সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ১৫-র ওই নাবালিকা মাড়গ্রাম থানার একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। তাঁর বাড়ি চাঁদপাড়া এলাকায়। গত ৯ আগস্ট স্কুলে পরীক্ষা দিতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি ওই ছাত্রী। খোঁজখবর করে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন, গ্রামেরই এক যুবক ওই ছাত্রীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে চাপিয়ে চম্পট দেয়। ওইদিন রাতেই বছর ২৪ এর ওই যুবকের নামে থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন মা। তাঁর অভিযোগ, মেয়েকে উদ্ধারের ক্ষেত্রে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিস। উল্টে ওসি বলছেন, অপহরণের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিলে মেয়েকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে। অর্থাৎ মেয়েকে কোথায় অপহরণ করে রাখা হয়েছে তা জানে পুলিস।
এদিকে, মেয়ের জন্য খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন মা। বছর চারেক আগে দুর্ঘটনায় তিনি স্বামীকে হারিয়েছেন। একমাত্র সন্তানও হারিয়ে যাওয়ার পথে। এই অবস্থায় মেয়ের চিন্তায় ঘন ঘন মুর্চ্ছা যাচ্ছেন তিনি।
এদিকে ওই ছাত্রীর পরিবার স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগ তুলেছে। ছাত্রীর জেঠু অশোক মার্জিত বলেন, স্কুলে খোঁজখবর করতে গিয়ে জানতে পারি, পরীক্ষার মাঝপথেই পেটে যন্ত্রণার কথা বলে বাড়ি যাওয়ার নাম করে ভাইঝি স্কুল থেকে বেরিয়ে আসে। আমার প্রশ্ন, অসুস্থ নাবালিকা ছাত্রীকে কীভাবে একাই ছেড়ে দিতে পারে স্কুল কর্তৃপক্ষ? হয় অভিভাবককে জানাতে পারত বা স্কুলের কোনও শিক্ষককে দিয়ে তাকে বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে পারত। যেখানে নাবালিকা পাচার রোধে স্কুলে স্কুলে প্রশাসনের উদ্যোগে সচেতনতা শিবির করা হচ্ছে, সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষের এই দায়িত্বজ্ঞানহীনতা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। তাঁর আরও দাবি, বছরখানেক আগে গ্রামেরই এক যুবক এক নাবালিকাকে ফুসলিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। পরে পুলিস চাপ সৃষ্টি করে ওই পরিবারকেও অপহরণের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে এবং পরে নাবালিকাকে ফিরিয়ে আনে। এই অপহরণের নেপথ্যেও ওই যুবক রয়েছে বলে মনে করছে ছাত্রীর পরিবার।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তলপেটে যন্ত্রণা হওয়ায় ওই ছাত্রী পরীক্ষা শেষ হওয়ার আধঘণ্টা আগেই স্কুল থেকে বেরিয়ে যায়। ওই হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক নিষেধ করা সত্ত্বেও ওই ছাত্রী স্কুল থেকে বেরনোর জন্য ছটপট করছিল। স্কুল থেকে বেরিয়ে ওই ছাত্রী কারও সঙ্গে চলে গেলে আমরা কী করব বলুন। তবুও আমি থানায় গিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের আর্জি জানিয়েছি। কিন্তু, এভাবে অসুস্থ এক নাবালিকা ছাত্রীকে একাই ছেড়ে দেওয়া কি ঠিক হয়েছে? উত্তরে তিনি বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসুস্থ ছাত্রীদের শিক্ষকদের দিয়ে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এক্ষেত্রে ওই ছাত্রী বার বার বলেছে আমি একাই বাড়ি যেতে পারব। তবে, ওই ছাত্রীকে একা ছাড়া আমাদের ঠিক হয়নি।
বুধবার পুলিসের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে ‘দিদিকে বলো’ নম্বরে ফোন করে জানানোর পাশাপাশি মহকুমা শাসকের রিসিভ সেকশনে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ওই ছাত্রীর মা। যদিও মহকুমা শাসক শ্বেতা আগরওয়ালকে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এদিকে পুলিসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন এসডিপিও সৌম্যজিৎ বরুয়া। তিনি বলেন, ওই পরিবার ঠিক কথা বলছে না। কেস শুরু করে নাবালিকাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।