সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
কবে থেকে অভিনয় করার কথা ভাবলেন?
দাদার পৈতের সময় আমার অনেক ছবি তোলা হয়েছিল, সেই ছবি দেখে মায়ের একজন পরিচিতের খুব পছন্দ হয়েছিল। তিনি একটি টিন ম্যাগাজিনে মডেলিং করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তখন আমি সেভেন-এইটে পড়ি। তাই সেটা করা হয়নি। পরে অমিত সেন বলে একজন ডিরেক্টরের একটি অ্যাড ফিল্ম করি। সেটা অম্রুতাঞ্জনের অ্যাড ছিল। এরপর ক্লাস টেনে পড়ার সময় স্টার জলসায় প্রথম ব্রেক পাই।
আপনার প্রথম মেগা সিরিয়াল কী ছিল?
স্টার জলসায় ‘বিধির বিধান’-এ প্যারালাল লিড রোলটি করি।
প্রথম শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
প্রচণ্ড নার্ভাস ছিলাম। কোনদিকে ঘুরতে বলছে, কী বলছে কিছু বুঝতে পারছিলাম না। হাতটা খুব কাঁপছিল, প্রচুর বকুনি খেয়েছি। তারপর আস্তে আস্তে এখন রপ্ত হয়ে গিয়েছে সব কিছু।
এখন কোন সিরিয়ালে অভিনয় করছেন?
এখন কালার্স বাংলার ‘মুখোশের আড়ালে’ মেগা ধারাবাহিকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছি।
চরিত্রটা কতটা উপভোগ করছেন?
ঝিনুকের এখন অস্তিত্বের লড়াই চলছে। ঝিনুকের যেহেতু প্লাস্টিক সার্জারি করে মুখটা পাল্টে গিয়েছে, সেহেতু সে নিজেকে প্রমাণ করতে পারছে না। বেশ থ্রিলিং লাগছে ব্যাপারটা।
যখন অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবলেন, তখন বাড়িতে কোনও প্রবলেম হয়নি?
আমি মাধ্যমিক দিতে দিতে শ্যুট করেছি। তারপর রেজাল্ট বেরনোর পর সবাই বুঝল মেয়েটা অভিনয় করলেও তার সঙ্গে পড়াশুনোটা করছে। সুতরাং আমার অভিনয় করতে কোনও বাধা ছিল না। আর আমার পরিবার আমাকে প্রচণ্ড সাপোর্ট করে।
আপনারা ক’ ভাইবোন?
আমরা দুই ভাইবোন। আমার দাদা আমার থেকে ছ’ বছরের বড়।
পড়াশুনো কোথায় করেছেন?
আমি ভবানীপুর গার্লস থেকে মাধ্যমিক দিয়েছি। এরপর আমি পুরোটাই ডিসট্যান্স কোর্স করছি। এখন ইংলিশ অনার্স নিয়ে ওপেন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনো করছি।
ছোটবেলায় দুষ্টু ছিলেন?
আমি মারাত্মক জেদি ছিলাম।
বিয়ে তো এখন করবেন না, প্রেম করছেন কি?
কিছুদিন হল ব্রেক আপ হয়ে গিয়েছে। এখন আমি হ্যাপিলি সিঙ্গল।
আপনার বাড়িতে কে কে আছেন?
আমার বাড়িতে মা, বাবা, দাদা আর আমি থাকি।
রান্না করতে পারেন?
ম্যাগি বানাতে পারি, চা করতে পারি, মোমো বানাতে পারি, পায়েস বানাতে পারি। কিন্তু মাছ-মাংস বানাতে পারি না। আমার হাতে বানানো মোমো সবাই পছন্দ করে।
এখন তো অনেক রোজগার করছেন, রোজগারের টাকা কীভাবে খরচ করেন?
আমি খুব বুঝেশুনে খরচ করি। নিজের কিছু কিনি, বাবা-মাকে মাঝে মাঝে উপহার দিই। তাছাড়া আমি ভবিষ্যতের জন্য টাকা জমাচ্ছি। বলা তো যায় না, কখন কী হয়!
নিজের টাকায় গাড়ি-বাড়ি করার শখ নেই?
যখন আমি দ্বিরাগমন সিরিয়ালটা করতাম তখনই গাড়ি কিনে নিয়েছি। আর আমার বাড়ি যেহেতু হাওড়া, সেহেতু যাতায়াতের একটু অসুবিধা হয়। সেই জন্য আমি ভেবেছি টালিগঞ্জে একটা ফ্ল্যাট কিনব এবং অবশ্যই সেটাকে সুন্দরভাবে সাজাব।
আপনার অভিনেত্রী হওয়ার পিছনে কার অবদান সবথেকে বেশি বলে তোমার মনে হয়?
আমার গোটা পরিবারেরই প্রচণ্ড অবদান। ওদের সবার জন্যই আজ আমি এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি।
লোকে যখন চিনতে পারে কেমন লাগে? লাইফ স্টাইল কতটা চেঞ্জ হয়েছে?
লোকে চিনতে পারলে খুব ভালো লাগে। আমার থেকে আমার মায়ের বেশি ভালো লাগে। রাস্তায় বেরলে মা’ই বলে ওই দেখ তোকে দেখছে। ছবি তুলতে আসছে। খুব ভালো লাগে। সবাই এসে কথা বলে, জিজ্ঞাসা করে সিরিয়ালে এরপর কী হবে। এইরকম টুকটাক ব্যাপারগুলো ভালোই লাগে। তবে বেশি বদল আমি চাই না। লোকের ভালোবাসা পাচ্ছি, লোকে আশীর্বাদ করছে, এটাই আমার কাছে অনেক।
পশুপাখি ভালোবাসেন?
আমার কুকুরে প্রচণ্ড ভয় আছে। যাকে বলে ফোবিয়া। আমি দূর থেকে ভালোবাসি।
বর্তমান সমাজে মেয়েদের অবস্থান কেমন বলে আপনার মনে হয়?
মেয়েরা এখন অনেকটাই নিজেদের মতো করে বাঁচতে চায় এবং বাঁচছেও। সমাজে তো ভালো মানুষ, খারাপ মানুষ দু’রকমই আছে। একেকজনের ক্ষেেত্র একেকরকম। তাই নিজের এগিয়ে যাওয়াটা নিজের হাতে। আমার মনে হয় নিজে যদি চেষ্টা করি সব কিছুই সম্ভব। মেয়েদের ক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে চলার পথে অনেক বাধা আসে। কিন্তু সেগুলোকে অতিক্রম আমাদেরই করতে হবে।
বর্তমান ধারাবাহিকগুলোতে মেয়েদেরকে বড্ড বেশি কুটিল দেখানো হচ্ছে। সত্যি কি সমাজে মহিলারা এতটাই কুটিল আর জটিল? কী মনে হয় আপনার?
শুধু মহিলা বলে নয়। প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে পজেটিভ-নেগেটিভ থাকে। মানুষ যখন নেগেটিভ কিছু করে, তখন নিশ্চয় তার পিছনে কোনও কারণ থাকে। এটা মহিলা বা পুরুষ বলে আলাদা কিছু হয় না। আসলে টিভিতে সিরিয়াল দেখে প্রধানত মেয়েরা। আর তারা সবসময় সেগুলো নিজেদের সঙ্গে মেলাতে চেষ্টা করে। দর্শকদের কথা মাথায় রেখে গল্প তৈরি হয়। বেশি পজিটিভে টিআরপি কমে যায়। তাই দর্শকদের কথা ভেবে কিছু খারাপ, কিছু ভালো, কিছু প্রেম নিয়ে সিরিয়াল তৈরি হয়। কারণ সমাজে ভালো-খারাপ মিশিয়ে মানুষ থাকে।
ভূতে আর ভগবানে বিশ্বাস করেন?
ভূতে বিশ্বাস করি না। ভগবানে করি। আমি ফিল করেছি ভগবান আছেন। আসলে যখন কিছু চাইলে সেটা পাওয়া যায় তখনই বিশ্বাস বাড়ে। আর অবশ্যই পজিটিভ কিছু তো আছেই।
সিনেমায় অভিনয় করতে চান? স্বপ্নের কোনও চরিত্র আছে যেটা অভিনয় করতে চান?
অবশ্যই ভালো কোনও সিনেমায় অভিনয় করতে চাই। যে কোনও ভালো চরিত্রর মধ্যেই নিজেকে মেলে ধরতে চাই।
পরজন্মে বিশ্বাস করেন?
একদম না। যদি কোনও পাপ করি, তার ফল এই জন্মেই পাব। আবার যদি ভালো করি তার ফলও এই জন্মেই পাব। এটা আমি জানি।
অবসর সময়ে কী করেন?
গান শুনি। সিনেমা দেখি, বন্ধুদের সঙ্গে বের হই, ফ্যামিলিতে সময় কাটাই আর বই পড়ি।
সাক্ষাৎকার: কাকলি পালবিশ্বাস
পাতার ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
জন্ম তারিখ : ১৪ জুলাই, ১৯৯৬
ডাকনাম : ডোনা
রাশি : মিথুন
প্রিয় অভিনেতা : সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শাহরুখ খান
প্রিয় অভিনেত্রী : আলিয়া ভাট, কাজল
প্রিয় সিনেমা : অপুর পাঁচালী, যব উই মেট, কুছকুছ হোতা হ্যায়
প্রিয় গায়ক : অরিজিৎ সিং
প্রিয় গায়িকা : শ্রেয়া ঘোষাল
হবি : গান শোনা
প্রিয় খাবার : বিরিয়ানি
প্রিয় ফল : লিচু
প্রিয় ফুল : জুঁই
স্বপ্ন : নিজে ভালো থাকব, সবাইকে ভালো রাখব আর নিজে যেটা করতে চাই সেটা যেন করতে পারি।
প্রিয় বন্ধু : আমার মা
প্রিয় রং : নীল
প্রথম প্রেম : শাহরুখ খান
স্মরণীয় মুহূর্ত : যেদিন প্রথম চেক হাতে পেয়েছিলাম।
জীবনের সংজ্ঞা : ভালো থাকা।
ভালোবাসার সংজ্ঞা : বিশ্বাস।
নিজের সম্পর্কে মতামত : আমি পুরো পাগল।