সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, জাগুয়ার গাড়িটি দুই ভাই চালাতেন। পরিবারের লোকজন বেড়াতে গেলে এই গাড়িটিই ব্যবহার করতেন। শুক্রবার রাতে রাঘিব বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বলে বের হন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি ফিরে আসবেন বলেও বাড়ির লোকদের জানিয়েছিলেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, গাড়ি নিয়ে পার্ক সার্কাস মোড়, মৌলালি, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোড ধরে পার্ক স্ট্রিটে যান রাঘিব। এরপর সেখান থেকে লাউডন স্ট্রিটে যান। দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে তাঁর গাড়ি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ছুটছিল। তবে একদম পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য পেতে জাগুয়ার কর্তৃপক্ষ আমেরিকায় নথি পাঠিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তা পুলিসের হাতে এসে পৌঁছবে।
অফিসাররা জানতে পেরেছেন, ঘটনার পর রাঘিব ফোন করেন তাঁর মামাকে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, প্রথমে তিনি কিছুটা দৌড়ে ওই এলাকা ছেড়ে চলে আসেন পার্ক স্ট্রিটের কাছে। সেখান থেকে তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে মামা সোজা সল্টলেকে চলে যান। ওই ঘটনায় রাঘিবের হাতে আঘাত লাগে। সল্টলেকে যেখানে লুকিয়ে ছিলেন তিনি, সেখানেই শুশ্রূষা করান। মামাই বিমানের টিকিট কাটেন। সকাল সাড়ে ৮টার দুবাইগামী বিমানে কলকাতা ছাড়েন রাঘিব। সেখানে তাঁদের যে রেস্তরাঁ চেন রয়েছে, সেখানে তিনি ছিলেন। অবশেষে সোমবার সকালে কলকাতায় ফেরেন।
এদিকে, আরসালানের বাড়িতে হাজির হয়ে যান পুলিস আধিকারিকরা। চাপে পড়ে যায় পরিবার। তাঁদের নোটিস পাঠিয়ে আসতে বলা হয় থানায়। পুলিস জেনেছে, রাঘিবের বাবার একজন পরামর্শদাতা রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সূত্রের খবর, প্রথমে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, কোনও কর্মীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেইমতো পুলিসের সঙ্গে কথাও বলা হয়। চালককে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়ার যে কথা হয়েছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন রাঘিবের কাকা ভুট্টো। কিন্তু অফিসাররা জানিয়ে দেন, জাগুয়ার গাড়ি কোনও কর্মচারী চালাতে পারেন না। এরপরই পুলিস আরসালানকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তাঁর গায়ে সিলিকন বাইট ছিল না। পাশাপাশি তাঁর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনও মিলছিল না। যে কারণে সন্দেহের সূত্রপাত। শেষমেশ রাঘিব যে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তার নথি, তথ্যপ্রমাণ, সিসিটিভি ফুটেজ ও জাগুয়ারের ডেটা রেকর্ডার থেকে প্রমাণ পেয়ে যায় পুলিস। এরপরই তারা পরিবারের এক সদস্যকে ডেকে এনে জেরা শুরু করে। আরসালানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অবশেষে আসল ঘটনা ফাঁস হয়। এও জানা গিয়েছে, গাড়িতে তাঁর সঙ্গে আরও একজন ছিলেন। যাঁকে আগেই নামিয়ে দেওয়া হয়।
তবে দুর্ঘটনা না ঘটিয়েও কেন আরসালান সহজে ধরা দিলেন? যে সব সম্ভাবনার কথা পুলিস ভাবছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে রাঘিবের বিয়ে বা এই ধরনের কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানের বিষয়। সেই সঙ্গে গাড়ি চালানোর সময় রাঘিব মাদকাসক্ত ছিলেন কি না, তাও ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। কারণ সেই সময় তাঁকে পাওয়া গেলে পুলিসের হাতে প্রমাণ চলে আসত। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে মাদক সংক্রান্ত বিষয় উঠে এলে জামিন মেলা ভার। ছ’দিনের মাথায় তিনি ধরা পড়লে রক্তে মাদকের অস্তিত্ব সেক্ষেত্রে ধরা পড়বে না, তা জেনেই আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত। এই বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই আরসালান পুলিসের জালে ধরা দিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।