ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
দিল্লির জামা মসজিদ অঞ্চলে করিম’স এক বিখ্যাত নাম। দিল্লি গিয়ে করিম’স-এ খাননি এমন খাদ্যরসিক পাওয়া ভার। এই রেস্তরাঁ এখন কলকাতায়। সম্প্রতি উত্তর কলকাতার হাতিবাগান অঞ্চলে চালু হয়েছে দিল্লি করিম’স-এর শাখা। সেই প্রসঙ্গে কথা হল কলকাতা করিম’স-এর অন্যতম কর্ণধার সৌরদীপ পালের সঙ্গে। সৌরদীপরা চার বন্ধু মিলে দিল্লি করিম’স রেস্তরাঁটি শাখা খুলেছেন কলকাতায়। হঠাৎ এমন উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবলেন কেন? সৌরদীপের কথায়, ‘কলকাতার লোক বরাবরই খাদ্যরসিক। আর মোগলাই আমাদের প্রিয়। তাই দিল্লির করিম’স কলকাতায় আনার কথা প্রথম ভেবেছিলাম। ২০১৯ সালেই রেস্তরাঁটি খোলার কথা ছিল। কিন্তু মহামারীর কারণে গোটা প্ল্যানটাই বদলাতে হয়। তবে দেরিতে হলেও রেস্তরাঁটি যে কলকাতায় খোলা গিয়েছে এতেই আমরা খুশি।’
সৌরদীপ জানালেন যে উত্তর কলকাতার লোকরা মোগলাই বিশেষত ভালোবাসেন। ফলে তাঁদের রেস্তরাঁ রমরম করে চলছে। সপ্তাহান্তে সেখানে প্রচুর ভিড় হয়। আর সপ্তাহের মাঝে ডিনারে রেস্তরাঁ মোটামুটি ভরাই থাকে। অনেকে আবার সোম থেকে শুক্র খাবার ডেলিভারিও নেন। সব মিলিয়ে তাই বিক্রিবাটা ভালোই হয়।
মাটন বিরিয়ানি এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর লোকের চাহিদা মতো তাতে একটু কলকাত্তাইয়া টাচ দিয়েছেন সৌরদীপরা। বিরিয়ানি ছাড়াও খামেরি রুটি এবং নল্লী নিহারী এই রেস্তরাঁর ইউএসপি। খামেরি রুটি তন্দুরিরই রকমভেদ। তবে তার মধ্যেও একটু নতুনত্ব রয়েছে। এছাড়াও শিক কাবাব, শাম্মি কাবাব লোকের খুবই পছন্দ হচ্ছে। আর সবচেয়ে যেটা ভালো ব্যাপার সেটা হল বয়স নির্বিশেষ লোকে করিম’স হাতিবাগানে আসছেন খেতে। ক্রেতাদের চাহিদা, মোগলাই খাবারের জনপ্রিয়তা এবং কলকাতার সূক্ষ্ম ছোঁয়া— সব মিলিয়ে করিম’স এখন উত্তর কলকাতার লোকের কাছে হট ইটিং ডেস্টিনেশন।
মাটন নিহারী
উপকরণ: সামনের রান থেকে নেওয়া মাংস ১ কেজি, ঘি ৪ টেবিল চামচ, মিহি কুচি করে কাটা পেঁয়াজ ২টো, আদাবাটা ১ চা চামচ, রসুনবাটা ১ চা চামচ, নুন স্বাদ মতো, ধনে গুঁড়ো ২ চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো আন্দাজ মতো, ময়দা ৩ টেবিল চামচ।
নিহারী মশলা তৈরি করার জন্য: গোটা জিরে ১ টেবিল চামচ, মৌরি ২ চা চামচ, আদার শুট ১ চা চামচ, ছোট এলাচ ৫-৬টা, বড় এলাচ ২টো, লবঙ্গ ৪-৫টা, তেজপাতা ১টা, দারচিনি ১ ইঞ্চি, গোলমরিচ ৮-১০টা, জায়ফল চা চামচ।
গার্নিশিংয়ের জন্য: সরু ফালি করে কাটা আদা ১ ইঞ্চি, ধনে পাতা অল্প, চাকা করে কাটা লেবুর টুকরো ১টা।
পদ্ধতি: নিহারী মশলা তৈরি করার জন্য: গোটা মশলাগুলো শুকনো খোলায় ভেজে নিন। তারপর তা গুঁড়ো করে নিন। এবার একটা তলা মোটা হাঁড়িতে ঘি গরম করে নিন। তাতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাজুন। লালচে হলে মাংস দিয়ে দিন। এরপর বাকি মশলা একে একে যোগ করুন এবং মাংস কষতে থাকুন। আঁচ যেন খুবই কমানো থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। মাংস বেশ কষানো হলে নিহারী মশলা দিয়ে আরও খানিকক্ষণ কষিয়ে নিন। তারপর অন্য একটা পাত্রে আট কাপ জল গরম করে নিন। জল ফুটে উঠলে তা মাংসে ঢেলে দিন। এবার হাঁড়ির মুখ আটা দিয়ে বন্ধ করে মাংস দমে বসিয়ে রাখুন। অন্তত ৪ ঘণ্টা ঢিমে আঁচে মাংস রান্না করবেন। ইতিমধ্যে একটা পাত্রে আধ কাপ জল দিয়ে তাতে ময়দা গুলে নিন। কোনও ডেলা যেন না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখবেন। চার ঘণ্টা পর মাংসের হাঁড়ির ঢাকা খুলে নিন। তাতে ময়দার গোলা মিশিয়ে একটু নেড়ে নিন। গ্রেভি ঘন হলে নামিয়ে নিন। উপর থেকে আদার ফালি আর ধনেপাতা এবং লেবুর টুকরো সাজিয়ে নরম পরোটা সহযোগে পরিবেশন করুন মাটন নিহারী।
মাটন কোর্মা
উপকরণ: মাংস ১ কেজি, মাঝারি পেঁয়াজ কুচি করে কাটা ২টো, জল ঝরানো টক দই ১ কাপ, আদা-রসুন বাটা ২ চা চামচ, ঘি ৪ টেবিল চামচ, সাদা তেল ৪ টেবিল চামচ, আমন্ড কুচি কাপ, কেওড়া জল ২ ফোঁটা, জল ১ কাপ।
গুঁড়ো মশলা: হলুদ গুঁড়ো চা চামচ, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, গরমমশলা গুঁড়ো চা চামচ, নুন স্বাদ মতো।
গোটা মশলা: দারুচিনির ছোট টুকরো ২টো, গোটা জিরে ১ টেবিল চামচ, বড় এলাচ ২টো, ছোট এলাচ ৩-৪টে, লবঙ্গ ২টো, গোলমরিচ ১ চা চামচ, তেজপাতা ৩টে।
পদ্ধতি: আমন্ড জলে ভিজিয়ে রাখুন। এবার তা বেটে নিন। তারপর পেঁয়াজ কুচি ঘিতে ভেজে নিয়ে বেটে নিন। তারপর আমন্ড বাটার সঙ্গে পেঁয়াজ বাটা মিশিয়ে নিন। এবার তাতে টকদই মিশিয়ে ব্লেন্ডারে একবার ঘুরিয়ে নিন। বেশ ঘন একটা মিশ্রণ তৈরি হবে। এবার একটা তলা মোটা হাঁড়িতে তেল ও ঘি মিশিয়ে গরম করে নিন। তাতে তেজপাতা ফোড়ন দিন। এরপর সব গোটা মশলা একে একে ফোড়ন দিয়ে ঢিমে আঁচে একটু ভাজুন। সুগন্ধ বেরলে মাংস দিয়ে দিন। ঢিমে আঁচে মাংস কষাতে শুরু করুন। এরপর একে একে সব গুঁড়ো মশলাগুলো দিন। প্রতিবার মশলা দেওয়ার পর মাংস নেড়ে নিন। তারপর আদা রসুন বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন। সব শেষে আমন্ডের মিশ্রণটা দিয়ে মাংস কষাতে থাকুন। নুন মেশান। এরপর মাংস ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। খানিক বাদে বাদে ঢাকা খুলে মাংস একবার করে নেড়ে দেবেন। মাংস থেকে জল বেরবে সেই জলেই মাংস সেদ্ধ হতে দেবেন। জল মরে এলে বাড়তি ১কাপ জল গরম করে মাংসে মিশিয়ে দিন। এরপর এই গোটা মিশ্রণটা প্রেশার কুকারে ঢেলে নিন। তারপর ১টা বা ২টো সিটি তুলুন। আঁচ বন্ধ করে প্রেশার কুকার খানিকক্ষণ গ্যাসে বসিয়ে রাখুন। তারপর ঢাকা খুলে দেখে নিন মাংস সেদ্ধ হল কি না। সেদ্ধ হলে ওপর থেকে আমন্ড কুচি ছড়িয়ে লুচি বা পরোটা সহযোগে পরিবেশন করুন।