সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ আগস্ট ওই দুই ছাত্রী স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়। এদের একজনের বাড়ি দেবনাথপুর ও অন্যজনের বাড়ি বার্নিয়া। বার্নিয়ার বাসিন্দা ওই ছাত্রী মামাবাড়ি বেতাই দক্ষিণ জিতপুরে থাকে। স্কুলে যাওয়ার পথে তারা শুক্লার সঙ্গে গল্প শুরু করে। সেইসময় ওই দুই ছাত্রীকে নাচের দলে ঢুকিয়ে দেবে বলে প্রলোভন দেখায় শুক্লা। নাচের দলে যোগ দিলে প্রচুর টাকা আয় করা যাবে বলে লোভ দেখানো হয়। তাদের বলা হয়, বিহারে গেলে তাদেরকে খুব ভালো নাচের দলে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। সেইমতো ওই দুই ছাত্রী কোনওরকম চিন্তাভাবনা না করে স্কুলে না গিয়ে ওই মহিলার সঙ্গে চলে যায়। সেদিন স্কুল থেকে বাড়ি না ফেরায় ওই দুই ছাত্রীর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর শুরু করে। সারারাত ধরে বিভিন্ন পরিচিতদের বাড়িতে খোঁজখবর করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তারপরই তেহট্ট থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে তাদের পরিবারের লোকজন। পুলিসের কাছে সমস্ত ঘটনার কথা জানানো হয়। পুলিস অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নামে। পুলিস স্কুলের আশেপাশে ওই মহিলা সম্পর্কে খোঁজখবর করতে শুরু করে। পুলিস খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, ওই মহিলা একজন ছাত্রীর মাসি। সেই সূত্র ধরে পুলিস মহিলার খোঁজ পায়। পুলিস জানতে পারে, ওই মহিলা বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলার মাজুলিয়ার একটি জায়গায় থাকে। সেইমতো পুলিসের একটি দল বিহার পুলিসের সহায়তায় মাজুলিয়া এলাকায় খোঁজখবর শুরু করে। গোপন সূত্রে পুলিস জানতে পারে, ওই মহিলা ওই দুই নাবালিকা ছাত্রীকে একটি নাচের দলে বিক্রির জন্য কথাবার্তা চালাচ্ছে। সেইমতো পুলিস ওই মহিলাকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতে। এরপর মঙ্গলবার তেহট্ট পুলিসের একটি দল বিহার পুলিসের সাহায্য নিয়ে ওই মহিলার ঘরে হানা দেয়। মহিলার ঘর থেকে পুলিস ওই নাবালিকা দু’জনকে উদ্ধার করে। একইসঙ্গে ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। বুধবার পুলিস সকলকে থানায় নিয়ে আসে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নাবালিকাকে উদ্ধার করার জন্য তেহট্ট থানার এক সাব ইন্সপেক্টর বিহারে বেশ কয়েকদিন ধরে ছিলেন। তিনি বিহারে থেকে ওই মহিলার সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করেন। এদিন ওই দুই নাবালিকাকে থানায় নিয়ে এসে বাড়ির লোকজনকে খবর দেয় পুলিস। বৃহস্পতিবার তেহট্ট আদালতের বিচারকের কাছে ওই দুই নাবালিকাকে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য পাঠানো হবে। এদিকে, ওই দুই নাবালিকাকে ফেরত পেয়ে বাড়ির লোকজন খুব খুশি। তাঁরা মেয়েদের কাছে পেয়ে পুলিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।
এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) অর্ণব বিশ্বাস বলেন, ১৬ আগস্ট থেকে ওই দুই নাবালিকা ছাত্রী নিখোঁজ। ওদের পরিবার অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে। সেইমতো আমরা স্কুলে আশেপাশে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি এক মহিলা ওদেরকে নিয়ে চলে গিয়েছে। তারপর ওই মহিলার খোঁজ করে জানা যায়, ওই দুই নাবালিকাকে বিহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে মঙ্গলবার তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।