বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
পরমাণু-আকাশ বলতে আমরা দুটি ব্যাপার একই সঙ্গে বুঝি। পরমাণু (atom)-র ভিতরের পূর্বোক্ত আকাশ বা শূন্যতা। আবার, মহাকাশের শূন্যতা বলে যা আমরা দেখি, মনে করি বা অনুভব করি, তা আসলে শূন্য নয়, অতিপরমাণুকণাসমূহের (Sub-atomic particles) দ্বারা পূর্ণ অর্থাৎ মহাকাশ হল অতি পরমাণুময়। (মনে করা হয়, প্রতি একক আয়তনে একটি করে হাইড্রোজেন পরমাণু আছে)। এই দ্বিতীয় ব্যাপারটির নাম হল কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম (Quantam-Vaccuum)। নামেই বা আপাতভাবেই এটি Vacuum বা শূন্য, কিন্তু আসলে পূর্ণ; তাই একে false vaccuumও বলে। বস্তুত কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম হল অসংখ্য প্রসুপ্ত (Virtual) অতি-পরমাণুকণার মহাসমুদ্র যেখানে তাপমাত্রা ২.৭ ডিগ্রি কেলভিন, যেখানে অতিপরমাণুকণা সমূহ এক অতি জটিল আন্তঃক্রিয়ায় রত। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী Tony Hey-র ভাষায়, ‘Instead of a place where nothing happens, the "empty" box [the quantum vacuum] should now be regarded as a bubbling "soup" of virtual particle/ anti-particle pairs'.—বিজ্ঞানীরা এই কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়ামের এক বিশেষ অতিশক্তিময় শূন্যবৎ অবস্থা থেকেই মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে এই বিশ্বজগতের আদি উদ্ভব। এভাবে বলা যায়, মহাকাশ বা মহাবিশ্বের যা কিছু শক্তি, তা অন্তিম বিশ্লেষণে এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অতিপরমাণুকণাসমূহেরই বিবিধ প্রকাশ মাত্র।
কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়ামই হল সেই মূল বাস্তব সর্বাধার যার অভিব্যক্তি হল এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবকিছু। আমেরিকান বিজ্ঞানী ডেভিড ফিন্কেলস্টেন বলেন, শূন্যতার সাধারণ তত্ত্বই হল এভাবে সবকিছুরই তত্ত্ব (a general theory of the vacuum is thus a theory of everything)। এই পরমাণু-আকাশই হল জড়ঢাকের চামড়ার পর্দার মতন যার কম্পনের মধ্যে দিয়েই আমাদের দেহ মন প্রাণ চেতনা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুরই উদ্ভব। এই আকাশ শুধু জড় নয়, চেতনও বটে। ইনিই চৈতন্য ইনিই ব্রহ্ম। আমেরিকান বিজ্ঞানী-লেখিকা শ্রীমতী ডানা জোহার (Donah Zohar) মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করেছেন, আধুনিক পদার্থবিদ্যার নিয়ম মেনে এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যদি কোনও ঈশ্বরকে খুঁজতে হয়, তবে এই মূল আকাশসত্তা বা সুসমঞ্জস পরমাণু-আকাশ quantum vaccum-এর মধ্যেই তাঁকে প্রথমে খুঁজে পেতে হবে।