উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
চা বলতে পাতা চা বা সিটিসি এই দুই প্রকারভেদ মনে পড়ে। কিন্তু চা সম্বন্ধে জানতে গেলে বহু তথ্য উঠে আসে। সব ধরনের চা তৈরি হয় একই চা গাছ থেকে। প্রসেসিংয়ের সময় অক্সিডেশনের ডিগ্রির উপর নির্ভর করে কেমিক্যাল কম্পোজিশন, রং, আস্বাদ বা অ্যারোমার পার্থক্য হয়। অর্থোডক্স টি এবং সিটিসি এই হল চায়ের মূল। অর্থোডক্স টি চিরাচরিত উপায়ে তৈরি হয়। এটি মূলতঃ পাতা চা। আর সিটিসি চা বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি গোল চা। অর্থোডক্স চায়ের বিভিন্ন রকমের স্বাদ এবং গন্ধ হয়। ছ’ধরনের স্বাদের চা পাওয়া যায়। হোয়াইট, ইয়েলো, গ্রিন, ওলং, ব্ল্যাক এবং পোস্ট ফার্মেন্টেড। দার্জিলিংয়ের ব্ল্যাক টি, ওলং টি— বিশেষত সেকেন্ড ফ্ল্যাশ যেটি গরম কালে তোলা হয়, গ্রিন টি, হোয়াইট টি জগৎ বিখ্যাত। ওলং টি চীন এবং গ্রিন টিতে জাপানিরা অনেকটা এগিয়ে ছিল। সেখানে দার্জিলিং অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। ডুয়ার্স সিটিসি চায়ের জন্য এগিয়ে রয়েছে।
চা শুধু মাত্র পান করার জন্য নয়। চায়ের নানাবিধ উপকারও রয়েছে। রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে, হার্টের অসুখ সারাতে, বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার সারাতেও চায়ের জুড়ি মেলা ভার।
এই চা –ই আবার চলে এসেছে পড়ার বিষয় হয়ে। এখন রাজ্যের মধ্যে এমন কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা ‘চা’ নিয়ে পড়িয়ে থাকে। টি ম্যানেজমেন্ট এমনই পড়ার বিষয়।
টি ম্যানেজমেন্টের মধ্যে রয়েছে চা গাছ থেকে চারা গাছ তৈরির পদ্ধতি, সেখান থেকে চা পাতা বাজারজাত করার জন্য যে যে প্রক্রিয়া নেওয়া হয় সবকিছু।
কোর্স হিসাবে রয়েছে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন টি ম্যানেজমেন্ট। এই কোর্সটি কোথাও ন’মাসের ডিপ্লোমা কোর্স হিসাবে পড়ানো হয়। আবার এক বছরের কোর্স হিসাবেও এই ডিপ্লোমা করে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যে কোনও শাখায় স্নাতক ডিগ্রি পাশ ছাত্র-ছাত্রীরা বিষয়টি নিয়ে পড়তে পারে।
আবার পড়ে নেওয়া যায় এমএসসি ইন টি সায়েন্স নিয়ে। দু’বছরের এই কোর্সটি পড়ার জন্য বিজ্ঞানের যে কোনও শাখায় অনার্স স্নাতক হতে হবে। আবার এগ্রিকালচার অনার্স নিয়ে পাশ করলেও ভর্তি হওয়া যায়।
এছাড়া রয়েছে তিন মাসের টি টেস্টিং কোর্স। এই কোর্সে ভর্তির জন্য যে কোনও ডিগ্রি পাশ করে থাকতে হবে।
চা সংক্রান্ত পড়া হলেও কাজের ক্ষেত্রটি বেশ কঠিন। সেজন্য শারীরিকভাবেও সক্ষম হতে হবে। শ্রমিকদের কাজ বোঝানোর পন্থা জানতে হয়। আবার লিডারশিপ গ্রহণ করার মতোও বুদ্ধিমত্তা থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। চায়ের বাজার কেমন চলছে তা সকল সময় জেনে রাখা জরুরি। মার্কেটিং বিষয়টিতেও আগ্রহী হতে হবে। এই গুণগুলি হাতের মধ্যে রাখলে চা নিয়ে পড়লে কাজের জগতে প্রতিষ্ঠা পাওয়া সম্ভব।
পড়া শেষে কাজের সুযোগ রয়েছে রিসার্চার হিসাবে। টি কনসালটেন্ট হিসাবে, টি ব্রোকার হাউস এবং অ্যাগ্রোনমিক্যাল সংস্থায় মার্কেটিং ম্যানেজারের মতো কাজের সুযোগ রয়েছে। টি বোর্ড, নামী চা কোম্পানিতে কাজের সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া ব্যাঙ্ক বা বিমা কোম্পানিতে কাজের সুযোগ রয়েছে।
ট্রেনি অবস্থায় প্রতি মাসে সাত হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। আবার পেশাদার হয়ে উঠলে মাসে ২৫ হাজার টাকা আয় হয়। স্পেশালাইজেশন যারা করেছেন তাদের মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় হয়ে থাকে।