সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
বিমর্ষ ইমরান খান মঙ্গলবারই বিষয়টির প্রতি তাঁদের আন্তর্জাতিক মুরুব্বিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। ওইসঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি ছিল, রাষ্ট্রসঙ্ঘের কাছে বিচার চাইবেন। বুধবার পাকিস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী আরও বেড়ে খেলেছেন। চৌধুরী সাহেব বলেছেন, ভারত তাঁদের মানসম্মান নিয়ে টানাটানি করছে। অতএব মৌখিক প্রতিবাদ কিংবা কূটনৈতিক সমাধানের রাস্তা তাঁর কাছে আর যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। তিনি ভারতের সঙ্গে যুদ্ধই চান! একইসঙ্গে বলেছেন, আন্তর্জাতিক আদালতে মামলাও করবেন। পাকিস্তানের এই অবস্থান অবশ্য অভিনব বা অপ্রত্যাশিত নয়। তারা যে এটা করতে পারে তা অনুমেয়ই ছিল। কারণ, ভারত-বিরোধিতা ছাড়া পাকিস্তানের রাজনীতির আর কোনও সম্বল নেই। কিন্তু এবার তাদের প্রতিবাদ বিরোধিতার মধ্যে যুক্তির চেয়ে বিভ্রান্তি ও অসহায়তাই বেশি প্রকট হয়ে পড়ছে। চৌধুরী সাহেব উজিরে আজমের জিগরি দোস্ত হতে পারেন কিন্তু তিনি যে বড় কাঁচা দুর্বল আর বিভ্রান্ত তা বোঝাই যাচ্ছে। একদিকে বলছেন মামলা করবেন, অন্যদিকে বলেছেন যুদ্ধে যাবেন! দুটো তো একসঙ্গে হয় না। ভারতের বিরোধিতার মধ্য দিয়েই পাকিস্তানের জন্ম। সেই বিরোধিতাকে শত্রুতায় রূপান্তরিত করার পরিণাম কী, ভারত তা একাধিকবার টের পাইয়ে দিয়েছে—পাকিস্তানের অঙ্গহানি হয়েছে—একাত্তরে পূর্ব পাকিস্তান ‘স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র’ নামে আত্মপ্রকাশ করেছে। তারপরেও বহুবার বহুভাবে ভারতের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে পাকিস্তান। চৌধুরী সাহেব এই নির্মম সত্যটি বিস্মৃত হয়েছেন।
বোঝাই যাচ্ছে, পাকিস্তানের অঙ্গারচরিত্র বদলাবার নয়। কাশ্মীর নিয়ে ভারতের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান বড় বেকায়দায় পড়ে গিয়েছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব কোনোদিনই উল্লেখ করার মতো নয়। কাশ্মীরকে আঁকড়েই হতভাগ্য দেশটি আন্তর্জাতিক মানচিত্রে টিকে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে সাত দশক যাবৎ। মোদি সরকারের বিচক্ষণ সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের সেই কৌশলের মস্তকে করাঘাত হয়েছে। তাই পাক নেতৃত্বের একাংশ বিভ্রান্তিকর অসার আস্ফালন করে চলেছেন। তার বড় কারণটি অবশ্য অর্থনৈতিক। অনুন্নয়ন আর তীব্র দারিদ্র্র্যের কারণে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে। রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি আর উগ্র মৌলবাদের আরাধনাই পাকিস্তানের এত সর্বনাশের মূলে। গোড়ার গলদ ধামাচাপাই পড়ে রয়েছে। পিঠ বাঁচাতে আরও বেশি ভারত-বিরোধিতা এবং যুদ্ধের জিগির তোলা ছাড়া পাক নেতৃত্বের উপায় নেই। ইমরান খান শিক্ষিত মানুষ। তাঁর দেশের হাড়ির হাল তাঁর চেয়ে ভালো কম জনেই জানে। তিনি আরও জানেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে আর কেউ সমীহ করে না। দেশটি নেহাতই দু-চারটি দেশের করুণার পাত্র। এবার অন্তত ভারতের নিতান্ত অভ্যন্তরীণ একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে বাজার গরম করার পুরনো ও ব্যর্থ কৌশলটি তারা পরিত্যাগ করুক।
নতুবা, অভ্যন্তরের নিদারুণ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার ছায়া
পড়তে পারে পাকিস্তানে আজকের মানচিত্রে। পাক নেতৃত্বের অপরিণত আচরণ সম্পর্কে ভারতকেও সর্বতোভাবে সতর্ক থাকতে হবে।