সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
চৈত্র মাসের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে দেবী অন্নপূর্ণা পূজিত হন। রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যে শিব ও পার্বতীর সংসার ধর্ম পালন ও দারিদ্র্যের বর্ণনা করা হয়েছে। কাহিনীতে বলা হয়েছে, দেবী পার্বতী দরিদ্র শিবের ঘরনি। তাঁর দুঃখের সীমা পরিসীমা নেই। প্রতিদিনই তিনি দেবাদিদেব মহাদেবের কাছে নিজের অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। তেল ছাড়া তাঁর চুলগুলো রুক্ষ ও মলিন। গায়ে খড়ি উঠেছে। মহাদেবকে পার্বতী দেখান—‘দেখো তোমার সিদ্ধি বেটে বেটে আমার হাতে পড়েছে কড়া। তোমার দুই ছেলে কার্তিক আর গণেশ। গণেশ পেটুক, সে চার হাতে খায় আর কার্তিক ময়ূর নিয়ে খেলে বেড়ায়। অন্নগ্রহণ করে ষড়াননে। কেউ তোমরা সংসারের কথা চিন্তা করো না। এখন সংসার চলে কী করে?’ পার্বতীর কথায় মহাদেব শঙ্কর অপমানিত হয়ে নিজেই ঝোলা কাঁধে বের হন ভিক্ষার দ্বারা অন্নসংস্থানের জন্য। কিন্তু জগতের কোথাও অন্নভিক্ষা জোগাড় করতে না পেরে অবশেষে ফিরে আসেন পার্বতীর কাছে। তখন দেবী পার্বতী শিবকে অন্নদান করে অন্নপূর্ণা নামে খ্যাত হন।
আবার এই যুগের সচল জীবন্ত প্রতিমা শ্রীমা সারদাদেবীকে আমরা সাক্ষাৎ অন্নপূর্ণারূপে মনে করতে পারি। ক্ষুধারূপে দেবী জীবের অন্তরে বাস করছেন। তাই গর্ভধারিণী মা সবসময় তার সন্তানদের খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত। নিজে অক্লান্ত পরিশ্রম করে খাবার জোগাড় করছেন, রান্না করছেন, সন্তানদের নিজের হাতে পরিবেশন করছেন। তারপর সকলের ক্ষুন্নিবৃত্তি করে পড়ে থাকা সামান্য আহার গ্রহণ করে সন্তুষ্ট থাকছেন। সংসারে অন্নপূর্ণারাই পারে এমন আত্মত্যাগ করতে। কাশীপুরে নরেন্দ্র, লাটু, নিরঞ্জন প্রমুখ রামকৃষ্ণের ত্যাগী সন্তানরা সন্ন্যাস গ্রহণ করে ভিক্ষার ঝুলি হাতে সর্বপ্রথম শ্রীমা সারদাদেবীর সম্মুখেই উপস্থিত হন শ্রীরামকৃষ্ণের নির্দেশে। স্বামী বিরজানন্দ লিখেছেন —‘শ্রীমা নানা ব্যঞ্জনাদি নিজ হাতে দু বেলা রাঁধিতে ব্যস্ত থাকিতেন ও বসিয়া খাওয়াইতেন। খাওয়াইবার জন্য পীড়াপীড়ি করিয়া পাতে দেওয়াইতেন। অমন অমৃতের মতো রান্না জীবনে কখনও খাই নাই।’ (উদ্বোধন, মে, ২০১৩) সংসারে অন্নপূর্ণারা আজও আছে, নিঃশব্দে নিঃস্বার্থভাবে সংসারসেবা করেন।