সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
অথচ সরকারের বরাদ্দে কোনও কার্পণ্য নেই। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রতিটি পড়ুয়াই এই খাবার পাবে। নিয়মে স্পষ্ট করে সব বলা আছে। প্রাথমিকের প্রত্যেক পড়ুয়াকে দিতে হবে ১০০ গ্রাম করে চাল ও অন্য খাবার, যার মধ্যে থাকবে ৪৫০ ক্যালরি এবং ১২ গ্রাম প্রোটিন। মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ ১৫০ গ্রাম চাল এবং অন্য খাবার যার মধ্যে থাকবে ৭০০ ক্যালরি এবং ২০ গ্রাম প্রোটিন। টাকার হিসেবে ধরলে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ৪.৪৮ টাকা এবং মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ মাথাপিছু ৬.৭১ টাকা। সময়মতো টাকা বহুক্ষেত্রেই পৌঁছে যায়। যদি না যায়, তখন! সেকথাও গাইডলাইনে বলা আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের ফাণ্ড থেকে খরচ করবে এবং টাকা এলে সেই টাকা ফাণ্ডে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কোনওভাবেই মিড ডে মিল বন্ধ করা যাবে না। অথচ বহুক্ষেত্রেই সেই নিয়ম মানা হয় না। এর সঙ্গে আছে চুরি। প্রায়শই মিড ডে মিলের বরাদ্দ থেকে টাকা বা খাবার সরানোর অভিযোগ শোনা যায়। কিছক্ষেত্রে এই অভিযোগে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষক বা পরিচালন কমিটির কেউ কেউ গ্রেপ্তারও হয়েছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এক শ্রেণীর মানুষ যাঁরা নাকি আবার ‘শিক্ষক’ তাঁদের কেউ কেউ আরও বেশি করে এইসব অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। তাহলে তাঁরা কী শিক্ষা দেবেন! তাঁরা পড়ুয়াদের কাছে কতখানি শ্রদ্ধার পাত্র হবেন? বলা হয়, শিক্ষকরা নাকি জাতির মেরুদণ্ড। তাঁরা দেশের আগামী প্রজন্ম তৈরি করেন। এই সব আপ্তবাক্যকে শিকেয় তুলে চলছে দেদার চুরি। অথচ লজ্জার কোনও বালাই নেই। চুঁচুড়ার এই স্কুলটিতে কী দেখা যাচ্ছে! সেখানে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে মিড ডে মিল নিয়ে। অভিযোগ পড়ুয়াদের নুন-ফ্যানভাত খাইয়ে সরিয়ে ফেলা হয়েছে তিনশো বস্তা চাল এবং ২৫ হাজার টাকার ডিম। শিক্ষামন্ত্রী একে ‘অমানবিক’ বলেছেন। এই কাজ অত্যন্ত ঘৃণ্য ধরনের। শিশুদের মুখের খাবার চুরি করার শাস্তি কঠোরতর হওয়াই উচিত। এঁরাই আবার হয়তো অন্যের চুরির সমালোচনা করে চায়ের টেবিলে তুফান তোলেন। এঁরাই আবার বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কখনও আন্দোলন করেন, অনশন করেন। সময় এসেছে, যেসব শিক্ষক চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে টাকা কামাতে চাইছেন, তাঁদের এবার সবাই মিলে ‘ছিঃ’ বলে উঠবে। তাঁদের মনে রাখা দরকার, বাড়িতে তাঁদের স্ত্রী –সন্তান রয়েছেন। তাঁদের কাছে এইসব শিক্ষক মুখ দেখাতে পারেন কী করে!
একটা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এখনও পৌঁছতে পারি নি। প্রাথমিকের পড়ুয়াদের মধ্যে এখনও ৪২ শতাংশ পড়ুয়া অপুষ্টিতে ভুগছে। এদের দিকে একবার তাকান শিক্ষকরা। খাদ্য অধিকার থেকে এদের এভাবে বঞ্চিত করা নিন্দাযোগ্য। কবি নজরুল ইসলামের ভাষাকেই একটু ঘুরিয়ে বলা যায়, যারা কেড়ে খায় শিশুদের মুখের গ্রাস,তাদের হোক অনন্ত সর্বনাশ।