শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
অপরের গুণকে বড় করে দেখাটাও একটা মস্ত বড় গুণ। সকলকেই বড় করলেই তো নিজেও বড় হয়ে যাবে। কারও কোনও গুণের কথা শুনে অনেকে সেটা কেটে দিয়ে বলে ওঠে—‘ওটা এমন কিছু নয়।’ কিন্তু এটা করা ঠিক না। যার যেটুকু ভাল গুণ দেখবে, সেটাকেই বড় করবে, মর্যাদা দেবে।
যার বিবেক জেগে আছে তার সব ঠিক আছে।
ভালবাসার এমন একটা পর্যায় আছে, যেখানে পৌঁছলে আর কোনও কিছু চাওয়ার থাকে না, কোনও কিছু পাওয়ারও থাকে না। তখন বুকটা সব সময় যেন ভরে থাকে, জগৎটা তুচ্ছ মনে হয়।
নিজের ভেতর থেকে মহামায়াত্বকে সম্পূর্ণ সরাতে হবে। মহামায়া হচ্ছে মোহকরী শক্তি। প্রত্যেকের ভেতর সেটি রয়েছে। যে তার নিজের ভেতরের মহামায়াত্বটিকে বিসর্জন দিতে পেরেছে, সে আর কোন কিছুতেই মুগ্ধ হয় না।
মানুষের ভেতরে দুই-ই আছে, ফুল আর কাঁটা। আমরা ফুলটুকু গ্রহণ করব, কাঁটা যখন পাব তখন কষ্ট কি হবে না? কষ্ট ঠিকই হবে, কিন্তু তাই ব’লে কাঁটার পরিবর্তে কাঁটা দেব না। আমরা সাধু, আমরা ফুলই দিয়ে যাব জগৎকে। যে যা নয়, সে যদি তাই সাজে—তবে সেটা মানাবে না, কিছুতেই মানাবে না। সংসার সব কেড়ে নেয়, চুষে ফেলে দেয়। ভগবানকে দিলে তার চতুর্গুণ আমরা ফিরে পাই। কিন্তু সেটা পাই আমাদের অলক্ষ্যে, তাই বুঝতে পারি না।
সমস্ত অনুদারতার মূল হচ্ছে বাসনা।
তপস্যা করতে করতে যখন অহংকার চলে আসে, তখনই হয় সাধকের পতন। তপস্যা করতে হবে, কারণ দেহবোধকে ভুলতে হবে। কিন্তু সাবধান, অহংকার যেন না আসে। মানুষ এমন কিছু করতে পারে না, যেটা তাঁকে পাবার মতো হতে পারে। সেই অমূল্য রত্নকে কেনবার মতো কোনও ধনই আমাদের নেই। তবু আমাদের এক পা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা দেখে তিনি সাত-পা এগিয়ে এসে কৃপা করেন। কৃপা সবসময় অহেতুক।
হুকুমের সুরে কাউকে কিছু করতে বললে, অহংকার প্রকাশ পায়, তাই সব সময় অনুরোধের সুরে বলবে। চাকরকেও হুকুমের সুরে বলতে নেই। মিষ্টি করে বলবে, —‘‘বাবা, এটা একটু ক’রে দাও তো!’’ সবাইকে সম্মান দিয়ে নম্রভাবে কথা বলবে। দেখবে যেন ক্রোধ না আসে।
যতক্ষণ অহংকার আছে, ডাঙস খেতে হবে।
মানই হচ্ছে ঘরশত্রু বিভীষণ। মন যদি ঠিক থাকে, তা হলে কারও ক্ষমতা নাই কোনও কিছু করে। যদি সত্যই আধ্যাত্মিক পথে এগোতে চাও, তবে মনটাকে উদার করতে হবে। সেবা করতে করতে অনেক সময় অহংকার চলে আসে। মনে সে আকর্ষণ বা টান থাকে না, সেবাটা হয়ে ওঠে দায়সারা গোছের—করতে হবে বলেই করে যাওয়া। আসল উদ্দেশ্যটা ভুল হয়ে যায়। ভালবাসা যে সেবার মূল কথা, সেটাই ভুল হয়ে যায়। আমাদের সমস্ত অশান্তির মূলে হচ্ছে প্রয়োজন। আমাদের প্রয়োজনটা যত বেড়ে যাচ্ছে স্বার্থচিন্তা ততই পেয়ে বসছে, আর তা থেকেই যত অশান্তি। প্রয়োজন কম থাকলে, এত অশান্তি হ’ত না।
ভালবাসা এমন একটা জিনিস যা বুকটাকে ভরিয়ে দেয়। কিছু পাক আর না পাক, ভালবেসেই তার সুখ। নিঃস্বার্থ ভালবাসা নেই বলেই এত অশান্তি।
চাওয়াটা বড় কঠিন ব্যাপার। সামর্থ্যবান দাতার পক্ষে দিয়ে দেওয়াটা কিছু কঠিন নয়, কিন্তু পাওয়ার পর তার ভার বহন করা বড় কঠিন। তার যোগ্য মর্যাদা দেওয়াটাও শক্ত।
প্রতিভা হচ্ছে সত্য-শিব-সুন্দরের প্রকাশ। লেখক, শিল্পী, গায়ক সবাই যদি দিব্য জিনিস পরিবেশন করে, তবেই ঠাকুরের দেওয়া প্রতিভা সার্থক।
যারা ঠাকুরের সবচেয়ে প্রিয়, সবচেয়ে আপন, তাদের ওপরই তো ঠাকুরের একটা বিশেষ right আছে, দাবী আছে, অধিকার আছে। তাই সব আঘাতের বোঝা তাদের ওপর নিঃসঙ্কোচে চাপিয়ে দেন।