হ য ব র ল

পরিত্যক্ত মহাকাশযানের সমাধিস্থল
উৎপল অধিকারী

সেই প্রাচীনকাল থেকে মানুষ অপার আগ্রহে মহাশূন্যের দিকে চেয়ে থাকে। পাখির মতো ওড়ার ইচ্ছা তার দীর্ঘদিনের। তারপর ধীরে ধীরে বিজ্ঞানকে হাতিয়ার করে মানুষ নানা যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেছে। এমনভাবে সে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে গিয়েছে। গত শতাব্দীর ছয়ের দশক থেকে চাঁদে যাওয়া এবং মহাকাশ নিয়ে গবেষণা বৃদ্ধি পেতে থাকে। প্রতিনিয়ত অসংখ্য কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশযান মহাশূন্যে পাঠানো হচ্ছে এবং সেগুলিকে আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে পৃথিবীতে। কিন্তু সেইসব পরিত্যক্ত মহাকাশযানকে কোথায় রাখা হচ্ছে? তাদের সমাধিস্থল কোথায়? এসব নিয়ে হাজার প্রশ্ন আমাদের মনের মধ্যে জাগে।
পরিত্যক্ত মহাকাশযান ও কৃত্রিম উপগ্রহের একটি সমাধিস্থল আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রশান্ত মহাসাগরের অন্তত ৪ কিলোমিটার জলের গভীরে স্থানটির নাম ‘পয়েন্ট নিমো’। এই স্থানটি মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ২ হাজার ৬৮৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে এই যন্ত্রাংশগুলি জলের গভীরে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে। চিরদিনের মতো সেগুলি থেকে যায় অন্ধকার সমুদ্রতলে। এই স্থানটি এতই দুর্গম যে, এখানে মানুষ প্রবেশ করতে পারে না। বিশালাকার ঢেউ, অন্ধকার ও নির্জন পরিবেশ স্থানটিকে রীতিমতো ভীতিপ্রদ ও মায়াচ্ছন্ন করে রেখেছে। ব্রিটিশ নাবিক ডি কাফারি এই স্থানটি পরিভ্রমণ করেছিলেন। তাঁর বর্ণনা থেকে এই স্থানটি সম্বন্ধে জানা যায়। এর কাছাকাছি মানুষ যদি কোনও বিপদে পড়ে তাহলে তাঁদের উদ্ধার করার কেউ নেই। ‘পয়েন্ট নিমো’র উপরে মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ায় কেবল কিছু পাখি। আর সমুদ্রের জলে ভেসে বেড়ায় বিশালাকার হাঙর ও প্রচুর তিমি মাছ।
১৯৭১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২৬৩টিরও বেশি খারাপ হয়ে যাওয়া অথবা অকেজো উপগ্রহ ও মহাকাশযানকে এখানে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখানে যে যে দেশগুলির মহাকাশ বর্জ্য ফেলা হয়েছে, সেগুলি হল— আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, রাশিয়া সহ ইউরোপের একাধিক দেশ। এখনও পর্যন্ত তৈরি সর্ববৃহৎ কৃত্রিম উপগ্রহ ‘আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন’ আর কয়েক বছরের মধ্যেই তার কার্যকারিতা শেষ করবে। তারপর সেটিকে এই ‘পয়েন্ট নিমোতে’ই নামিয়ে আনা হবে। এটি ৩৫৭ ফুট লম্বা এবং এর ওজন চার লক্ষ ১৯ হাজার ৭২৫ কিলোগ্রাম।
জানা গিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরের এই অঞ্চলটিতে মানুষের যাতায়াত, জাহাজ চালানো, মাছ ধরা নিষিদ্ধ। এই অঞ্চলের মাত্র ৪১৫ কিলোমিটার উপর দিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনগামী নভশ্চররা উড়ে যান। অঞ্চলটি মহাসাগরীয় মেরু নামে পরিচিত।
অঞ্চলটির নাম হঠাৎ করে ‘পয়েন্ট নিমো’ রাখা হল কেন? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ রাখতে হবে ফরাসি কল্পবিজ্ঞানের স্রষ্টা জুলভার্নের লেখা ‘টুয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্য সি’ উপন্যাসের পাতায়। এখানে আমরা একটি সাবমেরিনের দেখা পাব। যার নাম নটিলাস। আর এই ডুবোজাহাজের ক্যাপ্টেনের নাম ছিল নিমো। সাবমেরিন আবিষ্কার হওয়ার আগেই জুলভার্ন কল্পবিজ্ঞানের এই উপন্যাসটি লেখেন। গল্পের শেষে দেখা যায়, ক্যাপ্টেন সহ সাবমেরিনটির সলিল সমাধি হয়েছিল। তাই সেই ক্যাপ্টেন নিমোর সম্মানার্থে এই অঞ্চলটির নামকরণ করা হয়— ‘পয়েন্ট নিমো’। পৃথিবীর মানচিত্রে অঞ্চলটি খুঁজে পেতে আমাদের চোখ রাখতে হবে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ চিলির মাঝামাঝি বিস্তীর্ণ সমুদ্রের দিকে। এই পয়েন্ট নিমোর পূর্বে রয়েছে চিলি, পশ্চিমে চ্যাথাম দ্বীপপুঞ্জ, উত্তরে পিটকেয়ার দ্বীপপুঞ্জের ডুসি দ্বীপ এবং দক্ষিণে আন্টার্কটিকার মাহের দ্বীপ অবস্থিত। এই অঞ্চলটিতে ফেলে দেওয়া পরিত্যক্ত উপগ্রহ বা মহাকাশযানের অংশগুলি বিভিন্ন জলজ প্রাণীর নিশ্চিন্ত আবাসস্থল হয়ে উঠেছে।
6d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায়...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৪.১৩ টাকা৮৫.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৪.২৭ টাকা১০৭.৯৮ টাকা
ইউরো৮৬.৪২ টাকা৮৯.৭৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা