বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
আমাদের মা সরস্বতী, লক্ষ্মী, দুর্গা, কালী ইত্যাদি সব।
শ্রীশ্রীঠাকুর ছিলেন প্রথম শ্রুতিধর, একবার পড়লে বা শুনলেনই মনে থাকত। স্বামিজী ছিলেন দ্বিতীয় শ্রুতিধর।
মানুষ যেমন একতাল মাটি নিয়ে যা ইচ্ছে তাই গড়তে পারে, ঠাকুরও মানুষের মন নিয়ে যেমন ইচ্ছা, তেমন করে দিতে পারতেন।
শ্রীশ্রীঠাকুর তোমার সকল কথা ও মনের সকল ভাব শুনছেন ও জানতে পাচ্ছেন। ব্যাকুল হয়ে তাঁর কাছে যা-ই চাইবে, তা-ই পাবে। তিনি অন্তর্যামী, ভক্তের ব্যাকুল প্রার্থনা তিনি অবশ্য শুনবেন।
সকলই শ্রীশ্রীমার ইচ্ছায় হচ্ছে জেনে কায়মনোবাক্যে তাঁর শরণাপন্ন হয়ে পড়ে থাকার চেয়ে শান্তি আর কিছুতেই নেই।
যখন একথা মনে স্থির আছে যে আমরা সকলে এক পরিবারভুক্ত, শ্রীশ্রীঠাকুর ও শ্রীশ্রীমার পরিবার, তখন ভাবনার কোন কারণ নেই। তাঁদেরই ইহকাল ও পরকালের একমাত্র আপনার বলে জানবে, তা হলেই ধ্যাণ ধারণার সার ফল লাভ হবে। সকল বিষয়ে তাঁদেরই ওপর নির্ভর করে নিশ্চিন্ত ও প্রফুল্ল থাকতে চেষ্টা করবে।
শ্রীশ্রীঠাকুর ও মা চিরকাল ও নিত্য আছেন এবং থাকবেন। তাঁদের ওপর নির্ভর করে থাকতে পারলেই শান্তি ও আনন্দ পাবে। আত্মসমর্পণই শ্রেষ্ঠ পূজা। স্বামিজী না বুঝলে আমরা ঠাকুরকে কিছুই বুঝতাম না। স্বামিজীর ব্যাখ্যা ছেড়ে যিনি ঠাকুরকে বুঝতে যাবেন, তিনি ঠাকুরের ভাব ঠিক ঠিক ধরতে পারবেন না। তাঁর সঙ্গে আমাদের তুলনাই হয় না। মহারাজ (স্বামী ব্রহ্মানন্দ) নিজেই আনন্দময় পুরুষ। মহারাজের মধ্যেই ঠাকুর ও মা রয়েছেন। মহারাজের সেবা ঠাকুর ও মার সেবা বলে বিশ্বাস করবে।
বাবুরাম মহারাজের কথা যত বেশী চিন্তা করবে, তত বেশী তোমাদের কল্যাণ হবে। চৈতন্য প্রকাশাত্মক, জ্যোতিও প্রকাশাত্মক, তাই ভাববার সুবিধার জন্যে চৈতন্যকে জ্যোতির্ময় চিন্তা করা হয়। ঠাকুরকে সর্বব্যাপী চৈতন্যরূপে চিন্তা করবে। ইষ্টের সাকার মূর্তি ধ্যান ভাল না লাগে তো, তাঁকে নিরাকার সর্বব্যাপী বায়ুর ন্যায় বা আকাশের ন্যায় চিন্তা করবে, আর তুমি যেন তাঁতে ডুবে আছ, তোমার ভেতরে বাইরে তিনি, এইরূপ মনে করেন।
ধ্যান-জপ করার যে ইচ্ছা, এ-ও তাঁর ইচ্ছা বা কৃপা। নির্ভরতাও চাই, পুরুষকারও চাই। যখন মূর্তি ভাল না লাগবে, তখন সহস্রারে পরমাত্মারূপী ঠাকুরকে নিরাকারভাবে ধ্যান করবে। ইষ্টমূর্তির পরিবর্তে গুরুমূর্তির ধ্যান যদি ভাল লাগে, তখন গুরুর মূর্তিই ধ্যান করবে। ইষ্ট গুরুর ভেতর দিয়ে প্রকাশিত হয়েছেন। বর্ষাকাল সাধনার উপযুক্ত কাল নয়, তখন ধ্যান করতে বসলেই ঘুম আসে। মনের চাঞ্চল্য সেই সময় বাড়ে। শীতকাল ধ্যানের উপযুক্ত সময়। ধ্যান যারা করবে, তাদের পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া আবশ্যক। ঘি, মাখন ইত্যাদি খাওয়া ভাল। অভ্যাসের ফলে জপধ্যান ভাল লাগে।
সহস্রারে ঠাকুর কেন্দ্রস্থলে বসে, আর শিষ্যরা ঘিরে বসে আছেন—এভাবে ধ্যান করবে। মনকে ভগবানের ধ্যানে সম্পূর্ণভাবে একাগ্র করাকেই মনোনাশ বলে। সম্পূর্ণরূপে ভগবানে নির্ভরতাই আত্মনির্ভরতা। গুরু শক্তি, যিনি আশ্রয় দিয়েছেন, তিনি কোনকালে রুষ্ট হন না। গুরু, ইষ্ট এবং নিজেকে এক বলে জানবে। ইষ্ট ও জীবাত্মা একই জ্যোতির দুই মূর্তি। গুরু ও ইষ্ট সহস্রারস্থিত পরম শিবের প্রকাশ। পরমাত্মা যখন ‘আমি ইন্দ্রিয় ও মনবিশিষ্ট’—এইরূপ অনুভব করেন, তখন তিনি জীবভাব প্রাপ্ত হন এবং সংসারের সুখ-দুঃখ ভোগ করেন। জীবাত্মার অবস্থান হৃদয়ে—অনাহত পদ্মে। অন্তঃকরণের অবস্থান ভ্রূ-মধ্য হতে নাভি পর্যন্ত। বুদ্ধির অবস্থান মস্তকে, মনের কণ্ঠে, অহঙ্কারের হৃদয়ে এবং চিত্তের নাভিতে। চতুর্থ ও পঞ্চম ভূমিচক্র হতে যেসব দেবদেবীর দর্শন হয় তাকে সাবিকল্প সমাধি বলে।