সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
আমরা যখন শুকিয়ে মরেছি তখন অসম, উত্তরবঙ্গের একাংশ, কেরল, মুম্বইসহ মহারাষ্ট্রের একাংশ প্রভৃতি কিছু অঞ্চলে বানভাসি অবস্থা দেখা গেল। সবচেয়ে নজর কেড়েছে মুম্বই মহানগরী। জলবন্দি মুম্বইয়ের লক্ষ লক্ষ মানুষের দুর্ভোগ দেখে অনেকে কলকাতার শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরতে সচেষ্ট ছিলেন। কিন্তু শুক্রবার থেকে সেসব কণ্ঠস্বর নিচু হতে থাকে। শনিবার তারা একেবারে চুপ মেরে গিয়েছে। পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, একবিংশ শতকের দুটি দশক পার করার পথে আমরা, কিন্তু জমা জলের দুর্ভোগ নিয়ে গত শতকে যে তিমিরে ছিলাম তার থেকে খুব বেশি এগতে পারিনি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম শহরের নানা অঞ্চল পরিদর্শন করে মানুষের দুর্ভোগ প্রত্যক্ষ করেছেন। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জলবন্দি এলাকা ঘুরে তাঁর উপলব্ধি হয়েছে যে জলনিকাশি নিয়ে এখনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি রয়েছে। সেগুলি সম্পূর্ণ না-হওয়া পর্যন্ত কলকাতাবাসীর দুর্ভোগ কমার লক্ষণ নেই। পরিদর্শন সেরে ওইদিন সন্ধ্যায় পুরভবনে ফিরে মেয়র বলেন, ঠাকুরপুকুর-বেহালার বিভিন্ন অংশে নিকাশি ব্যবস্থা বলতে কিছুই নেই। ১২৭, ১২৮, ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডসহ বিস্তীর্ণ অংশ জলে ডুবে রয়েছে। ছোটবেলা থেকে শুনছি, আমহার্স্ট স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, পটলডাঙা প্রভৃতি অঞ্চলে জল জমে। এদিনও গিয়ে তাই দেখলাম। কিছু পকেট থকে জমাজল বেরচ্ছে না।
পুরকর্তারা স্বীকার করেছেন, একসঙ্গে ৬ মিমি পর্যন্ত বৃষ্টি হলে পুরসভা তার মোকাবিলা করতে পারে। তার বেশি হলে পারে না। শুক্রবার ও শনিবারের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৮৬ মিমি। এটা এই মরশুমে রেকর্ড হলেও অন্যবারও এইরকম বা তার থেকেও বেশি বৃষ্টি কিন্তু হয়। সুতরাং সেইমতো নিকাশিব্যবস্থা গড়ে তোলা আবশ্যক। সবচেয়ে ক্ষতি করা হয়েছে গালভরা নগরায়নের নামে। বাম আমল থেকে ক্রমান্বয়ে প্রাকৃতিক নিকাশিব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এই জমানাতেও তাতে লাগাম পরানো যায়নি। এ নিয়ে পরিবেশকর্মীরা সবসময় আক্ষেপ করেন। এবারের দুর্ভোগ থেকে শিক্ষা নিয়ে এই ব্যাপারে পুরসভাকে সতর্ক হতে হবে। এখনও হয়তো সময় আছে। বেহালা অঞ্চলের জন্য কেইআইপি-তে যে কাজ চলছে তা ত্রুটিমুক্তভাবে সম্পূর্ণ করতেই হবে। পুরভবনের কন্ট্রোলরুমের সমস্যাটিও দূর করতে হবে দ্রুত। পুরসভার পাম্পিং স্টেশনগুলিকেও পূর্ণ দক্ষতায় ব্যবহারের উপর জোর দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, নিকাশি ব্যবস্থা উপযুক্তরূপে গড়ে তুলতে না-পারলে বিপুল অর্থে মহানগরকে সুন্দর করে সাজানোর উদ্যোগটি কোনও মূল্যই বহন করবে না।