সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
যুদ্ধক্ষেত্রে মেয়েদের ভূমিকা ও অংশগ্রহণ নতুন নয় বা অভূতপূর্ব কোনও বিষয় নয়। ইতিহাসে এর অনেক প্রমাণ ও উদাহরণ আছে। ফ্রান্সের বীরাঙ্গনা জোয়ান অব আর্ক ১৪১২ সালে একটি সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্বর্গদূতের বাণী শুনেছিলেন। তিনি যেন রাজকুমার ডফিনকে ফ্রান্সের সিংহাসনে আরোহণে সহায়তা করেন। তিনি স্বর্গদূতের বাণী পালন করেছিলেন। পুরুষদের মতো পোশাক পরে জোয়ান যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হন। ১৪২৯ সালে অর্লিন্সের যুদ্ধে ইংরেজদের পরাজিত করেন।
কিন্তু প্যারিস দখল করে ইংরেজমুক্ত করতে সক্ষম হননি। ১৪৩০ সালে বার্গেনডিয়ানদের হাতে বন্দি হন এবং ইংরেজদের কাছে বিক্রিত হন। অবশেষে জোয়ানকে ডাকিনি ও ধর্মবিরোধী নামে অভিযুক্ত করে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় ১৪৩১ সালে। কিন্তু জোয়ান অব আর্ক আজও স্মরণীয় তাঁর দক্ষতা ও সাহসিকতায়। দাসবংশীয় ইলতুৎমিসের কন্যা রাজিয়া সুলতানা প্রথম মুসলিম মহিলা যিনি দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন, দক্ষতার সঙ্গে রাজ্য শাসন করেন এবং বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১২৩৬-৪০ সাল পর্যন্ত শাসনকালে রাজিয়া ছিলেন এক অপরাজেয় নারীশক্তি ও সাহসের দৃষ্টান্তস্বরূপ। ইতিহাসে আজও তিনি স্মরণীয়। স্মরণীয় ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ (১৮২৮-১৮৫৮) এবং অযোধ্যার রানি, ওয়াজিদ আলি শা-র পত্নী বেগম হজরত মহলও (১৮২০-১৮৭৯)। এঁরা দু’জনেই সিপাহি বিদ্রোহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং ইংরেজদের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে অস্ত্র ধারণ করে যুদ্ধও করেন। আবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যখন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি প্রতিষ্ঠা করে ভারতের স্বাধীনতার জন্য ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন, তখন আইএনএ-এর মহিলাশাখা ‘ঝাঁসিবাহিনী’-র নেতৃত্ব দেন লক্ষ্মী সায়গল (১৯১৪-২০১২)।
এভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে মেয়েরা কখনও সরাসরি, কখনও বা সেনাবাহিনীর সহায়তায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে এসেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রটি যে একচেটিয়া পুরুষদেরই দখলের ও শক্তি প্রদর্শনের স্থান নয়, সেখানে মেয়েরাও কখনও চিত্রাঙ্গদা কখনও বা দশভুজা দুর্গা হিসাবে আবির্ভুত হতে পারেন তা আমরা আজ বাস্তবিকই উপলব্ধি করতে পারছি।