হ য ব র ল

ঘুড়ির উৎসব

বারাকপুর অম্বিকা বিমলা মডেল হাইস্কুল জেলার অন্যতম প্রাচীন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কেবলমাত্র বালকদের এই উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে বর্তমান ছাত্র সংখ্যা প্রায় এক হাজার তিনশো। আর শিক্ষক-শিক্ষিকা সংখ্যা প্রায় ৫০।
ইংরেজ শাসনাধীন ভারতে ১৯৩৯ সালের ৩ এপ্রিল এই বিদ্যালয়ের পথচলা শুরু হয়। স্থানীয় আনন্দপুরী অঞ্চলে একটি ভাড়া বাড়িতে এ বি মডেল স্কুলের সূচনা হয়। পরবর্তীকালে রসময় বিশ্বাস রোডে স্কুলের নিজস্ব ভবন তৈরি হয়। এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রয়াত প্রফুল্লকুমার দাশগুপ্তের হাত ধরে এই বিদ্যালয়ের পথচলা শুরু। প্রফুল্লবাবুর বাবা ও মায়ের নামেই স্কুলের নামকরণ করা হয়। ১৯৪১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের স্বীকৃতি মেলে। পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের স্বীকৃতি লাভ করে।
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল এলাকার পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলির সন্তানদের শিক্ষার আঙিনায় নিয়ে আসা। কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে যুক্তিবাদী মন তৈরি করা। বর্তমানে স্কুলে রয়েছে সাতটি আধুনিক ল্যাবরেটরি, একাধিক ডিজিটাল ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব, লাইব্রেরি, মাল্টি জিমনাশিয়াম। এছাড়াও রয়েছে স্টুডেন্ট হেলথ হোমের সুবিধা। সহৃদয় অভিভাবক ও প্রাক্তনী সংসদের সদস্যরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আশা করি, সুনামের সঙ্গে এই বিদ্যালয় ভবিষ্যতেও এগিয়ে যাবে।
 সুব্রতকুমার পাহাড়ী, প্রধান শিক্ষক

ভোকাট্টা চিৎকার
রূপকথার গল্প পড়া আর ঘুড়ি ওড়ানো আমার নেশা। আমি যে দারুণ ঘুড়ি ওড়াই তেমনটা নয়। তবু চেষ্টার কসুর করিনি। সেপ্টেম্বর পড়ে গেলেই আমাদের পাড়ায় ঘুড়ি ওড়ানোর ধুম পড়ে যায়। স্কুল থেকে ফিরে সব বন্ধুরা মিলে ঘুড়ি ওড়াই। আকাশ যখন ঘুড়িতে ঢেকে যায়, আমার দারুণ লাগে। প্যাঁচ খেলতে গিয়ে ঘুড়ি কেটে গেলে বন্ধুদের ভোকাট্টা চিৎকারে কানে তালা পড়ে যায়। যার ঘুড়ি কেটে যায়, তার মুখ দেখে মনে হয় পরাজিত সৈনিক। যদিও আমরা ঘুড়ি কাটা নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে কেউ কখনও ঝগড়া করি না।
—পুষ্পল ঘোষ, অষ্টম শ্রেণি

অহংকারী ঘুড়ি
একটি ঘুড়ি হঠাৎই খুব অহংকারী হয়ে উঠেছিল। সে বিশেষ কারও সঙ্গে কথা বলত না। একদিন আকাশে উড়তে উড়তে তার সঙ্গে একটি ছোট্ট পাখির দেখা হয়। পাখিকে দেখে ঘুড়িটি গর্বের সুরে বলে দেখ, আমার কোনও ডানা নেই, তাও আমি কেমন উঁচুতে উড়তে পারি। পাখিটিও পাল্টা বলে, তোমাকে তো সুতোয় বেঁধে ওড়ানো হয়। আর লাটাই থাকে একজন মানুষের হাতে। তুমি আসলে পরাধীন। কিন্তু আমি তো স্বাধীন। আমি আমার মর্জি মতো উড়ি, গাছে বসে বিশ্রাম নিই। গাছের ফল-মূল খাই। ছোট্ট পাখির কথা শুনে ঘুড়ি রাগ করে সেখান থেকে চলে গেল। এরপরই আকাশে আরও বেশ কয়েকটি ঘুড়ির আগমন হল। অন্য একটি ঘুড়ির সঙ্গে অহংকারী ঘুড়িটির লড়াই বেঁধে গেল। সেই লড়াইয়ে অহংকারী ঘুড়িটি ভোকাট্টা হয়ে গেল। হাওয়ায় ভেসে যেতে যেতে সে উপলব্ধি করতে পারল, অহংকারই পতনের মূল।
—হরিচাঁদ বিশ্বাস, সপ্তম শ্রেণি

আজও রোমাঞ্চিত হই
ছোটবেলায় যখন ঘুড়ি ওড়াতে পারতাম না, খুবই রোমাঞ্চ লাগত কীভাবে আকাশে ঘুড়ি ওড়ে সেটা ভেবে। এখন ঘুড়ি-লাটাইয়ের খেলায় আমি বেশ দড়। তবুও বিশ্বকর্মা পুজো এলে আজও রোমাঞ্চিত হই। ঘুড়ি ওড়াতে ওড়াতে কখনও কখনও ভাবি, আমিও যদি ওভাবে আকাশে ভেসে বেড়াতে পারতাম! কী যে মজা হতো! আমাদের এখানে বিশ্বকর্মা ও সরস্বতী দুটো পুজোতেই ঘুড়ি ওড়ানো হয়। পেটকাঠি, চাঁদিয়াল, ময়ূরপঙ্খী— হরেকরকম ঘুড়ি। লড়াইয়ে ঘুড়ি কেটে গেলে অবশ্যই খুব মনখারাপ হয়। আমাদের এলাকায় ছোটদের ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা হয়। সেই প্রতিযোগিতায় একবার আমি জয়লাভও করেছিলাম। তবে, আগের তুলনায় ঘুড়ি ওড়ানোর হিড়িক অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে আমার মনে হয়।
—সন্দীপ রায়, সপ্তম শ্রেণি

জোরকদমে শিখছি
বিশ্বকর্মা পুজোয় আকাশে ঘুড়ির মেলা। কিন্তু আমার মনখারাপ হয়ে যায়। কারণ আমি ঘুড়ি ওড়াতে পারি না। এ বছর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। ঘুড়ি ওড়ানো আমাকে শিখতেই হবে। মোটামুটি অনেকটা শিখেও গিয়েছি। বন্ধুরা কী সুন্দর আকাশের গায়ে মোমবাতি, চাঁদিয়াল, বগ্গা মেলে দেয়! কিন্তু আমি পারি না। আমার বাড়ির সামনেই মাঠ রয়েছে। আমরা সেখান থেকেই ঘুড়ি ওড়াই। বাবা বারবার সাবধান করে দিয়েছেন ন্যাড়া ছাদে উঠে যেন কখনওই ঘুড়ি না ওড়াই। ন্যাড়া ছাদে ঘুড়ি ওড়ানো খুবই বিপজ্জনক। যেকোনও সময় বিপদ ঘটে যেতে পারে। যাইহোক, আশা করি, এবছর বিশ্বকর্মা পুজোয় কারও সাহায্য ছাড়াই আমি ঘুড়ি ওড়াতে পারব।
—সৌম্য বসু, ষষ্ঠ শ্রেণি

চীন দেশে প্রচলন
আমাদের কাছে বিশ্বকর্মা পুজো আর ঘুড়ি যেন সমার্থক। ঘুড়িকে ইংরেজিতে বলে ‘কাইট’। কিন্তু অনেকেই জানে না এই মজার জিনিসটি বিদেশ থেকে আমাদের দেশে এসেছে। ঘুড়ির প্রথম উদ্ভব ঘটে চীন দেশে। অবশ্য সেই ঘুড়ি এখন আমরা যেমন ওড়াই তেমন দেখতে ছিল না। মনে করা হয়, ২ হাজার ৮০০ বছর আগে চীন দেশে প্রথম ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন হয়েছিল। পরবর্তীকালে এই ঘুড়ি ওড়ানোর সংস্কৃতি এশিয়ার অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থাৎ ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে ঘুড়ি খুবই জনপ্রিয়। শুধু এশিয়া কেন ইউরোপেও ঘুড়ি ওড়ানোর চল রয়েছে। জানা যায়, ১ হাজার ৬০০ বছর আগে ইউরোপ মহাদেশে ঘুড়ি ওড়ানো শুরু হয়। আমাদের দেশে গুজরাত, তেলেঙ্গানা, রাজস্থানে মকরসংক্রান্তির দিন ঘুড়ি উৎসব পালিত হয়। তবে, সবশেষে একটাই কথা কখনওই চীনা মাঞ্জা দিয়ে ঘুড়ি ওড়ানো উচিত নয়। এই সুতো কোনওভাবে গলায় লেগে রাস্তাঘাটে বাইক আরোহীর মৃত্যুর ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে।
—অঙ্কিত সূত্রধর, সপ্তম শ্রেণি

হুল্লোড় অনেকটাই কম
আমাদের ছোটবেলায় ঘুড়ি নিয়ে যতটা হইহই চোখে পড়ত, এখন সেই হুল্লোড়টা অনেকটাই কমে গিয়েছে। আসলে আমাদের মতো কিশোরদের খেলাধুলো ও বিনোদনের মাধ্যমটা অনেকটা বদলে গিয়েছে। এখন অনেকেই মোবাইল ফোনে ভিডিও গেম খেলে অবসর সময় কাটায়। ক্রিকেট, ফুটবল খেলার উৎসাহ বেশ কমে গিয়েছে। তাছাড়া, চারদিকে বহুতল। মাঠঘাট যেমন কমে গিয়েছে, সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে গিয়েছে লেখাপড়ার চাপ। তবে, আমার ঘুড়ি ওড়াতে ভালোই লাগে এবং ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছি। অবশ্যই কয়েকজন পাড়ার বন্ধুকে পেয়ে গিয়েছি। আমরা জনাকয়েক মিলেই ঘুড়ির আনন্দে মেতে রয়েছি।
—রীতেশ বিশ্বাস, নবম শ্রেণি

 
27d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা