হ য ব র ল

১২টা বাজে না সোলোথার্নের ঘড়িতে
সোমা চক্রবর্তী

 রাত ১২টা থেকে সময়ের কাঁটা ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছয় দুপুর ১২টার ঘরে। সেখান থেকে আবার রাত ১২টায়। এভাবেই ঘড়িতে আবর্তিত হয় সময়। ১২টা থেকে শুরু করে ১টা, ২টো, ৩টে, ৪টে...। প্রত্যেকটা ঘরকে অতিক্রম করতে করতে কাঁটাগুলোর অবস্থান আমাদের জানিয়ে দেয় আমরা কোন সময়ে রয়েছি। আচ্ছা, কেমন হতো ২৪ ঘণ্টার এই একদিন যদি ঘড়ি অনুসারে একটা ঘণ্টা কম হতো‌? পৃথিবীর পুরো রুটিনটাই কি তাহলে পাল্টে যেত! পাল্টে যেত মানুষের প্রত্যহ যাপনের ছন্দ!
আজ থেকে প্রায় দু’হাজার বছর আগের কথা, আরে নদীর নাব্য অংশের কাছে রোমানরা পত্তন করেছিল এক শহরের। নাম তার সোলোথার্ন। আরে হল রাইনের উপনদী। আর সোলোথার্ন শহরটি বর্তমান সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত। এখানকার মানুষ ছিল খুবই পরিশ্রমী। তারা দিনরাত পরিশ্রম করত। কিন্তু শ্রমের উপযুক্ত কাঙ্ক্ষিত মূল্য তারা কখনও পেত না। ফলে তারা খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিল। একদিন জুরা পর্বতমালা থেকে নেমে এল এল্ফ। সে সবসময় পরিশ্রমী মানুষগুলোকে উৎসাহ দিত, মনের জোর বাড়াত। এল্ফের সংস্পর্শে এসে সোলোথার্নের অধিবাসীরা নতুন জীবন ফিরে পেল। তাদের মধ্যে খুশির জোয়ার এল। এল্ফের অর্থ ১১।
জার্মানির পৌরাণিক কাহিনিতেও এল্ফের উল্লেখ আছে। এল্ফ শব্দটিও জার্মান ভাষারই অন্তর্ভুক্ত। সোলোথার্নবাসীরা মনে করত এল্ফের অনেক অদ্ভুত শক্তি বা ক্ষমতা আছে। তারা বিশ্বাস করত, এল্ফের জাদুস্পর্শেই তাদের জীবনের দুঃখ-দুর্দশা দূর হয়েছে। সেই সময় থেকেই এগারো সংখ্যাটিকে তারা অত্যন্ত শুভ মনে করত।
সময় যত এগিয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সুইজারল্যান্ডের সোলোথার্নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে ১১ সংখ্যাটি। এখানকার লোকগাঁথা, ইতিহাস সবকিছুর মধ্যেই ১১ -এর গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতি। ১২১৫ সালের কাউন্সিলর নির্বাচনেও ১১ জনকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। ১৪৮১ সালে সুইস কনফেডারেশনের ১১তম প্রদেশ হিসাবে যুক্ত হয় সোলোথার্নের নাম। এই সময় শহরের রক্ষাকর্তা হিসেবেও নিযুক্ত হন ১১ জন। সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনাটি হল পঞ্চদশ শতকে নির্মিত সেইন্ট আরসু গির্জা ঘিরে। গির্জাটিতে ১১টি দরজা, ১১টি জানলা, ১১টি রো, ১১টি ঘণ্টা, ১১ রকমের পাথরের ব্যবহার এবং ১২ সংখ্যা বিহীন ঘড়ি  আছে । এখানকার সিঁড়িগুলিতেও ১১ টি করে ধাপ। গির্জাটির নির্মাণ কাজ চলেছিল ১১ বছর ধরে।
শহরের প্রধান টাউন স্কোয়ারের ঘড়িটিকে ঘিরে রয়েছে ‘একাদশ রহস্য’। এই ঘড়িতে কখনও বারোটা বাজে না। ১১-র পরেই ঘড়িতে আছে এক। সর্বত্র ১২ সংখ্যা বিশিষ্ট ঘড়ি হলেও এখানে একটা সংখ্যা কম। এই বিষয়টি যেকোনও পর্যটক বা অন্য কোনও দেশের মানুষের কাছে এক অদ্ভুত বিস্ময়। এছাড়াও এই শহরে আছে ১১টি জাদুঘর, ১১টি ঝর্ণা সহ আরও অনেক নিদর্শন। তবে যা কিছুই থাকুক না কেন সবকিছুর সঙ্গেই এগারো অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত । ১১ বছরের জন্মদিন থেকে শুরু করে ১১তম বিবাহবার্ষিকী সবই অত্যন্ত ঘটা করে পালন হয় এখানে।
শহরে আগত পর্যটকরা ঘড়িটি দেখে থমকে যান বটে, কিন্তু এখানকার মানুষ অত্যন্ত গর্ববোধ করে। আমরা বাঙালিরা প্রায়শই একটা কথা বলে থাকি— ‘আর কিছুই হবে না সবকিছুর বারোটা বেজে গেছে।’ এই প্রবাদটা সোলোথার্নের মানুষরা কখনও বলতে পারবেন না। কারণ তাঁদের শহরের ঘড়িতে কখনও বারোটা বাজবে না। সব শুভ, সব মঙ্গল বারবার আবর্তিত হবে ১১-কে ঘিরেই।
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা