ছোট্ট অমৃতার ধারণা ছিল সংবাদপত্রেই পরিচালকরা সর্বপ্রথম ঘোষণা করেন তাঁদের আসন্ন ছবির নায়ক-নায়িকা সহ অন্যন্য অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম। সেটা পড়েই শিল্পীরা জানতে পারেন তিনি কার ছবিতে কোন ভূমিকায় অভিনয় করছেন। সমাজতত্ত্বের ছাত্রী, সঙ্গে সাংবাদিকতার পাঠ নেওয়া অমৃতা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর কাছ থেকে ‘আনোয়ার কা আজব কিসসা’য় অভিনয়ের অফারটা আসে ফোনে, সরাসরি। ততদিনে অবশ্য বালিকাসুলভ ধারণাটা বদলে গিয়েছে তাঁর। ছোটবেলা থেকেই চেয়েছিলেন অভিনয়টা করবেন মন দিয়ে। মনোযোগটা বেড়ে গেল প্রথমেই বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিচালকের ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়ে। তারপর থেকে চার বছরের অভিনয়ের কেরিয়ার এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন ধীরে কিন্তু অবিচল লক্ষ্যে। ঝুলিতে পুরে ফেলেছেন ‘অন্য বসন্ত’, ‘থ্রি স্মোকিং ব্যারেলস’, ‘লর্ড অব দ্য ওশান’-এর মতো সমালোচক এবং দর্শক প্রশংসিত ছবি। এবার ‘আহা রে’। এই প্রথম কাজ করলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে। ছবিতে অমৃতার চরিত্রে নাম ‘সাহিদা’। বাংলাদেশের ফ্যাশন ডিজাইনার। খুব স্বাধীনচেতা, উচ্চাকাঙ্খী এক মেয়ে। স্বাভাবিকভাবেই সে চায় তার পেশার সাফল্য। সহ-অভিনেতা বাংলাদেশের হার্টথ্রব আরফিন শুভ। আরফিনের চরিত্রটির নাম রাজা। সাহিদা রাজার প্রেমিকা। ‘আরফিন খুব সহজ, সরল, মজাদার মানুষ’, বলছেন অমৃতা। ঋতুপর্ণার সঙ্গে একসঙ্গে ‘শট’ না থাকলেও ‘ঋতুদি মাল্টিটাস্কার। অনায়াসে একাধিক কাজ করতে পারে। খুব কাছ থেকে দেখে অনেক কিছু শিখলাম,’ অমৃতার গলায় মুগ্ধতা। ‘আহা রে’ অমৃতার কেরিয়ারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছবি হতে চলেছে কারণ, ঋতুপর্ণার হোম প্রোডাকশনের ছবি আর পরিচালক হিসেবে রঞ্জন ঘোষকে ভীষণই পছন্দের অভিনেত্রীর। যদিও ঋতুপর্ণার মতো রঞ্জনের সঙ্গেও এটাই তাঁর প্রথম কাজ। চরিত্রটার গুরুত্বও অমৃতাকে এই ছবি সই করতে উৎসাহ দিয়েছে। ‘আহা রে’র প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রিলিজ করছে হইচই-এর ওয়েব সিরিজ ‘বউ কেন সাইকো’। এছাড়াও অমৃতার অভিনীত ছবির মধ্যে মুক্তির প্রতীক্ষায় রাজা ঘোষের ‘চাবিওয়ালা’, অভয় দেওলের সঙ্গে ‘জে এল ফিফটিন’। এছাড়াও মার্চ মাস থেকে আরও কিছু ছবির কাজ শুরু হচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম শৈবাল মিত্রর ‘দেবতার গ্রাস’। যেখানে অভিনয় করছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং নাসিরুদ্দিন শাহ। সেই ছবিতে অমৃতার চরিত্রটির নাম রোশনি। শ্যুটিং শুরু হবে খুব শীঘ্রই। অমৃতা মুখিয়ে আছেন এই দুই মহীরুহর সঙ্গে কাজ করার জন্য। গান অমৃতার সহচরী। ‘আহা রে’তে নিজের গলায় একটি গানও গেয়েছেন তিনি। টেলিভিশনে ছোট সিরিজ হলে অভিনয় করতে আপত্তি নেই, তবে মেগার মোহে বাঁধা পড়তে নারাজ তিনি । আপাতত ‘আহা রে’র সাহিদাকে দুই বাংলার মানুষ আপন করে নিলেই অভীষ্ট পূরণের পথে বড় পদক্ষেপ হবে বলেই বিশ্বাস অমৃতার।