হ য ব র ল

সিমলার হানাবাড়ি
সায়নদীপ ঘোষ

ভ্রমণপ্রেমীদের অন্যতম পছন্দের জায়গা সিমলা। পাহাড়ের গায়ে ঠিক যেন রূপকথার শহর। যাওয়ামাত্র মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়। তবে এই সুন্দর শৈলশহরে রয়েছে এক ভূতুড়ে বাড়ি। স্থানীয়দের বিশ্বাস, সন্ধ্যার পর সেখানে গেলেই নাকি এক অশরীরীর দেখা মেলে। তাই সূর্য ডোবার পর পারতপক্ষে সেখানে কেউ যান না। সিমলার বিখ্যাত ‘চার্লভিলে ম্যানসন’ ঘিরেই যাবতীয় জল্পনা-কল্পনা।
এই কাহিনির উৎস খুঁজতে আমাদের চোখ রাখতে হবে ইতিহাসের পাতায়। ১৯১৩ সাল। রেল বোর্ডের সহকারী সচিব পদে ভিক্টর বেইলিকে নিযুক্ত করল ব্রিটিশ সরকার। চাকরি সূত্রে ওই বছরই সস্ত্রীক সিমলায় চলে যান ভিক্টর। সিমলায় পৌঁছে তো গেলেন। থাকবেন কোথায়? কিছুতেই বাড়ি পছন্দ করে উঠতে পারছিলেন না বেইলি দম্পতি। অবশেষে গভীর জঙ্গলের মধ্যে চার্লভিলে ম্যানসন নামে এক প্রাসাদোপম বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। 
তবে থাকার আগে বাড়ি সম্পর্কে ভালো করে খোঁজখবর নেন ভিক্টর। তখনই তিনি জানতে পারেন, আগের ভাড়াটে নাকি অতিলৌকিক ঘটনা চাক্ষুষ করেছিলেন। তারপরই তিনি নাকি বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। কী সেই ঘটনা? ভিক্টর জানতে পারেন, তাঁর আগের ভাড়াটে নাকি উপরের ঘর থেকে বিভিন্ন ধরনের শব্দ শুনতে পেতেন। অথচ সেখানে কেউই থাকত না। একদিন বাইরে থেকে ঘরটি বন্ধ করে দেন তিনি। পরের দিন গিয়ে ঘরের লণ্ডভণ্ড অবস্থা দেখে রীতিমতো আঁতকে ওঠেন ওই ব্যক্তি। এরপর এক মুহূর্ত চার্লভিলে থাকেননি তিনি। স্থানীয়দের মধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাড়ির ভাড়া অনেকটাই কমে যায়। জলের দামে এত সুন্দর বাড়িতে থাকার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি বেইলি দম্পতি। তাই ভূতুড়ে উপদ্রব নিয়ে নানান গল্প শোনা সত্ত্বেও তাঁরা ওই বাড়িতে থাকতে রাজি হয়ে যান। 
স্ত্রীকে নিয়ে এক বছর দিব্যি নতুন বাড়িতে কাটিয়ে দেন ভিক্টর। কোনও অতিলৌকিক ঘটনাও ঘটেনি। কিন্তু ওই বাড়ির পরিচারিকা এমন কিছু দেখেন যার ব্যাখ্যা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, একদিন স্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজে গিয়েছিলেন ভিক্টর। বাড়িতে একা ছিলেন ওই মহিলা। এমন সময় আচমকা উপরের ঘরে কিছু শব্দ শুনতে পান তিনি। উপরে গিয়ে দেখেন, এক ছায়ামূর্তি সেখানে ঘোরাঘুরি করছে। প্রথম নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি তিনি। তাই আরও একটু এগিয়ে যান। তখনই চোখের সামনে সেই ছায়ামূর্তিটি বন্ধ দরজা ভেদ করে অন্য ঘরে চলে যায়। এই দৃশ্য দেখার পর সঙ্গে সঙ্গে নীচে নেমে আসেন ওই মহিলা। বাড়ির মূল দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বেইলি দম্পতির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। চোখেমুখে আতঙ্কের ছবি স্পষ্ট। হৃৎপিণ্ড ঠিকরে বাইরে বেরিয়ে 
আসার উপক্রম। 
ভিক্টর ও তাঁর স্ত্রী বাড়ি ফেরামাত্র সবকিছু খুলে বলেন তাঁদের পরিচারিকা। স্থানীয়দের কথা অগ্রাহ্য করলেও একথা বিশ্বাস না করে থাকতে পারেননি রেল বোর্ডের এই আধিকারিক। কিছুদিন পর বাড়ি ছেড়ে চলে যান বেইলি দম্পতি। 
লোকমুখে শোনা যায়, এখানে নাকি একসময় চার্লস প্র্যাট নামে এক ব্রিটিশ অফিসার থাকতেন। একদিন বাড়ির ভিতরেই তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। তারপর থেকেই সেখানেই ঘোরাঘুরি করে তাঁর অতৃপ্ত আত্মা। ওই সাহেবের মৃত্যুর পর ওই বাড়িতে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তি ভূতুড়ে অভিজ্ঞতার সাক্ষী থেকেছেন। চার্লস ছাড়াও সেনার পোশাক পরা এক অশরীরীকে সেখানে দেখেছেন অনেকেই। বিখ্যাত সাহিত্যিক রুডিয়ার্ড কিপলিং তাঁর ‘মাই ওন ট্রু ঘোস্ট স্টোরি’ নামক বইতে চার্লভিলে ম্যানসনের উল্লেখ করেছেন। 
জানা গিয়েছে, ভিক্টরের পর ওই বাড়িতে এক মহিলা বসবাস করতেন। স্বাধীনতার সময় এক ভারতীয় পরিবারকে বাড়ি বিক্রি করে চলে যান তিনি। বর্তমানে চার্লভিলে ম্যানসনের মালিক এক ভারতীয়। বাড়ির প্রতিটি ঘর ঢেলে সাজিয়েছেন তিনি। কিন্তু তবুও হানাবাড়ির তকমা ঘোচাতে পারেননি। এখনও নাকি সন্ধ্যার পর সেখানে ছায়ামূর্তি দেখা যায়। বাড়ির ভিতর থেকে ভেসে আসে নানারকম অদ্ভুত শব্দ। তাই সচরাচর সন্ধ্যায় কেউ সেখানে যান না। তবে কথায় বলে, ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর’। 
এরপর সিমলায় গেলে অবশ্যই একবার ওই হানাবাড়ি থেকে ঘুরে এসো। বলা তো যায় না, সব ঠিক থাকলে হয়তো চার্লস সাহেবের ভূতের দর্শনও পেয়ে যেতে পার।
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা