সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
২০১৪ সালের লোকসভার ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদি আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে বছরে দু’কোটি চাকরির ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, তাঁর প্রথম পাঁচ বছরে দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে গেল কয়েকগুণ—৪৫ বছরের মধ্যে সর্বাধিক বেকারত্ব দেখল দেশ! তা নিয়ে চাপান-উতোর থিতিয়ে যাওয়ার আগেই মঙ্গলবার গাড়ি শিল্পের উপর একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স (সিয়াম)। প্রকাশিত রিপোর্টে গাড়িশিল্পে মন্দার দু’দশক আগের ছবিটিরই যেন পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। মোটরবাইক, প্রাইভেট গাড়ি, যাত্রীবাহী এবং বাণিজ্যিক গাড়ি কোনোটিতেই সুখবর নেই। সবগুলির বিক্রি বেশ কমতির দিকে। গাড়ি নির্মাতা সংস্থা থেকে ডিলার, শোরুম মালিক প্রভৃতি সবারই এখন সামাল সামাল অবস্থা। সিয়ামের বক্তব্য, গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হাজার পনেরো কর্মী ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন। গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ক্ষেত্রে কাজ হারিয়েছেন দশ লক্ষাধিক মানুষ। সব ধরনের গাড়ির চাহিদায় ভাটা পড়ে যাওয়ায় কর্মীসঙ্কোচন ঘটছে ডিলারদের সংস্থাগুলিতেও। তাতেও কর্মহীনতার পথে দু’লক্ষাধিক মানুষ। গাড়িশিল্পের এই সার্বিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল।
ভারতেকে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থনীতির স্বপ্ন (২০২৪-২৫ সালের ভিতর) দেখিয়ে এই নির্মম সত্য মিথ্যে করা যাবে না। এই স্বপ্ন সাকার করতে হলে জিডিপি বৃদ্ধির হারটি দ্রুত বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ করতে হবে। দেখতে হবে বৃদ্ধির হারটি কত দ্রুত দুই সংখ্যায় নিয়ে যাওয়া যায়। সবচেয়ে দরিদ্র ১০ শতাংশ এবং সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশের আয়ের ব্যবধানটা কীভাবে কমানো হবে, তা দেখতে হবে। অর্থনীতির পণ্ডিতদের মতে, বৃদ্ধির উচ্চহারের চাবিকাঠি হল বিনিয়োগ। আমাদের মতো অর্থনীতিতে সরকারের বিনিয়োগযোগ্যতা যেহেতু অত্যন্ত সীমিত, সেখানে বেসরকারি বিনিয়োগই উচ্চহার বৃদ্ধির ভরসা। এই কথাও মাথায় রাখতে হবে যে, দেশাভ্যন্তরে বিনিয়োগযোগ্য সম্পদের পরিমাণ অপ্রতুল। তাই বিদেশি বিনিয়োগের উপরেও জোর দিতে হবে। বিদেশি লগ্নিকারীরা কিন্তু মুখ দেখে বিনিয়োগ করবেন না। বিনিয়োগের কাম্য পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি না-হওয়া পর্যন্ত তাঁদের মন ভেজানো মুশকিল। তাই রক্ষণশীলতা ছেড়ে বিনিয়োগ-সহায়ক শুল্কব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকেও সরকারকে নজর দিতে হবে। উন্নততর বাণিজ্য পরিবেশ গড়তে হবে। পাল্টাতে হবে শ্রম আইন। ‘স্টার্টআপ’রা উৎসাহিত হতে পারেন এমন সরল লাইসেন্সপ্রথা গ্রহণসহ সমগ্র পরিবেশ রচনা করতে হবে অর্থমন্ত্রককে। শুধু মুখে বললে হবে না, কৃষিক্ষেত্রের সার্বিক উন্নয়নেও জোর দিতে হবে, কারণ আমাদের দেশ এখনও মূলত কৃষিনির্ভর। কৃষির প্রকৃত বিকাশ ছাড়া ভারতের শিল্প-ব্যবসার কোনোটিই প্রসারিত হওয়ার কল্পনা করা বৃথা।