সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় নজর দেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিশ্রমে শরীরে অবনতি। নানাভাবে অর্থ অপচয়। কর্মপরিবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি।প্রতিকার: ... বিশদ
আরামদায়ক পোশাক নিয়ে কথা বলব শুনে কলকাতার ডিজাইনার অভিষেক নাইয়া জানালেন খাদি মসলিন দিয়ে তৈরি শাড়ি এবং কুর্তার কথা। গরমের কথা মাথায় রেখেই সম্প্রতি এই ধরনের পোশাক তৈরি করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, হাতে পাক দেওয়া সুতো ব্যবহার করা হয় খাদি মসলিনে। সেই সুতোয় বোনা জামদানি তিনি এবার এনেছেন গ্রীষ্মের উত্তাপের কথা মনে রেখে। এই পোশাক যেমন হালকা, তেমন এর কালার প্যালেটও খুব সফট। পাউডার শেডেড পিচ বা পাউডারিশ গ্রে ইত্যাদি নরম রং তাঁর পোশাকে প্রাধান্য পেয়েছে। এগুলো ত্বকের জন্য তো বটেই, চোখের জন্যও খুব আরামদায়ক। এই সব পোশাকের মোটিফও তৈরি হয়েছে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই— কোথাও আছে পদ্মফুল, কোথাও বা হাঁস-টিয়াপাখি, কোথাও আবার কাঠবিড়ালি। জামদানি শাড়িতে হাঁস বা ফুলের মোটিফ রয়েছে জ্যামিতিক নকশার মধ্যে। এই ধরনের জামদানি হাতে বুনতে সময় লেগে যায় প্রায় মাসখানেক। তাই এর দামও কিছুটা বেশিই পড়ে। এর পাশাপাশি খাদি কালেকশনে তাঁর ডিজাইন করা কুর্তা বা ড্রেসও আছে। যেগুলো মূলত একরঙা এবং ফ্লোয়িং ধরনের। এখানেও ব্যবহার হয়েছে হাতে পাক দেওয়া সুতো। রঙে এসেছে হলুদ, নিমপাতা ও ইন্ডিগোর মিলমিশ। কিছু আছে হাঁটু পর্যন্ত, কিছু আছে লং ড্রেস। এগুলো মেয়েদের জন্য। আর শিবোরি মসলিনের কটন কুর্তা ও পাঞ্জাবি আছে পুরুষদের জন্য। এগুলো তুলনায় কিছুটা কম দামে পাবেন। আরামের পাশাপাশি অভিষেকের এই সামার কালেকশন এতটাই আভিজাত্যে ভরা যে চোখ বুজে কোনও উৎসবেও পরে নিতে পারেন।
ব্র্যান্ড ‘খাদি ইন্ডিয়া’র তরফে ডিজাইনার ঐশী গুপ্তও জোর দিলেন আরামের দিকেই। ব্র্যান্ড হিসেবে খাদিও এবার ঢিলেঢালা বা লুজ ফিট পোশাককে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানালেন তিনি। অতিরিক্ত চড়া রং থেকে বরাবরই দূরে থাকে খাদি। তাই ভেজিটেবল ডাইয়ে ভরসা রেখে মিউটেড শেডস-ই খাদির ইউএসপি। ঐশীর কথায়, ‘এখানে নরম রংকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।’ কাজের জায়গার পোশাক (ওয়ার্কওয়্যার) বা তরুণ-তরুণীদের পোশাক নিয়ে বেশি কাজ করেন ঐশী। তিনি বলছেন, ‘কোভিডের কঠিন সময়টা পেরিয়ে মানুষ একটু হাঁফ ছাড়তে চায় এখন। সে কথা মনে রেখে আমরা এবার পোশাকের নেকলাইন চওড়া করার কথা ভেবেছি। গলার অ্যাকসেসরি দেখানোর জন্য এই ডিজাইনটা আমরা রাখছি। এত দিন বন্দি থেকে কিছুটা যেন শো অফ করার সময় এখন! মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়ে যাতে এগতে পারে আবার।’ তার সঙ্গে ফিটিং পোশাক ভুলে প্লিট বা অনেক লেয়ার আসছে খাদির পোশাকে। ছোটবেলার ডান্সিং ফ্রককে মনে করাবে খাদির সেই নকশা, জানালেন তিনি। তবে অবশ্যই এটা অনেক বেশি আধুনিক এবং স্লিক।
ঐশী জানালেন, ওয়ার্কওয়্যার থাকছে স্ট্রিমলাইনড ক্লাসিক। এক্ষেত্রে আবার কলার থাকছে। লং, স্ট্রেট ফিটেড কলারওয়ালা কামিজ মেয়েরা পছন্দ করছেন কাজের জায়গায়। কোভিডের জেরে অনেকে আবার এথনিক ছেড়ে কুর্তির সঙ্গে ট্রাউজার্সের দিকেও ঝুঁকছেন। তাই সে কথা মাথায় রেখে খাদির প্রচুর টপ থাকছে গরমের সঙ্গে তাল রেখে কাজে ছুট দেওয়ার জন্য। তাছাড়া থাকছে সুতির স্ট্রেট প্যান্ট, যা এখন খুবই জনপ্রিয় এবং ট্রেন্ডি। বাড়ি থেকে যাঁরা কাজ করছেন এখনও, তাঁদের জন্য আরামই শেষ কথা। তবে তার মধ্যেও যেন স্মার্ট দেখতে লাগে। এই বিষয়টা দেখতে গিয়ে এবার দু’রকম পোশাকে নজর দিচ্ছে খাদি। ঐশীর মতে, অতিমারীর কারণে এমনটা এ বছর প্রথম ঘটছে। পোশাকে বৈপরীত্য তাই এবারের নিয়ম— কাজের জন্য ঘরে বসেও স্মার্ট দেখানো আর বাইরে গেলে আরাম আর স্টাইল যেন হাত ধরাধরি করে চলে।
এবার অনেক অন্যরকম নকশা নিয়ে তাঁরা পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন বলে জানালেন তিনি। ওয়েস্টার্ন ওয়্যারে সবাই এখন এতটাই স্বচ্ছন্দ হয়ে গিয়েছেন যে নকশায় অনেক ধরনের পরীক্ষা করা যায় বলে দাবি ঐশীর। আর কোভিড-পরবর্তী যুগে ন্যাচারাল জিনিস নিয়ে সবাই খুব হইহই করছেন। তাঁর কথায়, ‘খাদি তো চিরকালই প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে কাজ করে। সেটাই খাদির ট্রেন্ড। এখনও খাদি একইভাবে সেই দিকে নজর দিচ্ছে।’ ফ্যাব্রিক নিয়েও পরীক্ষা করছেন তাঁরা বলে মত ঐশীর। তাই তাঁরা হলুদ এবং ইন্ডিগো ডাই করছেন পরীক্ষামূলকভাবে। এ শহরের খাদি সিল্ক এম্পোরিয়ামে গেলে নিজে চোখে দেখে নিতে পারেন এই সব নতুন পোশাকের সম্ভার।
গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল