বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
উত্তর কলকাতার এপিসি রোডের সংহতি স্পোটিং ক্লাবের পুজোর এবারকার থিম হল ‘আমার সোনার বাংলা’। হিংসা নয়। হোক একতার জয়। সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তাকেই তুলে ধরা হয়েছে এখানকার মণ্ডপে। গোয়াবাগান লেনে ‘আমরা সবাই সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি’র পুজোয় এবারের ভাবনা ‘মায়াবী প্রদীপ’। পুজো কমিটির সভাপতি ডাঃ চঞ্চল ভড় জানান, সমাজের নিকষ কালো অন্ধকারের অতলে তলিয়ে যাওয়া পথভ্রষ্ট, উদভ্রান্ত পথকে নতুন করে বাঁচার রসদ যোগাবেন দেবী, এই চিন্তাকে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এখানে। প্রতিমা শিল্পী হলেন পল্টু পাল। সমগ্র ভাবনায় আছেন সুশান্তকুমার মাইতি। গোয়াবাগান দে বাড়ির পুজো বহু পুরনো। বিশেষত্ব হল, এখানে শিবের কোলে থাকেন দুর্গা। এখানে দেবীর পুজো হয় গৌরী রূপে। তবে দেবী হরগৌরী হলেও নিয়ম মেনে দেবীর ছেলেমেয়েরাও পুজো পান এখানে। একই আটচালায় শিবের কোলে দুর্গার পাশাপাশি থাকেন কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী। জন্মাষ্টমীতে হয় কাঠামোর পুজো, রথের দিন ঠাকুরের বায়না দেওয়া হয়। ষষ্ঠীর দিন নয়, মা দুর্গা এখানে আসেন মহালয়ার দিনই। বিশেষ আলপনায় সজ্জিত করে আসন পাতা হয় গৌরীর জন্য।
খিদিরপুর পল্লীর পুজো এবার পড়ল ৭৮ তম বর্ষে। সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তাকেই তুলে ধরা হয়েছে এখানে। হালতুর রামলাল বাজার মিলনী সঙ্ঘের পুজোয় এবারকার ভাবনা ‘বাংলার গ্রাম’। নানা কারুকার্যে ফুটে উঠেছে এখানকার মণ্ডপ। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সৌভিক মণ্ডল ও সুমন সাহা জানান, শিল্পী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় গড়ে উঠেছে সমগ্র মণ্ডপ। এখানকার প্রতিমা শিল্পী হলেন শঙ্কর মণ্ডল। উত্তর শহরতলির রামকৃষ্ণপুরম এর ৩০তম বর্ষের ভাবনা হল ‘তন্ত্রে নয়, মন্ত্রে জাগাবো তোমায়’। ভাবনা ও রূপায়ণে আছেন বিপ্লব আঁশ। তিনি জানান, এখানে মণ্ডপে দেবী দুর্গার ১০৮টি নাম ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মন্ত্রের মাধ্যমে উচ্চারিত হোক দেবীর ১০৮ নাম— এই প্রয়াসকে তুলে ধরা হয়েছে এখানে। এখানকার মণ্ডপটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়েছে কাঠ, প্লাইউড, সীসা বর্জিত রং, সুতো এবং কাপড়। মাতৃ প্রতিমার রূপদান করেছেন দীপঙ্কর মণ্ডল। আলোকসজ্জায় মলয় সরকার।
আড়িয়াদহ প্রগতি সঙ্ঘের পুজো এবার ৮০ তম বর্ষে পা দিল। এখানে মণ্ডপ, আলো ও প্রতিমায় থাকছে নানা চমক। মাতৃপ্রতিমায় সাবেকিয়ানার ছোঁয়া। বন্ধুদলের উদ্যোগে শ্যামবাজার স্ট্রিটের আদি কম্বুলিয়াতলা ও শ্যামবাজার স্ট্রিট সর্বজনীন দুর্গোৎসব এবার পড়ল ৭৫তম বর্ষে। বুধবার এই পুজোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। পুজো কমিটির সম্পাদক রাজা মুখোপাধ্যায় জানান, এবারকার থিম হল ‘যশো দেহী’। মা যিনি উপচে পড়া শস্য, সামগ্রী, ধন, সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী, তিনি হচ্ছেন মা যশো দেহী। অথচ যশো দেহী হওয়া সত্ত্বেও তিনি সর্বদা সাধারণ বেশে। তাঁর কোমল, মঙ্গলময় দৃষ্টি তাঁর সন্তানদের উপর প্রতিফলিত। তিনি সর্বহারা সন্তানদের উন্নতির জন্য রিপু দমনে ব্রতী হয়েছেন। এই চিন্তাকেই তুলে ধরা হয়েছে এখানকার মণ্ডপে।
বড়বাগান স্পোটিং ক্লাবের পুজোর এবারকার থিম হল ‘বিশ্ব শান্তির সন্ধানে’। পুজো কমিটির সম্পাদক গৌতম দাস জানান, এবারকার পুজোয় প্রতিমা, মণ্ডপ ও আলোয় থাকছে নানা বৈচিত্র্য। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পশ্চিম গোপালনগর কুলপি গ্রামবাসীর পরিচালনায় পুজো এবার রজত জয়ন্তী বর্ষে পা দিল। এবার এখানকার থিম হল ‘জলভর জল বাচাও’। কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের পুজোয় ৭৬ তম বর্ষে এবারকার ভাবনা ‘মনভূমি’। জগৎ বা মনভূমি যা পারিপার্শিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি হয়। যে কোন পরিস্থিতির মধ্যেই মানুষকে তার লক্ষ্য স্থির করতে হয় এবং লক্ষ্যে পৌঁছতে হয়। এই বিষয়টিকে তুলে আনা হয়েছে এখানকার মণ্ডপে। বি কে পাল অ্যাভিনিউতে সন্ধানী সর্বজনীন দুর্গোৎসব এবার পড়ল ৭৫তম বর্ষে। পাহাড়, চা বাগান, হিল স্টেশন, ট্রয় ট্রেন, রোপওয়ে প্রভৃতি দৃষ্টিনন্দন বিষয়কে এখানে তুলে আনা হয়েছে। মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই এখানে স্থান পেয়েছে মাতৃপ্রতিমা। উত্তর শহরতলির কিশোর অ্যাথলেটিক ক্লাবের পুজো এবারও প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানকার পুজোয় পল্লীবাসী বৃন্দ ও মহিলাদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। মণ্ডপ সজ্জার সঙ্গে থাকছে আলোর নানা কেরামতি। শহরতলির ব্যানার্জিপাড়া মাতৃপূজা সমিতির পুজো এবার ৮৩তম বর্ষে। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুজন বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাপস ঘোষাল জানান, আমাদের প্রতিমা সাবেকি। তবে এখানকার পুজোয় আছে ভাব ও নিষ্ঠা। এখানকার পুজোর কটাদিন সন্ধ্যায় ধুনুচি নাচ সত্যিই অনবদ্য বলে জানান পুজো উদোক্তারা।