Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

৫০ বছর পেরিয়ে
রাজধানি এক্সপ্রেস
সমৃদ্ধ দত্ত

প্রিয় স্তুতি,
একটু আগেই ট্রেন ছেড়েছে। টু টায়ারে টিকিট কনফার্মড হয়েছে অবশেষে। আপার বার্থে বসে এই চিঠি লিখছি। সবেমাত্র জলের বোতল দিয়ে গেল ক্যাটারিং স্টাফ রোগা ছেলেটি। মাথায় কালো ক্যাপ। নাম আনন্দ। একটা কথা মনে পড়ল ট্রেনে বসে। সত্যজিৎ রায় কতটা পারফেকশনের শিখরচুড়ায় অবস্থান করতেন তার হাজারো ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ হয়েছে। আরও হবে। আমি নতুন করে কিছু যুক্ত করব তেমন যোগ্যতা নেই। তবে তাঁর তীক্ষ্ণ মেধা চিত্রনির্মাণের মধ্যে কীভাবে সম্পৃক্ত হয়ে যেত, তার আভাস আমরা পেয়ে যাই হঠাৎ ঝলসে ওঠা সূক্ষ্মতম ঔজ্জ্বল্যে। সোনার কেল্লা সিনেমায় ফেলুদা আর তোপসে অনায়াসে রাজধানী এক্সপ্রেসে এসে ট্রেন পালটে দ্রুত যোধপুর পৌঁছতে পারতেন। দক্ষিণ কলকাতার রজনী সেন রোডের অভিজাত এবং সম্পন্ন পরিবারের দুই সদস্যের কাছে এটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু মুকুলকে নিয়ে কেল্লার খোঁজে রাজস্থান যাওয়া ডক্টর হাজরার কাছে পৌঁছনোর জন্য ফেলুদা এসেছিলেন সাধারণ তুফান মেলের স্লিপার ক্লাসে। কারণ কী? কারণ ফেলুদা নিজেই আসার আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। মুকুলের বাবা যে সাধারণ এক মধ্যবিত্ত ক্লায়েন্ট সেকথা তোপসেকে জানিয়ে তিনি একটি দৃশ্যে ১৯৭৩ সালের একটি ট্রেনের টাইমটেবিল বুকশেলফ থেকে বের করতে করতে বলছিলেন, ‘সবচেয়ে আগে খরচের একটা হিসাব করতে হবে। এই মক্কেল তো আর কৈলাশ চৌধুরী নয় বা জঙ্গিপুরের হরিশ পোদ্দারও নয়, যে কথায় কথায় হাজার দুহাজার টাকা লিখে দেবে..।’ ওই একটি বাক্যেই সত্যজিৎ বুঝিয়ে দিলেন ওই জার্নিতে বিলাসিতা চলবে না। কারণ মক্কেল বড়লোক নয়। তাই রাজধানী এক্সপ্রেস নয়। অন্য ট্রেন। যদিও সেই সময় হাওড়া থেকে রাজস্থানে যেতে প্রচুর সময় লাগতো। ফেলুদা না হয় রাজধানী এক্সপ্রেসে চাপতেই পারতেন। হয়তো কানপুর অথবা দিল্লিতে নেমে ট্রেন চেঞ্জ করতে হত। অনেক আগে পৌঁছনো সম্ভব হত। কিন্তু প্রশ্ন হল কানপুরে নামা যেত কি? তখন কি আদৌ রাজধানী এক্সপ্রেসের কোনও স্টপেজ ছিল কানপুরে? হ্যাঁ ছিল। সোনার কেল্লা যখন মুক্তি পায় সেই ১৯৭৪ সালের তিন বছর আগেই কানপুরের জন্যই শুধু নতুন ১০টি চেয়ারকার কোটা যুক্ত করা হয়েছিল রাজধানী এক্সপ্রেসে। তার আগে পর্যন্ত রাজধানী এক্সপ্রেসের শুধুমাত্র টেকনিক্যাল স্টপেজ ছিল কানপুর। প্যাসেঞ্জার স্টপেজ ছিল না। কিন্তু রাজধানী এক্সপ্রেসের প্রবল জনপ্রিয়তা দেখে কানপুরে দাবি ওঠে ট্রেন এখানেও দাড়াতে হবে। তাছাড়া উত্তর ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার জন্য ট্রেন বদল করতে হবে এই কানপুরেই। সুতরাং উত্তর রেলওয়ে ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে কানপুরেও স্টপেজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অবশ্য ফেলুদারা রাজধানী এক্সপ্রেসে চেপে এলে কানপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠা সেই বিশেষ যাত্রীটির সঙ্গে কি আলাপ হত? লালমোহন গাঙ্গুলি!
কিন্তু ঠিক তখনই আর একটা প্রশ্ন আমাকে বেশ ভাবাচ্ছে। ‘নায়ক’ ছবিতে যে ট্রেনটি দেখানো হয়েছে সেটি কোন ট্রেন? আমাদের তো বরাবরই মনে হয়েছে ওটা রাজধানী এক্সপ্রেসের ফার্স্ট ক্লাস ক্যুপ। কিন্তু সেটা তো হওয়ার কথাই নয়। নিশ্চিত অন্য ট্রেন। কারণ ‘নায়ক’ সিনেমা যখন মুক্তি পেয়েছিল সেই ১৯৬৬ সালে রাজধানী এক্সপ্রেসের অস্তিত্ব ছিল না। কলকাতাকে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি বরাবরই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। শাসনভার হাতে তুলে নেওয়ার পর কলকাতাকে লন্ডনের আদলেই তৈরি করা হচ্ছিল। অথচ কোনও এক অজ্ঞাত কারণে কেন যে ভারতে প্রথম যাত্রী ট্রেন পাওয়ার সৌভাগ্য পেল বম্বে জানে! বোরি বুন্দর থেকে থানে পর্যন্ত সেই ট্রেন চলেছিল। কিন্তু সেই আপশোস কেটে গেল তারও ১০৬ বছর পর। ভারতের সর্বপ্রথম প্রিমিয়াম অভিজাত ট্রেনটি উপহার পেল কলকাতা। দিল্লি থেকে কলকাতা রাজধানী এক্সপ্রেস চালু হল ১৯৬৯ সালের পয়লা মার্চ। সেটি ছিল দিল্লি থেকে হাওড়া। আর হাওড়া থেকে দিল্লি প্রথম ট্রেনটি ছাড়ল ৩ মার্চ। সপ্তাহে দুদিন চলবে। হাওড়া থেকে বিকেলে ৫ টায় প্রতি বুধবার এবং শনিবার। আর দিল্লি থেকে প্রতি সোমবার ও শুক্রবার বিকেলে সাড়ে ৫ টায়। সুতরাং ১৯৬৬ সালের নায়ক সিনেমার উত্তমকুমার আর শর্মিলা ঠাকুর যে ট্রেনে যাত্রা করেছিলেন সেটি আর যাই হোক রাজধানী এক্সপ্রেস ছিল না। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হল তিন বছর পর যে রাজধানী এক্সপ্রেস চালু হয়েছিল, সেটির অন্দরমহল অবিকল সেই নায়ক সিনেমার ট্রেনেরই মতো। অচিরেই সেই প্রথম রাজধানী এক্সপ্রেস গোটা দেশের ট্রেন সাম্রাজ্যের সম্রাট হয়ে উঠল। কারণ স্পিড। ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পিড রাখা হল গড়ে। যা অবিশ্বাস্য ছিল ওই ১৯৬৯ সালের তরুণ গণতন্ত্রে। অতএব ধীরে ধীরে রাজধানী এক্সপ্রেস নামটি গতির সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছিল। কেউ দ্রুত ছুটে গেলে বলা হত বাপরে, এ তো রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো দৌঁড়চ্ছে...। ওই যে ইভনিং স্ন্যাক্স নিয়ে আনন্দ এসেছে। তাই আপাতত কলম থামাচ্ছি। মাথা ধরেছে অনেকক্ষণ। চা খেয়ে আবার আসছি।

তুমি তো জানোই, রাজধানী এক্সপ্রেসে উঠলে সর্বদাই একটা আক্ষেপ শোনা যায়। আজ হোক অথবা ১০ বছর আগে। সেই একই দীর্ঘশ্বাস। খাবারদাবার আর আগের মতো নেই। এমনকী আজকাল দেখা হলে তুমিও এরকম ঠিক এই ক্ষোভ প্রকাশ করো। নিয়ম হল ট্রেনে উঠলেই একটি করে জলের বোতল দেওয়া হয়। এরপর ইভনিং স্ন্যাক্স ও চা। এরপর সন্ধ্যার পর একটি স্যুপ। (সেটা আজকাল অনেক ট্রেনে বন্ধ হয়েছে)। রাতে ডিনার। এবং আইসক্রিম। পরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট। আগেই জেনে নেওয়া হয় কে নন ভেজ খাবেন আর কারা ভেজ। গত ৫০ বছরে রাজধানী এক্সপ্রেসে সবথেকে বেশি পরিবর্তন আর সংশোধন হয়েছে খাবার নিয়ে। তবে এটা নিয়ে সংশয় নেই. আমাদের বাঙালির স্বর্ণযুগ ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন। কারণ সেই সময়গুলিতে চালু হয়েছিল ফিশ ফ্রাই, মাছের ঝোলের মতো বাঙালি মেনু। পরবর্তীকালে সেই প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। আলিগড় ছাড়িয়ে গেল একটু আগে। তুমি একবার আলিগড়ে এসেছিলে না! শহরটা ঐতিহাসিক এবং প্রাণবন্ত। কিন্তু একটাই সমস্যা। বেশ অপরিচ্ছন্ন। যত্রতত্র আবর্জনার স্তুপ চোখে পড়ে এই শহরে। একবার মনে আছে অফিসের কাজে বেরেলি যেতে হবে। তখন আগ্রায় ছিলাম। সেখান থেকে একটা বাসে চেপে আলিগড় এসে যেখানে বাস নামিয়ে দিয়ে গেল সেই জায়গাটা আর পেরোতে পারছিলাম না। কারণ পাহাড়প্রমাণ আবর্জনা। এখন আশা করি পরিবর্তন হয়েছে। সেবার স্টেশনে ঢুকে একটা প্যাসেঞ্জার ট্রেনে চেপে বসেছিলাম। আলিগড় থেকে বেরেলি। সেটা ছিল এক অদ্ভূত অভিজ্ঞতা। ট্রেন সময়ের থেকে আধঘন্টা দেরিতে ছেড়েছিল। তারপর হঠাৎ দুই দল যুবকের মধ্যে বসার জায়গা রাখা নিয়ে হাতাহাতি মেন পর্যায়ে পৌঁছল যে তারপর ঘটল এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য। দুই যুবক চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে গেল। এতটাই আস্তে চলে সেই বেরেলি প্যাসেঞ্জার। তারা সোজা গিয়ে ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলে এল। গাড়ি থামল। উভয় পক্ষই নেমে গেল পাশের ফাঁকা জমিতে। এবং ট্রেন দাঁড় করিয়ে রেখে দুই দল শুরু করল মারামারি। আমরা বাকি যাত্রীরা সেই সংঘর্ষের নীরব সাক্ষী। ইঁট পাথর, গাছের ডাল দিয়ে চলছিল যুদ্ধ। কেউ রক্তাক্ত হল। কেউ পালালো। শেষে এক ভদ্রলোককে দেখা গেল শান্ত করলেন দুই পক্ষকে। তিনিই ট্রেনের গার্ড। এরপর ট্রেন ছাড়লো বটে। কিন্তু চান্দোলি স্টেশন থেকে ওঠা এক মহিলা জানালার পাশে বসতেই বাইরে থেকে তাঁর স্বামী জানতে চাইলেন শাড়ির প্যাকেট কোথায়? মহিলা ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেলেন। এই রে! তাড়াহুড়োয় বাড়িতেই রয়ে গিয়েছে। এরপর দ্বিতীয় বিস্ময়কর ঘটনা। স্বামী ও তাঁর বন্ধু চালককে বলে এলেন একটু দাঁড়াতে। তাঁরা মোটরবাইকে চেপে বাড়ি থেকে সেই প্যাকেট নিয়ে এলেন মিনিট পাঁচকের মধ্যে। তারপর ট্রেন ছাড়ল। ২০০৯ সালে আমার চোখের সামনে এই ঘটনা যখন ঘটছে তখন ভারতীয় রেলের প্রতি সত্যিই শ্রদ্ধা হচ্ছিল। কারণ ওটা ছিল একটা অলাভজনক রুটে প্যাসেঞ্জার ট্রেন। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের অখ্যাত জনপদের মধ্যে নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে করতে ওই ট্রেন যেন সকলের কাছে আপনজন হয়ে উঠেছিল। কারও তাড়া নেই। চালকেরও নেই। যাত্রীদেরও নেই। নিত্যযাত্রীরা কিংবা বিভিন্ন স্টেশনের চা বিক্রেতাদের সঙ্গে ড্রাইভার আর গার্ডের রীতিমতো বন্ধুত্ব। এই নিস্তরঙ্গ, শান্ত জনপদগুলির কাছে এই সারাদিনের দুটি ট্রেন বাকি দুনিয়ার সংযোগসূত্র। আর ঠিক ওই প্রেক্ষিতে এই ভারতের কাছে রাজধানী এক্সপ্রেস যেন মঙ্গলগ্রহের এক রাজকীয় যান। ১৯৬৯ সালের সেই মার্চ মাসে শুরু হওয়া হাওড়া দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের চেহারা কেমন ছিল? প্রথমে ছিল এসি ফার্স্ট ক্লাস, এসি চেয়ার কার আর দুটি লাউঞ্জ কার। এসি ফার্স্ট ক্লাসের ভাড়া ছিল ২৮০ টাকা। ভেবে দেখো ১৯৬৯ সালের ২৮০ টাকার মূল্য কিন্তু অপরিসীম। এসি ফার্স্ট ক্লাসের ভাড়া আজকের এই ফ্লেক্সি ফেয়ারের জমানায় ১০ হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যায় মাঝেমধ্যে। সেই সময় প্রথম ট্রেনটিতে এ সি চেয়ার কারের ভাড়া ছিল ৯০ টাকা। প্রতিটি ট্রেনে থাকা লাউঞ্জ কোচে এসে বসতেন যাত্রীরা। থাকত উইন্ডো সাইড গদিমোড়া চেয়ার পাতা। সেখানে সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন রাখা। আর প্যান্ট্রি কারের ওয়েটার এসে জানতে চাইত চা, কফি, কোকাকোলা কী খাবেন? আমি নিশ্চিত তোমার এখন মনে পড়ছে ‘নায়ক’ সিনেমার দৃশ্য।
সবথেকে যেটা আশ্চর্যের ব্যাপার সেটা হল রাজধানী এক্সপ্রেসের গতি কিন্তু বিরাট কোনও বদল হয়নি বিগত ৫০ বছরে। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে ম্যাক্সিমাম স্পিড লিমিট বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর তার ফলে প্রায় ২৫ মিনিট মতো কমে যায় যাত্রা সময়। আজও প্রায় কমবেশি ঠিক ওই সময়টাই ধার্য থাকে। তবে সবথেকে বড় যে বদলটা এল সেটি ১৯৭৬ সালে। সম্পূর্ণ ইলেকট্রিফায়েড করা হল রাজধানী এক্সপ্রেসকে। স্বাভাবিকভাবেই লোকোমোটিভ ডিজেল আধুনিক করারও দরকার হয়ে পড়ল। আজকের রাজধানীকে দেখলে কল্পনা করা যাবে না যে এই ট্রেনের গুরুত্ব কতটা ছিল একসময়। এটা ছোট উদাহরণ দিলে বোঝা যাবে। একটা সময় ছিল যখন রাজধানী এক্সপ্রেস কোনও একটি স্টেশনে ঢোকার আগে ও পরে সেই যাত্রারুটে একটি সিঙ্গল ইঞ্জিন চালানো হত। তার কাজ ছিল নজরদারি করা। আগেপিছে কোনও অন্য ট্রেন এসেছে কিনা। কিংবা দাঁড়িয়ে আছে কিনা কোনও ট্রেন। সোজা কথায় রাজধানীকে যেন অনির্ধারিত কোনও স্টেশনে যেন দাঁড়াতে না হয়।
রাজধানী এক্সপ্রেস কিন্তু কোনও ট্রেন নয়। এটি ক্রমেই একটি সামাজিক উচ্চাশায় পর্যবসিত হয়েছিল। একটি স্ট্যাটাস সিম্বল। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের প্রতিটি পরিবারের ম঩ধ্যে একটি গোপন ইচ্ছা থাকে। সেটিকে স্বপ্নও বলা যায়। একবার অন্তত রাজধানীতে চাপবো। আমাদের মধ্যে অনেককেই বলতে শোনা গিয়েছে হরিদ্বারে ডাইরেক্ট যাব না। দিল্লি হয়ে যাব। কেন? তারা হেসে বলেন, রাজাধানীটাই চড়া হয়ে যাবে! ওই যে রাজধানীতে একবার অন্তত চড়ার আকাঙ্ক্ষা ওটাই আসলে রাজধানীকে উন্নীত করেছে একটি ট্রেন থেকে একটি স্বপ্নে। একটা জিনিস পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পাবে, আমাদের কোনও সহযাত্রীর কাছে কোনও ফোন এলে তিনি সাধারণত বলে থাকেন, এই তো দিল্লি যাচ্ছি রাজধানীতে... কিংবা বলেন, আমি রাজধানীতে আছি, পৌঁছে ফোন করব...অথবা আজ দিল্লিতে এসেছি, পরশু রাজধানীতে ফিরব। কেউ কিন্তু বলে না ট্রেনে আছি কিংবা ট্রেনে ফিরব। রাজধানী শব্দটা উচ্চারণের মধ্যে একটা আত্মতৃপ্তি আছে। একটা যেন সামাজিক গরিমার স্টেটমেন্ট রয়েছে। আর কোনও ট্রেনই কিন্তু এভাবে যাত্রীদের আর্থ সামাজিক অবস্থানের সঙ্গে নিজেকে মিশিয়ে ফেলতে পারেনি। রাজধানী এক্সপ্রেস নামটি একটি ব্র্যান্ড। তাই কিশোর উপন্যাসের নাম হয়, ‘রাজধানী এক্সপ্রেসের হত্যারহস্য’। সিনেমার নাম হয় ‘রাজধানী এক্সপ্রেস।’ কালকা মেল, পূর্বা এক্সপ্রেসরা এই গৌরব উপভোগ করতে পারে না। কিন্তু ভারতের লাইফলাইনের নাম যেহেতু ইন্ডিয়ান রেলওয়ে,তাই আম ভারতবাসীকে দূরে রেখে কীভাবে সম্ভব একটি সাম্রাজ্য চালানো? অতএব ১৯৮৩ সালে রাজধানী এক্সপ্রেসে এসি টু টায়ার আসার পর ১৯৯৩ সালে চলে এল এসি থ্রি টায়ার। যা ভারতের সবথেকে শক্তিশালী জনগোষ্ঠীকে কাছে টানার প্রক্রিয়া। সেই জনগোষ্ঠীর নাম মিডল ক্লাস। এবং ঠিক এই কারণেই যেন বাঁধের লকগেট খুলে গেল তার পরবর্তী বছরগুলিতে। একটি নয়, দুটি নয়, তিনটি নয়...অন্তত ১২ টা এসি থ্রি টায়ার কোচ যোগ করতে হয় রাজধানীর সঙ্গে। তা সত্ত্বেও ওয়েটিং লিস্টের। ঘুম পাচ্ছে । আর বেশিক্ষণ লিখব না। আপাতত আইসক্রিমটা খেয়ে বেডরোল খুলে ঘুমাতে চাই। কম্বল, চাদর আর বালিশ পাশে অপেক্ষা করছে। গুড নাইট!

সুপ্রভাত! কলকাতার আরও একটু কাছে পৌঁছে গেলাম। গয়া কখন চলে গিয়েছে টের পাইনি। তোমাকে বলতে দ্বিধা নেই। প্রতিবার দিল্লি যাওয়া অথবা হাওড়া আসার পথে এই ট্রেনে ঠিক গয়া যখন পেরোই তখনই যদি কখনও জানতে পারি যে গয়া এসেছে কিংবা আসবে, আজও কেমন একটা অস্বস্তি হয়! একটা ভয়। একটা আতঙ্ক। একটা মনখারাপ। সেটা ছিল ঘোর বর্ষাকাল। রাত সাড়ে ১০টা পেরিয়েছে। সোমবার। সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখ। ২০০২। বিহারের রফিগঞ্জ । ফারসা গ্রামটি একেবারে রেললাইনের কাছে। লাগোয়া ধাবা নদী। সেই গ্রামের এক চাষী মদন সিং সবেমাত্র ঘুমিয়েছেন। আচমকা একটা প্রচন্ড শব্দ। কিছু দূর থেকে। হুড়মুড় করে কি যেন পড়ছে। অনেকক্ষণ ধরে। চমকে বাইরে এলেন মদন সিং। দেখলেন গ্রামের অন্যরাও বেরিয়ে এসেছেন। এবং সকলেই দৌঁড়চ্ছেন নদীর দিকে। কী হল? সামনে গিয়েই প্রাথমিক অভিঘাতে সকলেই স্তব্ধ। একটা আস্ত ট্রেন ধাবা নদীর ব্রিজ থেকে গড়িয়ে পড়েছে নদীতে। চোখের সামনে একটির পর একটি কামরা ঢুকছে নদীগর্ভে। আমরা রাজধানী এক্সপ্রেসে যাওয়া আসার পথে জানালা থেকে বাইরে তাকিয়ে দেখতে পাই রেললাইনের পাশে কত গ্রামবাসীকে। কাউকে দেখি অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে এই ট্রেনের দিকে। দল বেঁধে বাচ্চারা হাত নাড়াচ্ছে। কখনও বা চলন্ত ট্রেনের দিকে হাত দেখিয়ে গ্রাম্য স্ত্রীকে তাঁর স্বামী বললেন, ওই দ্যাখো রাজধানী এক্সপ্রেস...সবথেকে দামী ট্রেন। এসব দেখে আমরা আত্মতৃপ্ত হই। ভাবি ওই যে কাচের জানালার ওপাশে থাকা ওই কাদাজলমাটিখেতের জীবনে থাকা লোকগুলো এই ট্রেনে ওঠার স্বাদ পেল না। মনে মনে ভাবি- আহা! বেচারা! সেদিন ওই ২০০২ সালের ঘন বর্ষার সেপ্টেম্বর মাসের রাত্রে শয়ে শয়ে রাজধানী এক্সপ্রেসের যাত্রীকে নদীগর্ভ থেকে তুলে হাতে করে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তুলেছেন এই লোকগুলি। কর্দমাক্ত খেত রাস্তা কাঁটাঝোপ পেরিয়ে ছুটেছেন। বাড়িতে গ্রামে যা ছিল সেসব নিয়ে কামরা কেটে কেটে আটকে থাকা যাত্রীদের বের করছেন তাঁরা। এই আজীবন জানালার অন্য পারে থাকা অন্য ভারত! সেই রফিগঞ্জের দুর্ঘটনা আজও রাজধানী এক্সপ্রেসের সবথেকে বড় দুঃস্বপ্ন। ২০০ যাত্রীর মৃত্যু হয়। ৫০ জনের আজও খোঁজ মেলেনি। কী হয়েছিল? কেন ছিল ফিশপ্লেট খোলা? কেন ওই শতাব্দীপ্রাচীন ব্রিজের সংস্কার হয়নি? সেসব প্রশ্ন হারিয়ে গিয়েছে দীর্ঘশ্বাসের বাতাসে। জানা গেল না সেই হাওড়া দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসে কোন অভিশাপ লেগেছিল? কারণ মাত্র ৫০ মিনিট আগেই ঠিক ওই একই নদীব্রিজ পেরিয়ে অনায়াসে নিরাপদে চলে গিয়েছিল শিয়ালদহ থেকে যাওয়া জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস। তারও ২০ মিনিট পর চলে গিয়েছিল একটি গুডস ট্রেন। অথচ রাজধানী এক্সপ্রেসের ছিল অন্যরকম নিয়তি। সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর রাজধানী এক্সপ্রেসের কাঠামো বদলের প্ল্যান রূপায়িত হত। এল সম্পূর্ণ নতুন এক কোচ। উন্নত আন্তর্জাতিক মানের এলএইচবি। এখন সেই কোচই চলছে। আদরও বদল আসবে। শুধু একটাই ক্ষোভ। ফ্লেক্সি ফেয়ার। এই অদ্ভূত নিয়মের কারণে প্রচুর ভাড়া বেড়ে যাচ্ছে মাঝেমধ্যে। আর সেই কারণেই রাজধানী এক্সপ্রেসের তুলনায় বিমানসফর সস্তা হয়ে যায়। জনপ্রিয়তা কমছে এই ট্রেনের। রেলমন্ত্রকের এটা ভাবা দরকার। ধানবাদ আসছে। বাইরে একটু কুয়াশা। এই ট্রেন যে জনপদগুলিকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় কিন্তু দাঁড়ায় না, সেরকম কয়েকটি জায়গায় প্রত্যেকবারই বেশ যেতে ইচ্ছে করে দূর থেকে দেখলে। মনে পড়ে স্মৃতি। গয়া পেরনোর পরই হঠাৎ জানালার বাইরের ছবিগুলি পালটে যায়। দিগন্তে টিলা আর পাহাড়শ্রেণি। আদিগন্ত উপত্যকার শেষে হঠাৎ দুটি পলাশ গাছ। ওই যে হাইওয়ে মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে সেটি ধরে সোজা গেলেই কোডারমা। পৃথিবীর গভীরতম অভ্রখনি আছে ওখানে। বিস্তৃত শালজঙ্গল মিশে গিয়েছে রজৌলির ঘাটে। ঝাড়খণ্ডের সব জায়গাকেই প্রকৃতি দিয়েছে অপার্থিব সৌন্দর্য। রজৌলির ঘাটের ব্যাসল্ট, কোয়ার্টজাইটের রক শেল্টার কিংবা খাদগুলির গহীন রহস্য আজও হয়তো অনাবিস্কৃত। ওই যে ট্রেন এসে দাঁড়িয়েছে ধানবাদে। ভোরের ধানবাদ স্টেশনের গায়ে এসে মিশেছে পূর্বদিকের বাতাস। সেই বাতাসকে গায়ে মাখতেই যেন রাজধানী এক্সপ্রেসের কিছু যাত্রী সর্বদাই নেমে পড়েন ধানবাদ স্টেশনে। কারণ আর দেরি নেই। আসছে বাংলা। ধানবাদের চায়ের স্টলের পাশে দেখা যাবে বাংলা খবরের কাগজ পড়া ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা নিত্যযাত্রীকে। উত্তপ্ত কড়াইয়ের আঁচ মুখে নিয়ে রাত জাগা ভেন্ডর যুবকটি ভ্যান চালাতে চালাতে ভাঙা বাংলায় বলে উঠবে, পুরি দেব? গরম আছে? রাজধানী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের ঘুমভাঙা চোখে উজ্জ্বলতা। কারণ মাঝখানে আর কোনও স্টপেজ নেই। আসবে আসানসোল! তারপর দুর্গাপুর চলে যাওয়ার পর ব্রেকফাস্ট সার্ভ করা ক্যাটারিং স্টাফ আনন্দকে কোনও যাত্রী বলেন, ভাই... ব্রেডটা একটু টোস্ট করে দেবে? আনন্দ এসব প্রশ্ন শুনে অভ্যস্ত! সে বলবে, ব্রাউন ব্রেড তো দাদা! টোস্ট করা লাগবে না...প্রবলেম নেই! কামরায় কামরায় ফোন আসতে থাকে অপেক্ষায় থাকা স্বজনদের, কিগো... কতদূর তোমরা... লেট নেই তো...। আসছে কলকাতা। দেখা হবে স্তুতি। আসছি আমিও। একটু পরই নামতে হবে। আগামী পয়লা মার্চ ৫০তম জন্মদিন ভারতীয় রেলের চিরকালীন সম্রাটের! হ্যাপি বার্থডে রাজধানী এক্সপ্রেস!
আজ এই পর্যন্তই। ভালো থেকো...
ইতি...
ছবি : তাপস কঁাড়ার ও
সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
সহযোগিতায় : উজ্জ্বল দাস
17th  February, 2019
শতবর্ষে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড

১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল জালিয়ানওয়ালাবাগে একটি প্রতিবাদ সভায় জেনারেল ডায়ার বিনা প্ররোচনায় নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিলেন। এ বছর ওই হত্যাকাণ্ডের ১০০ বছর। সেদিনের ঘটনা স্মরণ করলেন সমৃদ্ধ দত্ত।
বিশদ

14th  April, 2019
প্রথম ভোট
সমৃদ্ধ দত্ত

সকলেই চাইছে লাঙল। ১৯৫১ সালের ১ জুলাই। রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে দেশের প্রথম নির্বাচন কমিশনার সুকুমার সেন মিটিং ডেকেছেন। নির্বাচনী প্রতীক বন্টন করা হবে। প্রতিটি দলকে বলা হয়েছিল আপনারা নিজেদের পছন্দমতো প্রতীক নিয়ে আসবেন সঙ্গে করে। সেটা প্রথমে জমা নেওয়া হবে। তারপর স্থির করা হবে কাকে কোন প্রতীক দেওয়া যায়। কিন্তু, মিটিং শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবল ঝগড়া শুরু হয়ে গেল। কারণ প্রায় সিংহভাগ দলেরই পছন্দ লাঙল। কেন?
বিশদ

07th  April, 2019
সিনেমার রাজনীতি
শাম্ব মণ্ডল

সেদিন পোডিয়ামে উঠেই শ্রোতাদের চমকে দিয়ে একটা ডায়লগ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তিনি: ‘হাও ইজ দ্য জোশ?’ এক মুহূর্ত দেরি না করে শ্রোতাদের মধ্যে থেকে সমস্বরে উত্তর এসেছিল ‘হাই স্যর!’ যিনি ডায়লগটা শ্রোতাদের উদ্দেশে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তিনি আর কেউ নন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ২০ জানুয়ারি মুম্বইয়ে ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ইন্ডিয়ান সিনেমা-র উদ্বোধনে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখেও তখন ‘উরি’র ক্রেজ।
বিশদ

31st  March, 2019
ভোট মানেই তো
স্লোগানের ছড়াছড়ি
কল্যাণ বসু

ভোটের মাঠে হরেক রকমের সুর। স্লোগানে মেলে ছড়ার ছন্দ। গ্রাম-শহরের অলি-গলি ছাপিয়ে রাজপথে মাইকে ভাসে সেই ছন্দময় স্লোগান। চলে স্লোগান নিয়ে শাসক-বিরোধীর আকচা-আকচিও। বহু স্লোগান দাগ কেটে যায় দেশের মাটিতে। বহুকাল টিকে থাকে তার স্মৃতিও। দেশের সৈনিক ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য ১৯৬৫ সালে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর স্লোগান ‘জয় জওয়ান, জয় কিষান’ আজও তো কত ইতিহাসের সাক্ষী। 
বিশদ

31st  March, 2019
স্বাধীন গণতান্ত্রিক ভারতের ভোট
ব্যবস্থার রূপকার সুকুমার সেন
অভিজিৎ দাস

রাস্তাঘাটের দুর্বিষহ দশা। কোথাও আবার রাস্তাই নেই। বিস্তর ঝক্কি পেরিয়ে প্রত্যন্ত গাঁ-গঞ্জ পর্যন্ত পৌঁছনো। দেশের সিংহভাগ জায়গা টেলি যোগাযোগের বাইরে। এখনও বাকি পড়ে রয়েছে বহু কাজ। তার মধ্যেই বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে খসড়া ভোটার তালিকা তৈরি হল। তাতে চোখ বুলিয়ে আঁতকে উঠলেন এক বঙ্গসন্তান।
বিশদ

24th  March, 2019
বদলে যাওয়া
ভোট
রজত চক্রবর্তী

 নির্বাচন গ্রামে-গঞ্জে-মফঃস্বলে আগে উৎসবই ছিল। তোরঙ্গ থেকে পাট ভাঙা শাড়ি পরতেন মা-মাসিরা। সেখান থেকে প্রচারে চলে এল ক্যাপশান, ‘গণতন্ত্রের মহান উৎসব নির্বাচন’। এই প্রচারের উল্টোপিঠে ছিল আরও একটি প্রচার। ‘নির্বাচন কোনও উৎসব নয়, আপনার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানাবার পদ্ধতি’।
বিশদ

24th  March, 2019
লাগল যে দোল
সন্দীপন বিশ্বাস

বসন্তের প্রকৃতিজুড়ে রংয়ের ঝরনাধারা। শিমুলে, পলাশে সে কী শিহরণ! হৃদয়জুড়ে জেগে ওঠে আকুলতা। রাধার হৃদয়েও জাগে তীব্র প্রত্যাশা। তাঁর মন যেন বলে ওঠে, মাধব, তুমি কোথায়! আমার এই শ্যামহীন বিবর্ণতা মুছে দাও তুমি তোমার স্পর্শে। তোমার স্পর্শেই আছে পৃথিবীর অনন্ত রং। সেসব ছড়িয়ে পড়ুক আমার শরীরে, অন্তরে।
বিশদ

17th  March, 2019
পুরাণে ও ইতিহাসে হোলি

আমরা বলি দোল। উত্তর ভারতের লোকেরা বলেন হোলি। এই হোলি শব্দটি এসেছে হোলিকা থেকেই। হোলিকা হল পুরাণের এক চরিত্র। সে ছিল দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপুর বোন। স্বভাবে সে ছিল অত্যন্ত দুষ্টু প্রকৃতির। হিরণ্যকশিপু ছিলেন বিষ্ণুর বিরোধী। তাঁর ছেলে প্রহ্লাদ ছিলেন বিষ্ণুর পরম ভক্ত।  বিশদ

17th  March, 2019
বেলুড় মঠে দোল

ফাগুন সেজে ওঠে পলাশের রংয়ে। শীতের শুষ্কতা এবং গ্রীষ্মের রুক্ষতার মাঝে এ এক নির্মল প্রাকৃতিক আনন্দের সময়কাল। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হয় রং খেলা। অন্যান্য জায়গার মতো বেলুড় মঠেও দোল খেলা হয়। সকলে ফাগের আনন্দে মেতে ওঠেন। কিন্তু সেই মেতে ওঠাটার ভিতরে মিশে থাকে অন্য এক তাৎপর্য।
বিশদ

17th  March, 2019
 ওয়ার রুম

গোটা ভারত উত্তাল। পাকিস্তানকে জবাব দিতে হবে। মুখের মতো। সাউথ ব্লক। ভারত তথা দিল্লির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিং। এটাই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, আর্মি, নেভি, এয়ারফোর্স চিফদের অফিস, ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইসর অজিত দোভালের দপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের চেম্বার। সেকেন্ড ফ্লোর।
বিশদ

10th  March, 2019
অপারেশন বালাকোট
সমৃদ্ধ দত্ত

ডাল লেকের উল্টোদিকের হোটেলের পাশেই সরু রাস্তাটা একটু উপরের দিকে চলে যাচ্ছে। ওটা দিয়ে উঠে দেখা যাবে একজন হাকিমের চেম্বার। সেটারই পিছনে ঘর। কাঠের। মকসুদ যাবে চা আনতে। ছেলেটা অনন্তনাগের। খুবই ভালো। কাশ্মীরিয়াতের আদর্শ একেবারে মনের মধ্যে শিকড়ের মতো প্রোথিত। বিশদ

10th  March, 2019
এবার টার্গেট
মাসুদ আজহার
মৃন্ময় চন্দ

 পড়াশোনার ব্যাপ্তি ক্লাস এইট, লিখে ফেলেছে আটটি বই। সম্পাদনা করে বহুল প্রচারিত একটি ধর্মীয় পত্রিকা। বরাবরই লাদেনের স্নেহ ও আস্থাভাজন। যুদ্ধ করতে গিয়েছে সোমালিয়ায়। মেদবহুল শরীর। গানের গলা ভারী মিষ্টি। সাপের মতই কুটিল-হিংস্র সে। দীর্ঘদিনের সহচরকে হিলহিলে জিঘাংসায় খুন করতে দুবার ভাবে না। ঠিকা নিয়েছে সে, এই বিশ্বকে তারই মত মৌলবাদী মুসলিমের পেলব সুশীতল বাসভূমি করে তুলবে। বিধর্মী কাফের সাফ করে। রেহাই পাবে না এমনকী মুক্তমনা মুসলিমরাও।
বিশদ

03rd  March, 2019
বদলা চাই
প্রীতম দাশগুপ্ত

 জানুয়ারির এক গভীর রাত। নিরাপত্তারক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টর দিয়ে ভারতে অনুপ্রবে শ করল জনা দশেক জঙ্গি। নেতৃত্বে মহম্মদ উমের। সম্পর্কে জয়েশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারের ভাইপো। প্রত্যেক জঙ্গির হাতেই অত্যাধুনিক অস্ত্র। বিস্ফোরক। এই দলের সঙ্গে যোগ দেয় আব্দুল রশিদ গাজি ওরফে কামরান।
বিশদ

24th  February, 2019
ভগবতী ভারতী 
সন্দীপন বিশ্বাস

এক অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের। মনের গভীরে তাঁর অনুরণন তুলেছে রামায়ণ মহাকাব্য। তাকে তিনি নবভাষ্যে উপস্থাপিত করতে চান। তা কি সম্ভব! কিন্তু তাঁকে সেই কাব্যকথা নব জাগরণের আলোকে ভাস্বর করে তুলতেই হবে।  বিশদ

10th  February, 2019
একনজরে
 সুখেন্দু পাল  লাউদোহা, বিএনএ: দেশে প্রকৃত আচ্ছে দিন আনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী করার ডাক দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা অরূপ বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার তিনি পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের লাউদোহার জামগড়া গ্রামে জনসভা করেন। এদিন থেকেই অরূপবাবু পশ্চিম বর্ধমানে ...

নয়াদিল্লি, ১৮ এপ্রিল (পিটিআই): অগুস্তা-ওয়েস্টল্যান্ড চপার কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত মধ্যস্থতাকারী ক্রিশ্চিয়ান মিচেলের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল আদালত। পরিবারের সঙ্গে ইস্টার উৎসব উদযাপন করতে সাতদিনের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করেছিলেন মিচেল।   ...

  সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: বৃহস্পতিবার নির্বিঘ্নে ই ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল মেখলিগঞ্জ মহকুমায়। কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমার দু’টি ব্লক মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে পড়েছে। ...

বিএনএ, কাঁচরাপাড়া: বৃহস্পতিবার ভোরে কাঁচরাপাড়া স্টেশনের কাছে বিবেকানন্দ মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন লেগে মার্কেটের ১৬৭টি দোকান ভস্মীভূত হয়ে যায়। দমকল বাহিনীর উদাসীনতার জন্য আগুন ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৭৯০- মার্কিন বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের মৃত্যু,
১৯৭১- স্বাধীনতা ঘোষণা করল বাংলাদেশ, গঠিত হল অস্থায়ী মুজিবনগর সরকার,
১৯৭২- শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার মুথাইয়া মুরলীধরনের জন্ম,
১৯৭৫- ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের মৃত্যু,
১৯৮৩- এস এল ভি-৩ রকেটের সাহায্যে ভারত মহাকাশে পাঠাল দ্বিতীয় উপগ্রহ ‘রোহিনী’ আর এস ডি-২ 

17th  April, 2019


ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৬৮.৬৯ টাকা ৭০.৩৮ টাকা
পাউন্ড ৮৯.০৬ টাকা ৯২.৩৪ টাকা
ইউরো ৭৭.০৭ টাকা ৮০.০২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩২,০০৫ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩০,৩৬৫ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩০,৮২০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৩৭,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৩৭,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৫ বৈশাখ ১৪২৬, ১৯ এপ্রিল ২০১৯, শুক্রবার, পূর্ণিমা ২৮/৩২ অপঃ ৪/৪২। চিত্রা ৩৫/৩০ রাত্রি ৭/৩০। সূ উ ৫/১৭/৩৬, অ ৫/৫৪/২৪, অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৯ গতে ১০/২০ মধ্যে পুনঃ ১২/৫২ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৩ গতে অস্তাবধি, বারবেলা ৮/২৬ গতে ১১/৩৫ মধ্যে, কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
প্রাচীন পঞ্জিকা: ৫ বৈশাখ ১৪২৬, ১৯ এপ্রিল ২০১৯, শুক্রবার, পূর্ণিমা ২৮/৪৩/৪৯ অপঃ ৪/৪৭/৪৩। চিত্রানক্ষত্র রাত্রি ৩৬/২৭/৩৮ রাত্রি ৭/৫৩/১৪, সূ উ ৫/১৮/১১, অ ৫/৫৫/৩১, অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৮ মধ্যে ও ৭/৪০ গতে ১০/১৬ মধ্যে ও ১২/৫২ গতে ২/৩৪ মধ্যে ও ৪/১৮ গতে ৫/৫৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩০ গতে ৮/৫৮ মধ্যে ও ২/৫৩ গতে ৩/৩৭ মধ্যে, বারবেলা ৮/২৭/৩১ গতে ১০/২/১১ মধ্যে, কালবেলা ১০/২/১১ গতে ১১/৩৬/৫১ মধ্যে, কালরাত্রি ৮/৪৬/১১ গতে ১০/১১/৩১ মধ্যে। 
১৩ শাবান 
এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল 
মেষ: শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম। বৃষ: প্রেমে সফলতা প্রাপ্তি। মিথুন: শ্বশুরবাড়ির সূত্রে ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে
১৮৮২: বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইনের মৃত্যু১৯৫৫: শিকারি ও লেখক জিম ...বিশদ

07:03:20 PM

কেকেআরকে ২১৪ রানের টার্গেট দিল বেঙ্গালুরু  

09:44:38 PM

আইপিএল: বেঙ্গালুরু ১২২/২(১৫ ওভার) 

09:14:28 PM

আইপিএল: বেঙ্গালুরু ৭০/২(১০ ওভার) 

08:53:00 PM

টসে জিতে ফিল্ডিং নিল কেকেআর

07:35:32 PM