাহে দিল্লিসহ দেশের নানা জায়গায় করোনার সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী। মহারাষ্ট্র, গুজরাত, হরিয়ানা, দিল্লিসহ ১৬টি রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ১৫০ শতাংশ। বৃদ্ধির হার অন্য ১৭টি রাজ্যে ১০০ শতাংশের বেশি। তারই মধ্যে খবর পাওয়া গেল যে ১১ মার্চ শিবরাত্রির শাহিস্নানে অংশ নিয়েছিলেন ৩৩ লক্ষ পুণ্যার্থী। আগামী মাসে মহাকুম্ভ রয়েছে হরিদ্বারে। ১২, ১৪ ও ২৭ এপ্রিল সেখানে বহু লক্ষ মানুষ শাহিস্নানে যোগ দেবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। উত্তরাখণ্ডের মুখমন্ত্রী তিরথ সিং রাওয়াত নিদান দিয়েছেন, মহাকুম্ভে যাওয়ার জন্য করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক নয়। পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল, অসম, পুদুচেরি প্রভৃতি পাঁচ রাজ্যে বিধানসভার ভোট অদূরে। কোটি কোটি মানুষ তাতে শামিল হবেন। সব মিলিয়ে এক বিরাট উৎকণ্ঠা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। করোনা প্রতিরোধ নিয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রী এক ভিডিও কনফারেন্স করেন। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনিও উদ্বেগ প্রকাশ করেন সেখানে। গত একবছরে প্রথম দফার সংক্রমণে গ্রাম ভারতের ক্ষতি অনেক কমই হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে দিয়েছেন, এবার দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সারির শহরগুলিতেও সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এই প্রবণতা রুখে দিতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে গ্রামভারতকে কি আর সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা যাবে? এই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছেন করোনা টেস্ট (আরটি-পিসিআর) এবং টিকাকরণের উপর।
দেশজুড়ে টিকাকরণ শুরু হয়েছে মার্চের গোড়ায়। টিকাকরণের কাজ মোটামুটি এগলেও চিন্তায় রেখেছে বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন নষ্ট হওয়ার ঘটনা। বুধবার পর্যন্ত খবর, ২২ লক্ষের বেশি ডোজ নষ্ট হয়েছে। প্রতিটি ডোজ কিনতে সরকারের খরচ হয়েছে ২০০ টাকা। সেই হিসেবে ইতিমধ্যেই প্রায় ৪৬ কোটি টাকার করোনা ভ্যাকসিন নষ্ট হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, একটি ডোজ নষ্ট হওয়া মানে একজনকে বঞ্চিত করা। সবচেয়ে বেশি ডোজ নষ্ট হয়েছে গোয়ায় (২১.৮ শতাংশ)। করোনা টেস্টে পিছিয়ে থাকা এবং ভ্যাকসিন নষ্টের প্রশ্নে শিরোনামে চলে এসেছে যোগীরাজ্য, থুড়ি মোদি-অমিত শাহদের সাধের রামরাজ্য। মহারাষ্ট্রের মতো অগ্রণী রাজ্যেও টিকাকরণে ব্যাপক গাফিলতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর। তাঁর বক্তব্য, ১৭ মার্চ পর্যন্ত ওই রাজ্যে ভ্যাকসিনের ৫৬ শতাংশ অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল। সব মিলিয়ে করোনা মোকাবিলায় সারা দেশেই কমবেশি গাছাড়া ভাব লক্ষণীয়। এই মহার্ঘ জীবনদায়ী ভ্যাকসিন নিয়ে যে ছেলেখেলা চলছে তা এককথায় সরকারি অপদার্থতা। এই ঘটনা রীতিমতো ভয়ের। সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ ইতিমধ্যেই মাস্ক পরা এবং স্যানিটাইজারের ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছেন। ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারেও কিছু মানুষের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব কাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি ক্ষেত্রের এই গাফিলতি ও ব্যর্থতা অমার্জনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত। যারা আইন ভাঙাকেই বিরাট জয় হিসেবে দেখতে ভালোবাসে সরকারের এই ভূমিকা তাদেরকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করবে। তীরে এসে ডুবলে তার দায় নিতে হবে মোদি সরকারকেই।