বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
নৃহিংহং ভীষণং ভদ্রং মৃত্যোর্মৃত্যুং নমাম্যহম্।।’’
‘যদ্ যদাচরিত শ্রেষ্ঠস্তত্তদেবেতরো জনঃ।
স যৎ যৎ প্রমাণং কুরুতে লোকস্তদনুবর্ত্ততে।।’
মহান গুরু, পরমপুরুষ যেমন ভাবে চলেন বাকীরা সেই পথে চলবে। গল্প আছে, ইংল্যান্ডের রাণী এলিজাবেথ একবার ফ্রান্সে না কোথায় যেন গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর পা জখম হয়ে গিয়েছিল। তা, সেখান থেকে যখন বিলেতে এলেন, তখন একটু খুঁড়িয়ে চলতেন আর তিন-চার দিন পরে দেখা গেল, যত বড় ঘরের মহিলা ইংল্যান্ডে আছে সব খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ওরা ভেবেছিল যে আমাদের রাণী বুঝি ওই ফ্রান্স থেকে নোতুন স্টাইল শিখে এসেছে। তারপর রাণীর পা ঠিক হয়ে গেল, আর খুঁড়িয়ে চলছে না, তখন ওখানকার বড় ঘরের মেয়েরাও খুঁড়িয়ে চলা ছেড়ে দিল, ভাবল— স্টাইলটা এার শেষ হয়ে গেছে। তা, বড়রা যা করে বাকীরা তা অনুসরণ করে। সুতরাং পরমপুরুষ যেমন যেমন ভাবে চলবেন মানুষ সেই চলাটাকেই আদর্শ জীবন বলে মনে করবে।
পরমপুরুষ হচ্ছেন কী? না, ‘উদগ্র’, ‘উগ্র’ অর্থাৎ তিনি উগ্র ও প্রতিটি মানুষকে তাই নিজের আদর্শের ব্যাপারে উগ্রই হতে হবে, তা না হলে সে খাঁটি মানুষ হতে পারবে না আর লোকেও জানবে, ওর এই ব্যাপারে দুর্বলতা রয়েছে। ওর যখন দুর্বলতা রয়েছে তখনও খাঁটি মানুষ নয়। আমার একজন খুব পরিচিত লোক আছেন, মানে আত্মীয়ই বলতে পার। তিনি আনন্দমার্গী নন— মূর্তিপূজক। তিনি স্নান করবার পরে অনেক দেবী-দেবতাকে প্রণাম করতেন। একবার বললেন, ‘জয় মা কালীঘাটের কালী’, বলেই তাঁর মনে হল যে ঠনঠনের কালীকে প্রণাম করলুম না তো। হ্যাঁ, ‘জয় মা ঠনঠনের কালী’, ‘জয় মা দক্ষিণেশ্বরের কালী’। যার নাম মনে পড়ত প্রণাম করে দিতেন, পাছে সে অসন্তুষ্ট হয়। কাকে ছেড়ে কাকে ধরি? ‘জয় বাবা তারকেশ্বরের তারকনাথ’, ‘জয় বাবা দেওঘরের বদ্যিনাথ’। তা এমনটি করলে চলবে না, নিজের পথে চলবে। আমি এক-কেই জানি, অনেককে জানি না। হনুমানকে জিজ্ঞেস করা হ’ল— হনুমান, তুমি তো জানই যে নারায়ণও যা, রামও তা। ‘রাম’ শব্দের মানেই নারায়ণ। রমন্তে যোগিনঃ যস্মিন্ সঃ রামঃ। সুতরাং রামও যা নারায়ণও তা। নারায়ণ= নার+অয়ন। ‘অয়ন’ মানে আশ্রয়, ‘নার’ মানে প্রকৃতি। যিনি প্রকৃতির আশ্রয় তিনি নারায়ণ। তা একই তো। তুমি এত বড় ভক্ত কিন্তু তুমি কেবল রামের নাম করছ আর নারায়ণের নাম একবারও নিচ্ছ না কেন? তার জবাবে হনুমান কী বলেছিলেন?
‘‘শ্রীনাথে জানকীনাথে চাভেদঃ পরমাত্মনি।
তথাপি মম সর্বস্বঃ রামঃ কমললোচনঃ।।’’