সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
গত লোকসভা নির্বাচনে শান্তিপুর শহরের কয়েকটি ওয়ার্ড ছাড়া বেশিরভাগ ওয়ার্ডে বিজেপি কয়েক হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল। দলকে সাংগঠনিকভাবে মজবুত করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। কয়েকদিন আগে কল্যাণী ব্লক তৃণমূল সভাপতি পরিবর্তন করা হয়। সেখানে পুরনো সভাপতি তপন মণ্ডলকে সরিয়ে নতুন সভাপতি করা হয় কাঁচরাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পঙ্কজ সিংকে।
দলের অন্দরে খবর, অরবিন্দ মৈত্র শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, নতুন সভাপতি আব্দুল সালাম কারিগর শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দের ঘনিষ্ঠ। এদিকে, বিধায়ক এবং চেয়ারম্যানের সম্পর্ক এখন খুব একটা মধুর নয় বলে গুঞ্জন। তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর সিংয়ের সঙ্গেও বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের তেমন সুসম্পর্ক নেই বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। অরিন্দম ভট্টাচার্যের সঙ্গে জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংয়ের দূরত্ব তৈরি হওয়ার জন্য শান্তিপুর শহর সভাপতির রদবদল কি না তা নিয়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে। সেখানে শহরের সভাপতি বদলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমার চেয়ে বাড়ার আশঙ্কা বেশি করছেন তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা।
শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দে বলেন, ২০১৩ সাল থেকে আব্দুল সালাম কারিগর দলের সভাপতি ছিলেন। মাঝখানে তাঁকে কয়েক বছরের জন্য বাদ দেওয়া হয়। তার কারণ আমরা জানি না। তবে নতুন করে তাঁকে ফের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তিনি দলকে আরও শক্তিশালী করবেন। অন্যদিকে, শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।
নতুনভাবে দায়িত্ব পেয়ে আব্দুল সালাম কারিগর বলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে সকলকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইকে আরও কীভাবে মজবুত করা যায়, সেদিকে নজর দেব। আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠী নেই। সকলকে নিয়ে চলার মানসিকতা আমার রয়েছে। তাই আগামীদিনে সংগঠনকে মজবুত করতে অসুবিধা হবে না বলে আশা করছি।
অন্যদিকে, বিদায়ী সভাপতি অরবিন্দ মৈত্র বলেন, দল যাঁকে সভাপতি ঘোষণা করবে দলের কর্মী হিসেবে তাঁকেই মান্যতা দিতে হবে। তবে আমাকে সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়েছে, সে সম্পর্কে লিখিত কোনও চিঠি বা মৌখিকভাবে কেউ আমাকে কিছু জানাননি। আমি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি। পরে নতুন সভাপতি কার্যালয়ের সভাপতির ঘরের চাবি চেয়ে আমাকে ফোন করেন। আমি তাঁকে চাবি দিয়ে দিয়েছি। তিনি দলীয় কার্যালয়ের চাবি চাইলে আমি বলি, এটা শান্তিপুর বিধানসভার অফিস। তাই গেটের চাবি আমার কাছে থাকে না। সেটা বিধায়কের নেতৃত্বে যাঁরা অফিসে কাজ করেন তাঁদের কাছে রয়েছে। সেক্ষেত্রে বিধায়কের সঙ্গে কথা বলতে বলেছি।
তিনি বলেন, লোকসভা ভোটের ফলাফলের কথা যদি ধরা হয়, সেখানে এবার লোকসভা ভোটে আমার কোনও দায়িত্ব ছিল না। এখানে ছ’টি অঞ্চলের দায়িত্ব ছিল বিধায়কের উপর এবং ওয়ার্ডগুলি দেখার দায়িত্ব ছিল কাউন্সিলারদের। সেখানে দাঁড়িয়ে আমার কোনও লিখিত দায়িত্ব ছিল না। তা সত্ত্বেও আমি ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টা প্রতিদিন দলের জন্য কাজ করেছি। তবে নতুন যিনি সভাপতি হয়েছেন তাঁকে স্বাগত।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করে তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর সিং বলেন, তৃণমূল দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে কিছু নেই। আগামী বছর পুরসভার নির্বাচন রয়েছে। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে দল মনে করছে, শান্তিপুর শহরে আগামী দিনের সভাপতি পরিবর্তনের দরকার রয়েছে। সেই কারণে সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে। দলীয় স্তরে আলোচনার মাধ্যমে সাংগঠনিক দৃষ্টিভঙ্গিকে মাথায় রেখেই এই পরিরর্তন।