সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় নজর দেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিশ্রমে শরীরে অবনতি। নানাভাবে অর্থ অপচয়। কর্মপরিবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি।প্রতিকার: ... বিশদ
তোমাদের সম্পর্কের ১০ বছর পূর্ণ হল কাল। দু’জনের ছবিও মুক্তি পেল। রিয়েল লাইফ থেকে রিল লাইফ কাপল হওয়ার অভিজ্ঞতাটা কেমন?
অঙ্কুশ: আলাদা অভিজ্ঞতা সেভাবে কিছু নেই। ফিল্মটা খুব ইনটেন্স। রাজাদার (চন্দ) কাছেও এক্সপেরিমেন্টাল। চরিত্রটাও আমার কাছে অন্যরকম। কোভিড সিচুয়েশনের মধ্যে শ্যুট। তাই মজা, ইয়ার্কি, আনন্দ সবই প্যাক-আপের পরে হতো। শট হয়ে যাওয়ার পরে একসঙ্গে জড়ো হওয়ার ব্যাপারই ছিল না। ফ্লোর দ্রুত ফাঁকা করা, শট দিয়ে ভ্যানে ফিরে যাওয়া— এ সবের মধ্যে কখন যে ১৮-১৯ দিন কেটে গিয়েছে বুঝতেই পারিনি। কাজ করতে গিয়ে ওর সঙ্গে একটা কমফর্ট জোন পেয়েছি। কো-স্টার ভালো হলে অভিনেতার কাজটা ভালো হয়। ঐন্দ্রিলা অনেক দিনই প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। তাই সেটাও প্লাস পয়েন্ট।
ঐন্দ্রিলা: অভিজ্ঞতাটা খুবই ভালো। আগে মনে হয়েছিল, কাজের জায়গায় আমরা কমফর্টেবল হব তো? তারপর দেখলাম সেটা কোনও ফ্যাক্টরই নয়। কো-পার্টনার বন্ধু হলে কাজ করাটা খুব সহজ। প্রেমিক হতেই হবে এমন নয়। এত বছর দু’জন দু’জনকে চিনি। ফ্লোরে তাই কোনও অসুবিধেই ফেস করতে হয়নি।
সম্পর্কের দশ বছর হয়ে গেল। এবারের ভ্যালেন্টাইনস ডে তো একটু বেশি স্পেশাল। অঙ্কুশের জন্মদিনও ১৪-য়। কী কী প্ল্যান তোমাদের?
অঙ্কুশ: সরস্বতী পুজো পর্যন্ত ‘ম্যাজিক’ নিয়েই কেটে যাবে। তারপর পোস্ট বার্থডে সেলিব্রেশন যদি কিছু হয়। ১৪-য় নিজেদের ইভেন্ট আছে। নীল-তৃণার রিসেপশন আছে। আর ওটা বিশেষ দিন বলে আলাদা করে কখনওই কিছু করিনি। গিফট আগেও দিতে পারি বা পরে। জন্মদিনে ফ্যান ইভেন্ট হতো। এবার প্রথমে কোভিড, তারপর শ্যুটিং, আর প্ল্যান করার সুযোগই পাইনি। সব পরে হবে।
ঐন্দ্রিলা: ছবিটার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। দর্শকদের কাছে ভালো ফিডব্যাক পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। ছবিটা সবার ভালো লাগলে সেলিব্রেশন তো হবেই। ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে কোনওদিনই আলাদা করে কিছু করি না। ওর বার্থডে গিফট অবশ্যই কিনি। তবে সারা বছরই আমাদের উপহার আদানপ্রদান চলতে থাকে। অঙ্কুশ গেম খেলতে ভালোবাসে। তাই ভালো গেমের সিডি পেলেই ও খুশি। এবার এখনও কিছু কেনা হয়নি। ছবির চাপ তো ছিলই। আর আমরা দু’জনেই খুব প্র্যাক্টিকাল। এখন ছবির চিন্তা ছেড়ে গিফট কিনতে যাব, সেটা হবেই না।
এই সময়ে দাঁড়িয়ে এতদিনের সম্পর্ক তো রেকর্ড! তোমরা অনেকের কাছে আদর্শ। সম্পর্ক মজুবত রাখার ম্যাজিক সিক্রেটটা কী?
অঙ্কুশ: একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। এটাই সম্পর্কের মূল মন্ত্র। এগুলো জোর করে হয় না। আজকাল অনেকেই বিয়ে করতে হয় বলে করে। একটা সম্পর্কে যেতে হবে বলে যায়। তাই হয়তো অনেকের ক্ষেত্রে সম্পর্ক চিরস্থায়ী হয় না। ২০১০-এর শেষে ওর সঙ্গে দেখা। ওকে প্রথম দেখে মনে হয়েছিল ভালো, মিষ্টি মেয়ে। ওর চোখে একটা অদ্ভুত সততা আছে। তখন আমি ওকে ভালো করে চিনিও না। কিন্তু আমার এগুলো মনে হয়েছিল। তখনই ভেবেছিলাম ওর সঙ্গে সর্ম্পকে হলে সেটা চিরদিনের জন্যই হবে। ওর দিক থেকেও তাই। তখন ওর বয়স মাত্র ১৫-১৬।
ঐন্দ্রিলা: দু’জনের প্রতি পারস্পরিক ভরসা আর শ্রদ্ধা। এগুলো না থাকলে চলে না। বিশেষ করে শ্রদ্ধা না থাকলে একটা মানুষের সঙ্গে থাকা যায় না। আর একসঙ্গে দশ বছর কাটানোর পরে যত বড় ঝামেলাই হোক, কাউকে ছেড়ে যাওয়া অসম্ভব। দুম করে ছেড়ে চলে যাওয়াটাও কোনও সমাধান নয়। সেটা বোধহয় খুব ঘৃণা থেকে হয়। যেটা আমাদের দু’জনের মধ্যে একেবারেই নেই।
প্রেমের শুরুর দিনগুলো মনে করো নিশ্চয়ই। কে কতটা মনে রাখায় পারদর্শী?
অঙ্কুশ: ওরই মনে থাকে বেশি। আমার নয়। তবে তার জন্য ঝগড়া হয় না। ও খুব প্র্যাক্টিকাল। ইন ফ্যাক্ট আমাদের সম্পর্কের দশ বছরটাও সেভাবে মনে ছিল না! ফিল্মের রিলিজ নিয়ে ভাবতে গিয়েই এটা মাথায় এল। সেটাও ওরই মনে পড়েছে।
ঐন্দ্রিলা: হ্যাঁ আমার মনে থাকে। আমার জীবনে একটাই প্রেম। সেটাই এগিয়েছে। ওর ক্ষেত্রে সেটা নয়। ওর আগে বেশ কয়েকজন গার্লফ্রেন্ড ছিল। ব্রেক আপ হয়ে গিয়েছে। ও আর তাই মনে করতে চায় না বোধহয়। কিন্তু আমার ভালো লাগে। আমাদের আলাপ, বন্ধুত্ব, ঘুরতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে মজা করা— এগুলো খুব ভালোলাগার মুহূর্ত। মনে মনে ভাবি, অঙ্কুশ কি দশ বছরে একটুও পাল্টেছে? তারপর মনে হয় বয়স বেড়ে যাওয়া ছাড়া কিছুই তো বদলায়নি।
এখন সোশ্যাল মিডিয়া ঘাঁটলেই শুধু তোমাদের বিয়ের গুঞ্জন। বাড়ির নেমপ্লেট, গাড়ির ছবি সবই তো দেখছি। চার হাত এক হচ্ছে কবে?
অঙ্কুশ: পরিবারের সকলের সঙ্গে বসে আলোচনা করার সময়টাই হচ্ছে না। আমরা কাজ নিয়ে এত ব্যস্ত! তবে এ বছরে ইচ্ছে আছে। প্ল্যানিং হয়নি, দেখা যাক।
ঐন্দ্রিলা: ওই একই কথা। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। আমাদের কোনও তাড়া নেই। ইচ্ছে তো আছেই। বিয়েতে সবাই না থাকলে মন ভরে না। সব ঠিকঠাক হলেই হবে।
অঙ্কুশ কী ধরনের পোশাকে বেশি স্বচ্ছন্দ? ঐন্দ্রিলা শাড়ি পরতে ভালোবাসো? কীরকম শাড়ি পছন্দ?
অঙ্কুশ: আমি অত সেজেগুজে বেরনোর মতো লোক নই। জিনস টি শার্ট-ই ভালো লাগে। সরস্বতী পুজোর মতো অকেশনে খুব সাধারণ পাজামা-পাঞ্জাবি বা কুর্তা পরি।
ঐন্দ্রিলা: শাড়ি পরতে খুবই ভালোবাসি। ১২-১৩ বছর বয়স থেকে সিরিয়াল করছি। তখন থেকে নিয়মিত শাড়ি পরছি। ২৪ ঘণ্টা শাড়ি পরে থাকলেও অসুবিধে হয় না। আমার পছন্দ হালকা শাড়ি। ভারী জারদৌসি নয়, কাঞ্জিভরম পরতে ভালোবাসি। এখন ভালো লাগছে অরগ্যাঞ্জা। এগুলো দেখতে ক্লাসি আর হালকাও খুব।
কোথাও বেড়াতে গেলে কোন জিনিসটা কিনবেই?
অঙ্কুশ: জামাকাপড় কিনি। যেখানকার যা ট্রেন্ড। আমি গ্যাজেট ফ্রিক। ইলেকট্রনিক জিনিস যেখানে আমাদের দেশের তুলনায় সস্তা, কিনে ফেলি।
ঐন্দ্রিলা: জুতো আর জামা তো মাস্ট। যেখানেই যাই কিনে নিই।
দু’জনের বিশেষ শখ কী কী? এমন শখ যার জন্য যা খুশি করতে পারো।
অঙ্কুশ: আমার তো গাড়ি কেনা। যে সময় ভাড়াবাড়িতে থাকতাম, তখনই বিএমডব্লিউ কিনেছিলাম। একটা ছবির ডিল হয়েছিল, ভালো অ্যাডভান্স পেয়েছিলাম। বাবা বলেছিলেন, ‘এই টাকাটা জমিয়ে পরে বাড়ি কিনিস। যে দামে বিএমডব্লিউ কিনছিস তাতে ঠিকঠাক জায়গায় টু রুম ফ্ল্যাট হয়ে যাবে।’ শুনিনি। এমনই শখ!
ঐন্দ্রিলা: আলাদা করে কিছু নয়। কিছু ভালো লাগলে টুক করে কিনে ফেললাম। আর দামি কিছু হলে জান লড়িয়ে কাজ করে অ্যাচিভ করব।
এখনও পর্যন্ত কেনা সবচেয়ে দামি ফ্যাশন অ্যাকসেসরি?
অঙ্কুশ: আমি খুব ব্র্যান্ড সচেতন নই। ঐন্দ্রিলা আর কয়েকজন বন্ধু মিলে জোর করে আমাকে এসব ধরিয়েছে— গুচি, প্রাডা, লুই ভিতোঁ ইত্যাদি। গুচি উচ্চারণই করতে পারতাম না। বলতাম, গুকখি! ওইসব স্টোরে আমায় নিয়ে গেলে বলতাম, এগুলো তো গড়িয়াহাটের মোড়ে পাওয়া যায়। বন্ধুরা খুব রেগে যেত। আমার গুচি, প্রাডার বেল্ট আছে। আর আরমানির একটা জ্যাকেট আছে। বুকে পাথর রেখে বন্ধুদের চাপে ওটা কিনেছিলাম। তবে সেটা খুব ফেভারিট। তাই বারবার পরি।
ঐন্দ্রিলা: বেল্ট, ঘড়ি, জুতো অনেক কিছুই আছে। ব্র্যান্ডেড জিনিস পরতে ভালোবাসি। গুচির মতো ব্র্যান্ড কিনি। তবে লোক দেখানোর জন্য নিজেকে কষ্ট দিয়ে দামি ব্র্যান্ড কিনতে হবে, কখনও মনে করি না।
ঐন্দ্রিলা তো অঙ্কুশকে কেক বানিয়ে খাইয়েছে লকডাউনে। অঙ্কুশ রান্নাবান্নার ধারপাশ দিয়ে যায়?
অঙ্কুশ: হ্যাঁ রান্না করতে পারি, বই দেখে। অনেক খাইয়েছি। মশালা কুলচা, পনির মালাই কোফতা, দশ-বারো রকমের ডেজার্ট। এসব তৈরি করার সময় ডায়েট মনে রেখে করি না।
সিনেমা ছাড়া দু’জনের কমন ইন্টারেস্ট কী?
অঙ্কুশ: খেতে তো দু’জনেই খুব ভালোবাসি। আর একটা হচ্ছে লং ড্রাইভ।
ঐন্দ্রিলা: গাড়ি তো প্রিয়ই। টেস্ট ড্রাইভ নিই। কিনতেই হবে এমন নয়। আর বাড়ি সাজাতেও খুব ভালো লাগে।