বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
পাণ্ডুয়ার একদা জঙ্গুলে জনপদ বৈঁচির দাঁ বাড়িতে পুজো যখন শুরু হয়েছিল, তখন পরিবারের পূর্বসূরীরা ছিলেন হতদরিদ্র। পুজো শুরু হওয়ার পর এক বছর কিছুতেই আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। দেবীর স্বপ্নাদেশ এসেছিল কলার গাছ তো আছে? সেই গাছের ভেতরের অংশ অর্থাৎ থোড় ভোগ দিয়ে পুজো করতে। পরে দেবীর কল্যাণে সম্পদশালী দাঁ পরিবার থোড় সেদ্ধ ভোগ দিতে ভোলেনি। সেই রেওয়াজ আজও চলে আসছে। দাঁ বাড়ির উত্তরসূরী উদয়চাঁদ দাঁ বলেন, খুব খারাপ অবস্থা থেকে দেবীর কল্যাণে আমরা বণিক হয়েছিলাম। তাই দুঃস্থ অবস্থায় যে থোড় ভোগ মায়ের স্বপ্নাদেশে চালু হয় তা থেকে গিয়েছে।
একইভাবে মায়ের ভোগে থোড় আর মোচা দেওয়া হয় চণ্ডীতলা মশাটের চট্টোপাধ্যায় পরিবারে। তবে এক্ষেত্রে দু’টিই ভাজা করে দেওয়া হয়। বণিক চট্টোপাধ্যায়দের পরিবারেও মা স্বপ্নাদেশে পূজিতা হতে শুরু করেছিলেন। তবে থোড় ও মোচা কেন ভোগ তার ঠিকুজিকুলুজি মেলে না। পরিবারের উত্তরপুরুষ কেশব চট্টোপাধ্যায় বলেন, বাণিজ্যতরী চড়ায় আটকে গিয়েছিল। দেবীর পুজোয় সেই বিপদ থেকে মুক্তি মেলে। তখন থেকেই চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর শুরু। রীতি মেনে এখনও থোড়-মোচায় মায়ের ভোগ হয়।
দেবীর ভোগে পান্তাভাতের রেওয়াজও আছে হুগলিতে। চুঁচুড়ার সুপ্রাচীন মুখোপাধ্যায় পরিবারে দশমীতে দেবী বিদায়ের আগে পান্তাভাত আর কচুঘণ্ট খাওয়াতেই হয়। ১০১৫ বঙ্গাব্দ থেকেই দেবীর জন্যে এই নিয়ম চলে আসছে। মুখোপাধ্যায়দের জমিদারির মতো পুরনো দলিল-দস্তাবেজও হারিয়ে গিয়েছে। বংশের প্রবীণ সদস্য প্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, কেন এই নিয়ম তার বিষয়ে কিছু জানা যায় না। কিন্তু রীতি মেনে এভাবেই আমরা মাকে বিদায় জানাই।
দুর্গাপুজোয় ফল বলির ইতিহাস বাঙলার অনেক জায়গাতেই মেলে। কিন্তু তা বলে চালতা ফল বলি হওয়া বিলক্ষণ কম শোনা যায়। আর এমনটাই সুপ্রাচীন কাল থেকে চুঁচুড়ার ষণ্ডেশ্বরতলার পাল বাড়িতে হয়ে আসছে। পুজোতে চালতার বলি দিতেই হয় পালেদের। বংশের উত্তরপুরুষ বিশ্বজিৎ পাল বলেন, কেন এই নিয়ম তা আমাদের জানা নেই। কিন্তু ৪০০ বছরের বেশি সময় ধরে বংশপরম্পরায় এটাই হয়ে আসছে।