সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
একথা ঠিক, গ্যাসের বাজার দরের উপর নির্ভর করে প্রতি মাসেই ভর্তুকির টাকার অঙ্ক ওঠানামা করে। প্রশ্নটি হল, এক ধাক্কায় ২০ টাকা ভর্তুকি কমানোর সঙ্গে কি বাজার দরের কোনও সম্পর্ক আছে? নেই। অত্যন্ত কৌশলে এই কাজটি করা হয়েছে। অধিকাংশ গ্রাহক জানতেই পারেননি এমনটা ঘটেছে। এমাসে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি জমা পড়েছে ৭৪ টাকা। তবে, যাঁরা উজ্জ্বলা যোজনায় গ্যাস সংযোগ নিয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে কিন্তু ভর্তুকির টাকার অঙ্ক প্রায় আগের মতোই আছে। অর্থাৎ ৯৪ টাকা তাঁরা পেয়েছেন। গত মাস পর্যন্ত সাধারণ গ্রাহক এবং উজ্জ্বলা যোজনা গ্রাহকের ভর্তুকির পরিমাণ একই ছিল। বোঝা যাচ্ছে, এক্ষেত্রে গরিবের উপর কোনও কোপ পড়েনি। কোপটা পড়েছে মধ্যবিত্তের উপর। ভর্তুকির টাকার অঙ্ক অত্যন্ত চতুর কৌশলে কমানো হয়েছে বলা যায় এই কারণে যে গ্রাহক যাতে এই বিষয়টিতে নজর না দিতে পারেন সেজন্য চলতি মাস থেকে সিলিন্ডারের ক্যাশ মেমোতে ভুর্তকির অঙ্কটা লেখা থাকছে না। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মারফতই গ্রাহক তা জানতে পারছেন। বলা যায়, ভোট মিটতেই মধ্যবিত্তের পকেটে কোপ বসাল মোদি সরকার। চিন্তিত ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের মনে স্বাভাবিক কারণেই একটি প্রশ্ন জাগছে এভাবে কি ধীরে ধীরে মোদি সরকার সাধারণ গ্রাহকদের গ্যাসের ভর্তুকি তুলে দেবে? এর সদুত্তর অবশ্য মেলেনি। বিষয়টি ধোঁয়াশাই রয়েছে।
প্রশ্নটি উঠছে এই কারণে যে প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই মোদি সরকার সচ্ছল গ্রাহকদের উদ্দেশে গ্যাসের ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল। অনেকে সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভর্তুকিগ্রহণ ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে, সংখ্যায় তাঁরা খুব বেশি ছিলেন না। যাঁরা ভর্তুকিগ্রহণের সুযোগ ছাড়েননি তাঁদের বক্তব্যের পিছনে একটি যুক্তিসঙ্গত কারণ অবশ্যই ছিল। তাঁদের বক্তব্য ছিল, দেশের তাবড় নেতা বিধায়ক সংসদ সদস্যরা যেসব বিশেষ বিশেষ সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন তা ছেড়ে দিতে কি তাঁরা প্রস্তুত? যাঁরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাণ্ডারী তাঁদের অনেকেই যদি বিশেষ সুবিধাভোগী হন তাহলে কোন যুক্তিতে সাধারণ গ্রাহক ভর্তুকি ছেড়ে দেবেন? এ ব্যাপারে যুক্তি পাল্টা যুক্তি যা-ই থাক না দেশের অধিকাংশ সাধারণ মানুষ গ্যাসের ভর্তুকির সুবিধা এখনও পান। এবার এক ধাক্কায় ভর্তুকি ২০ টাকা কমিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মানুষের মনে একটি আশঙ্কার মেঘ দেখা দিচ্ছে। আশঙ্কাটি হল, এভাবেই কি ধীরে ধীরে সাধারণ গ্রাহকের ক্ষেত্রে গ্যাসের ভর্তুকি বন্ধ করতে চাইছে কেন্দ্র? মোদি সরকার জনদরদি, এমন ভাবমূর্তি এখনও গড়ে তুলতে পারেনি। বরং তারা শিল্পপতি ও বড়লোকদের স্বার্থরক্ষায় সচেষ্ট—এ অভিযোগ বার বার উঠেছে। তাই প্রশ্ন উঠছে, দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে এভাবেই কি সরকার মধ্যবিত্তের পকেটে কোপ বসাতে চাইছে? তাঁদের এই আশঙ্কাটি দূর করা দরকার। তাই গ্যাসে ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার কী ভাবছে তা প্রকাশ করা প্রয়োজন।