সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
গোটা ভারত উত্তাল। পাকিস্তানকে জবাব দিতে হবে। মুখের মতো। সাউথ ব্লক। ভারত তথা দিল্লির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিং। এটাই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, আর্মি, নেভি, এয়ারফোর্স চিফদের অফিস, ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইসর অজিত দোভালের দপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের চেম্বার। সেকেন্ড ফ্লোর। নেভি অপারেশনস রুম ছাড়িয়ে করিডর ধরে এগিয়ে ডানদিকের একটি বন্ধ ঘরের নাম সিচুয়েশন রুম। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছিলেন, কী কী অপশন আছে আমাদের কাছে। বিকল্পগুলি তাঁকে জানানো হয়েছিল। সেদিনই সিদ্ধান্ত হয়েছিল হট পারস্যুট। প্রিসিশন এয়ার স্ট্রাইক। ছিলেন তিন সামরিক প্রধান। প্রধানমন্ত্রী বললেন, আপনারাই স্থির করুন, কবে কখন কোথায়!
১৭ ফেব্রুয়ারি:
রাজস্থানের পোখরানে হঠাৎ আকাশে উড়ছে ফাইটার জেট। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি এয়ার টু সারফেস মিসাইল ক্যারিয়ার এয়ারক্র্যাফট। সাধারণ মহড়া? পাকিস্তান এয়ার ফোর্স তা সত্ত্বেও হাই অ্যালার্ট জারি করেছে। আসলে কিন্তু সেদিন ছিল স্পেশাল মহড়া। যাচাই করা হচ্ছে এয়ারবোর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম এয়ারক্র্যাফট। যাকে বলা হয় এ ই ডব্লু সি এ। দু’টি ড্রোন। নেত্র আর হেরন। প্রিসিশন এয়ারস্ট্রাইকে ফাইটার জেটের সঙ্গেই থাকবে।
২০ ফেব্রুয়ারি...২১ ফেব্রুয়ারি...২২ ফেব্রুয়ারি...দিল্লিতে উড়ছে মিগ... চণ্ডীগড়ে চক্কর খাচ্ছে মিরাজ... অমৃতসরে তেজস... গুজরাতে বাইসন...। সকালে... দুপুরে... রাতে...। পাকিস্তানকে কনফিউজড করে রাখতে। কী করছে ভারত এটা? সারাক্ষণ যখন তখন এভাবে এয়ার অ্যাক্টিভিটি কেন? অ্যাটাক করবে ভারত? নাকি করবে না, ভয় দেখাচ্ছে শুধু...! পাকিস্তান বুঝতে পারছে না।
২৫ ফেব্রুয়ারি:
রাত সাড়ে ১২ টা। সাউথ ব্লকের সিচুয়েশন রুমে অজিত দোভাল । আছেন তিন সামরিক প্রধান। এবং দুজন ঠান্ডা মাথার মানুষ। ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর চিফ রাজীব জৈন। রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (RAW) চিফ অনিল ধাসমানা! সবথেকে টেনশনে দেখাচ্ছে বি এস ধানোয়াকে। কারণ আজ তাঁর বাহিনীর অগ্নিপরীক্ষা। আর্মি চিফ নিজেও কথা বলে নিলেন ওয়েস্টার্ন কমান্ডের সঙ্গে।
রাত একটা। পাঞ্জাবের ভাতিন্ডা এয়ারবেস থেকে সবার আগে উড়ে গেল ইএমবি ওয়ান ফর্টি ফাইভ এ ই ডব্লু। অত্যাধুনিক ২৪০ ডিগ্রি এয়ারস্পেস সংবলিত কভারেজ এরিয়ার র্যাডার। আধঘন্টা পর রাত দেড়টা। আগ্রা এয়ারবেস থেকে উড়ল আইএল সেভেন্টি এইট রিফুয়েলার। ফাইটার জেটের ফুয়েল একটুও সময় নষ্ট না করে যাতে ভরে দেওয়া যায় তাই এই রিফুয়েলার।
রাত ২টো। গোয়ালিয়রের এয়ারবেস থেকে তিনটি করে মোট ছ’টি মিরাজ উড়ল আধঘণ্টার ব্যবধানে। ততক্ষণে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় শুরু হয়েছে গুলি বিনিময়। ওটাই কৌশল। যাতে পাকিস্তান আর্মি আর বর্ডার ফোর্স ব্যস্ত থাকে এই রুটিন লড়াইয়ে। ১২০০ কিলোমিটার যাবে মিরাজ। সোজা এলওসি। যখন আরও ৬টি মিরাজ উড়েছে গোয়ালিয়র থেকে ততক্ষণে হরিয়ানার সিরসা থেকে এসে জয়েন করেছে সুখোই থার্টি এমআইকে। এরা পাহারা দেবে এলওসি। ৬টি করে দু’টি ভাগে বিভাজিত হয়ে গেল মিরাজ-২০০০। তাদের দু’দিকে এমব্রেয়ার আর আইএল সেভেন্টি এইট। ততক্ষণে অল ক্লিয়ার সিগন্যাল দেওয়ার জন্য এল ও সি ক্রস করেছে মিডিয়াম অল্টিচিউড আন ম্যানড এয়ার ভেহিকল। হেরন। ইজরায়েলের মালাট সংস্থার। প্যালেস্টাইন আর সিরিয়ার এটা ব্যবহার করা হয়েছে। ৩ টে ৪৮। মিরাজের নীচে বালাকোট। স্পাইস টু থাউজ্যান্ড পড়ছে মুহূর্মুহূ। এন টি আর ও জানিয়েছে এটাই সবথেকে বড় টার্গেট। চারটি বিল্ডিং আছে। ৩ টে ৫৩। চাকোটিতে মিরাজের সেভেন্থ স্কোয়াড্রন অ্যাটাক করল। চার মিনিটের বম্বিং। নেত্র ড্রোন জানাচ্ছে টার্গেট আলফা থ্রি কন্ট্রোল রুম হিটেড। আর ৪ টে বেজে ২ মিনিট। আচমকা নেত্র থেকে সিগন্যাল আসছে। র্যাডারের বাইরে থাকলেও আসছে পাকিস্তান এয়ারফোর্স। সুতরাং আর সময় সময় নেই। এলওসি ক্রস করা হয়েছে প্রায় ২১ মিনিট। সিচুয়েশন রুমের কমান্ড ছিল ১৯ মিনিটের মধ্যে ফিরতে হবে। প্রায় দু মিনিট বেশি। পাকিস্তানের কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট কাছে চলে আসছে। যে কোনও সময় ছুঁড়তে পারে এআইএম। পাকিস্তানের কাছে আছে আমরামস। অ্যাডভান্সড মিডিয়াম রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার মিসাইল। আমেরিকান ফার্ম রেথিওন তৈরি করে এই মিসাইল। এখনও ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান এয়ার ফোর্স ইউজ করেনি। কিন্তু যদি এখন করে। তাই টাইম নেই। কিন্তু আকাশপথেই কমব্যাট ফরম্যাট তৈরি করে ফেলল মিরাজ। অর্থাৎ, শত্রুপক্ষকে পাল্টা অ্যাটাকও করতে পারে এরকম বার্তা দেওয়া। সম্ভবত ভারতের ওই ফরমেশন দেখেই পাকিস্তান ফাইটার জেট এগলো না। নিরাপদ দূরত্বে চক্কর কাটছে। যাকে বলে অরবিট। ঠিক ২১ মিনিটের মাথায় নিয়ন্ত্রণরেখা ক্রস করে ভারতে ফিরে এল ১২টি মিরাজ-২০০০। অপারেশন ওভার! ওভার? এয়ার কন্ট্রোল কমান্ড জানতে চায়। ইয়েস...অ্যাফারমেটিভ..!