সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় নজর দেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিশ্রমে শরীরে অবনতি। নানাভাবে অর্থ অপচয়। কর্মপরিবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি।প্রতিকার: ... বিশদ
মন শুধু বলছে, ‘আজ সবার রঙে রং মেশাতে হবে’। তাই দোলের আগে শাড়িতে চাই উজ্জ্বলতার স্পর্শ। সাদার ওপরে রঙের আঁকিবুকিতেও আপত্তি নেই। তাই মনভোলানো সবরকম শাড়ির খোঁজ রইল এখানে। তবে সবই মূলত সুতির ওপর। কারণ বসন্ত উৎসবে শামিল হতে হলেও হাওয়ার গরম মালুম হচ্ছে ভালোই। তাই রং থাক, সঙ্গে আরামও থাক।
বাঁ দিকের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন সন্ধ্যারাগ বুটিকের (যোগাযোগ: ৬, যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ, গিরীশ পার্ক, কলকাতা-৬, ফোন-৯৮৩০০৩২৫৩৭, ৯০০৭০২৪৬৪৪) আবির গুলাল রঙে হাল্কা চান্দেরি ডিজাইনার শাড়িটি। প্রিন্টেড কটন এবং টিস্যু দিয়ে তৈরি হয়েছে তার বর্ডার। শাড়িটি ডিজাইন করেছেন ডা: দীপান্বিতা হাজারি। এ শাড়ি যেন তৈরি হয়েছে দোলের কথা ভেবেই। আবির খেলায় বন্ধুদের আসর জমিয়ে দিতে পারেন উজ্জ্বল এই শাড়ির সাজে। সন্ধ্যারাগ বুটিকের সামার কালেকশনে চান্দেরি ছাড়াও পাবেন কোটা, মণিপুরী, মলমল, হ্যান্ডলুম সুতি, কটন গাদোয়াল, কাঞ্চি সুতি, মঙ্গলগিরি, সুতি পোন্ডুরু, প্রিন্টেড সুতি, সুতিতে ইন্ডিগো আর বাগরুও রয়েছে সব বয়সের জন্য।
ডিজাইনার গৌরী ও সন্দীপ সাহা তাঁদের ব্র্যান্ড ‘নক্স দ্য লেবেল’ (যোগাযোগ: www.nakshthelable.com, ফেসবুক @nakshthelabel, ফোন-৯৮৩০২৬৯৪২) থেকে বসন্ত উপলক্ষে এনেছেন ‘বাগানবিলাস’ শাড়িটি (ছবিতে ডানদিকে ওপরে)। ইংরেজি ‘বোগেনভিলিয়া’-কে বাংলায় বলে ‘বাগানবিলাস’। সেই ফুলকে মনে রেখে নক্সের এই শাড়ি। অনেকে কাগজফুল বলেও চেনেন একে। ‘এই ধরনের ফুল ড্রয়িং করার সময় যেমন দেখতে হয়, অনেকে তেমনই আঁকেন,’ বলছিলেন গৌরী। তাঁর মতে, ‘ডুমুর, আঙুর ইত্যাদি অনেকেই আগে কল্কের মতো করে এঁকেছেন। আমি এই কাগজফুলটা এনেছি কল্কের মাধ্যমে।’ হ্যান্ডলুম খাদির সাদা জমিতে ব্লকের কাজগুলি গৌরী করেছেন নিজে হাতে। এই নকশাটা যাতে ফুটে ওঠে তাই ব্লকের আকারে তাকে রেখেছেন সাদা জমির ওপরে। সঙ্গে রয়েছে গোল্ডেন ইয়েলো সাের্কল।
‘বাগানবিলাস’ ছাড়াও আবিররঙা যে মলমল শাড়িটি তাঁরা ডিজাইন করেছেন, সেটির নাম ‘কোকিল’ (ছবিতে ডানদিকে নীচে)। বসন্তের অন্যতম অনুষঙ্গ কোকিল। তবে সাধারণভাবে কোকিলকে যেভাবে আঁকা হয়, তেমন আঁকেননি গৌরী। ভালো করে দেখলে বোঝা যাবে তফাৎটা। ‘বসম্তের সঙ্গে এ শাড়ির ভাবনায় এসেছে ক্যান্ডি ফ্লস বা হাওয়াই মিঠাই,’ বললেন গৌরী। বসন্তের বিকেলে স্কুল ছুটির পরে হাওয়াই মিঠাই কিনে হাতে নিয়ে খেতে খেতে বাড়ি ফেরা— অনেকের কাছেই ছোটবেলার এই স্মৃতি এখনও টাটকা। সেই ক্যান্ডি ফ্লসের রঙেই যেন রাঙা এই শাড়িটি।
নক্স-এর সামার কালেকশনে রয়েছে ‘পলাশ’ নামে আর একটি শাড়ি যার জমির রঙে থাকছে উজ্জ্বল পলাশ ফুল। যে পলাশ অহরহ জানান দেয় বসন্ত দিনের কথা। মলমলের পলাশ শাড়িতে আছে ট্র্যাডিশনাল চেনা মোটিফ যা তিন পেড়ে শাড়ির ডিজাইনে ছড়ানো। ‘নক্স দ্য লেবেলের’ সব শাড়িই কেমিক্যাল ফ্রি ন্যাচারাল ডাইয়ে করা।
এবার গ্রীষ্মে রঙিন মেখলা-চাদর-র্যাপ নিয়ে অন্যরকম সম্ভার সাজিয়েছে ব্র্যান্ড ‘চারু’ (যোগাযোগ: ফেসবুক @charulifestyle, ফোন: ৯০৫১১২৩১৫৩, ৯৮৩০৪৮১৩৭০)। এ রাজ্য এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের ট্র্যাডিশনাল টেক্সটাইল নিয়ে কাজ করেন প্রভাতী মণ্ডল এবং পৃথ্বীরাজ নাথ। ‘চারু’ সেই লক্ষ্যেই গড়ে তুলেছিলেন ওঁরা। ওই সব রাজ্য ঘুরে সেখানকার টেক্সটাইল দেখে ওঁদের মনে হয়েছিল, সেগুলো অপূর্ব। তাই সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করেন। র্যাপ-স্কার্ট, শাল, স্টোল, স্কার্ফ— এমন নানা জিনিস রয়েছে ‘চারু’র সংগ্রহে। আসাম, মণিপুর, অরুণাচলপ্রদেশ এবং মিজোরাম ঘুরে ওঁরা সংগ্রহ করেন স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী জিনিস। মায়ানমারের লুঙ্গি স্টাইল পোশাকও রয়েছে ওঁদের সংগ্রহে। সব পোশাকে আদত রূপটা রেখেই তাতে ছোটখাট সংযোজন করে ওঁরা সাজিয়ে দেন ক্রেতাদের জন্য। কারণ ওই সব রাজ্যের বাসিন্দারা যেভাবে সেই পোশাক পরেন, তাতে অভ্যস্ত নই আমরা। ফিউশন নয়, ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ণ রেখেই স্টাইল কোশেন্ট বাড়ানোর পক্ষপাতী চারু। সম্প্রতি সল্টলেকের পপ-আপ স্টোরে তাঁরা নিয়ে আসছেন নানারকম শাড়িও। আগামিকাল পর্যন্ত থাকছে সেটি। সেখানে ফোন করলে খোঁজ পাবেন ভালো জামদানি, বেগমপুরি, ফুলিয়া কটন, তিন পেড়ে হ্যান্ডলুম কটন, অর্গ্যানিক কটন, ঘিচা এবং খাদি কটন শাড়ির। পৃথ্বীরাজ জানালেন, ভবিষ্যতে কাফতান ও শ্রাগও রাখবেন কালেকশনে। তাঁর দাবি, সংগ্রহের সব অ্যাপারেলই সুতির ওপর, তাই আরামদায়ক। রঙের দিক থেকেও চোখ টানবে ওঁদের সম্ভার।
গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল