হ য ব র ল

হিমালয়ের রহস্য ইয়েতি

অনির্বাণ রক্ষিত: মালয় পর্বতমালা। যা দুর্গম, সেখানেই রহস্য, আর যেখানে রহস্য সেখানেই ভয়। আর যেখানে ভয় সেখানেই অজস্র কাহিনি। হিমালয় এবং নিজেদের জনজাতিকে জুড়ে নেপালের আনাচেকানাচে এমন অনেক গল্পকথা ভেসে বেড়ায় যার ইতিহাস কোথায়, সত্যতাই বা কী তার ইয়ত্তা মেলে না। ইয়েতির গল্প, বা ইয়েতির ভয় পাহাড়ে নতুন 
কিছু নয়। ইয়েতি বা তুষারমানবের কাহিনি এমন এক রহস্য যার সত্যতা আজ পর্যন্ত যাচাই করা যায়নি। নেপাল, ভুটান 
ও তিব্বতের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে নাকি ইয়েতির বসবাস! ইয়েতির রহস্য জানতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। শোনা যায়, খোদ দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডার ইয়েতির কথা জানতে পেরে, রহস্যময় প্রাণীটিকে দেখার জন্য আকুল হয়ে উঠেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি আদৌ সেই 
প্রাণীর দেখা পেয়েছিলেন কি না, তেমন 
কোনও প্রমাণ অবশ্য ইতিহাস বইতে পাওয়া যায় না। 
ইয়েতি-কাহিনির উৎপত্তি
হিমালয়ের সংস্কৃতিতে ইয়েতি নিয়ে নানা কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। ১৯৫১ সালে ব্রিটিশ অভিযাত্রী এরিক শিপটন মাউন্ট এভারেস্ট পর্যন্ত একটি বিকল্প পথের সন্ধানে রওনা দেন। তাঁর যাত্রাপথে তিনি একটি অস্বাভাবিক পায়ের ছাপ দেখেন এবং এটির একটি ছবিও তোলেন। বলা যেতে পারে, ইয়েতির সেই প্রথম বিশ্বজনীন রহস্য হয়ে ওঠা। সেই বিশালাকার পায়ের ছাপটি ছিল ১৩ ইঞ্চি লম্বা! এর দু’বছর পর তেনজিন নোরগে ও স্যার এডমন্ড হিলারিও দাবি করেন, তারাও এভারেস্ট অভিযান করার সময় বড় পায়ের ছাপ দেখেছেন। যদিও হিলারি পরে বলেছিলেন, ইয়েতি বলে কোনও প্রাণীর অস্তিত্ব বিশ্বাসযোগ্য নয়। আবার তেনজিং আত্মজীবনীতে দাবি করেছিলেন, ইয়েতি আসলে বিরাট বাঁদর। তিনি না দেখলেও তাঁর বাবা দু’বার এমন দীর্ঘ প্রাণী দেখেছেন। দ্বিতীয় আত্মজীবনীতে অবশ্য অন্য কথা লেখেন তেনজিং। জানিয়ে দেন, ইয়েতির অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্দিহান তিনি। এই দোলাচলের মধ্যে ইয়েতি সেইসময় এত আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে যে, নেপাল সরকার গত শতাব্দীর পাঁচের দশকে ইয়েতি শিকারের লাইসেন্স জারি করে দেয়! যেখানে পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছিল, ইয়েতির ছবি তোলা যেতে পারে, তাকে বন্দিও করা যেতে পারে। কিন্তু আত্মরক্ষার প্রয়োজন না পড়লে তাকে হত্যা করা যাবে না। যদি ইয়েতি ধরাও পড়ে, তবে তা নেপাল সরকারের কাছেই জমা দিতে হবে। এবং সবচেয়ে বড় কথা, ইয়েতির সন্ধান মিললে সেই সব প্রমাণ আগে প্রশাসনের কাছে জমা দিতে হবে। নিঃসন্দেহে কড়া শর্ত! বলাই বাহুল্য, লাইসেন্স দেওয়াই সার! এতকিছুর পরেও ইয়েতির টিকির সন্ধানও মেলেনি।
ইয়েতির অস্তিত্ব কি আদৌ আছে?
গত সাত দশকে ইয়েতি বিভিন্ন গল্পে বার বার ফিরে এসেছে। কয়েকমাস আগেও কিছু বাঙালি অভিযাত্রী ক্যাম্প ওয়ান থেকে ক্যাম্প টুতে যাওয়ার সময় বরফের উপরে বড় বড় পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন। সাড়ে সাত ইঞ্চি লম্বা ও সাড়ে ছয় ইঞ্চি চওড়া সেই পায়ের ছাপের ছবিও তুলে এনেছেন তাঁরা। এরপর থেকে আরও একবার নতুন করে উঁকি দিতে শুরু করেছে। ইয়েতি নিয়ে কিন্তু ‘সিরিয়াস’ গবেষণাও হয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জিনতত্ত্বের অধ্যাপক ব্রায়ান সাইকস হিমালয়ের তুষারে উদ্ধার হওয়া চুল বা লোম নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করেছেন। তাঁর দাবি, তুষারমানব-টানব কিস্যু নয়। ওগুলি নিছকই কোনও মেরুভালুকের লোম। তবে প্রকৃতপক্ষে ইয়েতি থাকুক বা না থাকুক, তাকে ঘিরে অনুসন্ধান চলছে আজও। আর সন্ধান মিলুক না মিলুক, মনের গভীরে যাদের বাস তাদের সামনাসামনি না দেখলেও নানান কল্পকাহিনি ডানা মেলে। সাহিত্যেও ঢুকে পড়ে হিমালয়ের এই রহস্যময় প্রাণী। টেনিদার গল্প হোক বা টিনটিনের কমিকস কিংবা কাকাবাবুর অভিযান সর্বত্রই  ইয়েতির আনাগোনা।   নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘টেনিদা আর ইয়েতি’ গল্পে ক্যাবলা বলেছিল, ‘ইয়েতি-টিয়েতি সব বোগাস।’ যদিও সত্যিই এই রহস্যময় প্রাণীর অস্তিত্ব আছে কি না সেই উত্তর কেবলমাত্র
জানে হিমালয়ই।
27d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা