শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
ক) আমাদের নিজেদের মুক্তির জন্য
খ) আমার আশে-পাশের মঙ্গলের জন্য
গ) সারা বিশ্বের মঙ্গলের জন্য
সবটাই মায়া, এই শরীরটাও মায়া। আমি যে এই দেহটার জন্য চিন্তা করছি, সেটাও মায়া।
যতক্ষণ শরীরের সাথে সেই পরমের সম্বন্ধ রয়েছে ততক্ষণ এই শরীরটাকে মানুষ ভালবাসে, কিন্তু যখন এই দেহের সাথে সেই পরমের সম্বন্ধ থাকে না, তখন সেটা মৃত হয়ে যায়।
আমাদের মন ঠিক নয় তাই আমরা লোকের দোষ ধরি। আমার মন দিয়ে আমি অন্যর দোষ কেন ধরব? আমার মন দিয়ে আমি শুধু আমার দোষ ধরব।
আমরা দেখি—ও খারাপ কাজ করছে, আর যে বসে খারাপ চিন্তা করছে সে তার থেকে আরও বেশি বাজে কাজ করছে।
অন্যের অমঙ্গল চিন্তা করা সব থেকে বাজে কাজ। চিন্তাই যদি করতে হয় তো ভগবানের চিন্তা করো।
সহ্যশক্তি বাড়াও। সময়কে বয়ে যেতে দাও, সময়ই সবচেয়ে বড় ওষুধ। ভগবানকে ডাকছ বলে তোমার দুঃখ আসবে না, তা নয়, তবে তোমার শক্তি বেড়ে যাবে সহ্য করার।
তোমার কর্ম ও ভোগ শেষ না হলে বৈরাগ্য কখনও আসবে না। আর বৈরাগ্য না এলে ঈশ্বরের প্রতি ব্যাকুলতাও বাড়বে না। ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্য ব্যাকুলতা চাই। আধ্যাত্মিকতায় গোঁড়ামি চলে না। শিব আর রামের যুদ্ধ শেষ হয়ে গেল কিন্তু রামের ভক্ত বানর আর শিবের ভক্ত ভূতের লড়াই চলতেই থাকল। ভক্তদের মধ্যে গোঁড়ামি থাকে। নির্বিষয় হওয়া মানে বিষয় ত্যাগ করা নয়, মনে বিষয় না থাকা, মনে শুধু ঈশ্বর থাকা। সত্যের সামনাসামনি দাঁড়ানোটাই সমস্যার সমাধান, এটা বেদান্ত শেখায়।
কে সহ্য করে? তুমি? তোমার কি ক্ষমতা আছে সহ্য করার? তোমাকে সহ্য করানো হয়, সহ্য করার শক্তি দিয়ে তোমাকে পাঠানো হয়, তাই তুমি সহ্য করো। ধর্ম হচ্ছে জীবন, যা আমার জীবনকে ধারণ করে থাকে, যা আমার জীবনকে সুন্দর করে। যা আমাকে সুন্দর করে না, যা আমাকে তৃপ্তি দেয় না, তা ধর্ম নয়। তুমি যদি মনযোগ দিয়ে কাজ করো, যে কোনও কাজই তোমার ভাল লাগবে। এমনকি পড়াশোনা করার সময় যদি মন দিয়ে পড়া যায়, পড়তে ভাল লাগবে। আমাদের যে বুদ্ধি, সে বুদ্ধি আমাদের প্রতি মুর্হূতে ঠকাচ্ছে, প্রতারণা করছে, তুবও কিন্তু আমি আমার বুদ্ধিকেই আঁকড়ে ধরে বসে আছি। আমরা ঠাকুরের কাছে এসে সমর্পণ করি—ঠাকুর তুমি আমার সবকিছু গ্রহণ করো, আমি সমর্পণ করলাম। তারপরই আমি বিড়বিড় করে ঠাকুরের সামনে একের পর এক চেয়ে চলি। ঈশ্বর চুক্তি করেন না।
আমরা মন্দিরের পুরোহিত অবধি বুঝি কিন্তু মন্দিরের যিনি আসল নাথ, তাঁকে বুঝি না। তাঁকে বোঝার জন্য কোনও মন্দিরে যাওয়ার দরকার নেই।
আগে যখন সোয়েটার বোনা হত, তখন দেখতাম চব্বিশ ঘণ্টা বুনছে না। কাজ করে ফাঁকা হল, তখনই বসে একটু বুনেছ কয়েকটা ঘর। এই করতে করতে দেখা যায় একদিন সোয়েটার তৈরি হয়ে যায়। তেমনি ঈশ্বরের পথ, একটু একটু করে একদিন তাঁকে পেয়ে যাবে। সংসারটা ভাল জায়গা নয়। কিছুদিন ভাল লাগে, কিন্তু সবসময় ভাল লাগে না। তাই ‘মন চলো নিজ নিকেতনে।’ ঈশ্বরের কাছে চলো। চুটিয়ে সংসার করতে চেও না। যত বেশি চুটিয়ে সংসার করতে চাইবে, তত বেশি জ্বালা-যন্ত্রণা ভোগ করবে। নির্লিপ্ত হয়ে সংসার করো, হাতে তেল মেখে কাঁঠাল ভাঙো।
ছোট জীবন, জীবনের কোনও স্থিরতা নেই। এই ঠিক আছি, এই বেঠিক। এই সুস্থ আছ এই অসুস্থ। সুতরাং যতটুকু পারা যায় তাঁকে ডেকে নাও।
ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির ‘ভগবানের নানা কথা’ থেকে