খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
২০০৩-এ এমনই এক ভাইরাস ‘সার্স’ আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। ২৬টি দেশে ছড়ায় এই রোগ, মারা যান ১০ শতাংশ রোগী। ২০০৯-এ এল সোয়াইন ফ্লু। আক্রান্ত ৫৭ মিলিয়ন (৫.৭ কোটি), মৃত ৪.৫ শতাংশ। ২০১৪-র বহু আলোচিত ভাইরাস ইবোলা-য় আক্রান্ত হন ১১,৩১০ জন মানুষ, মৃতের হার ২৫ শতাংশ। এবার ২০২০, করোনা-য় এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর হার স্রেফ ৩ শতাংশ। তাছাড়া করোনা ভাইরাস হাওয়ার মাধ্যমে ছড়ায় না, ছড়ায় কোনও সংক্রামিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে যেসব ক্ষুদ্রাকার ফোঁটা নির্গত হয়, তা থেকে। আপনি নিজের মুখ, চোখ বা নাকে হাত দেবার আগে যদি কোনও সংক্রামিত স্থান স্পর্শ করে থাকেন, তাহলে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে। ওই ফোঁটাগুলি শুকিয়ে গিয়েছে মানেই ভাইরাস আর কার্যক্ষম নেই, এমনটা কিন্তু নয়। ফলে সংক্রমণ আটকাতে সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার কথা বলা হচ্ছে। কারণ, প্রায় সব ভাইরাসই তৈরি হয় প্রোটিন, আরএনএ ও লিপিড দিয়ে। ভাইরাসের শরীরে প্রোটিন অতি গুরুত্বপূর্ণ, যা তার নিজের শরীরের প্রতিলিপি তৈরিতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, লিপিড ভাইরাসের বাইরে আস্তরণ তৈরি করে। কোনও শরীরের কোষে প্রবেশের সময়ে বা ছড়িয়ে পড়বার সময়ে এই আস্তরণ ভাইরাসকে সুরক্ষাকবচ দেয়। আরএনএ, প্রোটিন ও লিপিডের যোগে ভাইরাস তৈরি হয়। এই কাঠামো সাধারণভাবে ভাঙা কঠিন। কিন্তু জল ও সাবানের ব্যবহারে এই ভাইরাস ভেঙে পড়ে, ফলে তা ত্বক থেকে মুক্ত হয়ে গিয়ে ধুয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসের জন্য ত্বক হল একেবারে আদর্শ জায়গা। ত্বক যেহেতু অপেক্ষাকৃত অমসৃণ তল, যাতে বহু কোণ ও খাঁজ রয়েছে, সে কারণে ওই তল থেকে ভাইরাস বিমুক্ত করতে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে ধোয়া জরুরি। আর জীবাণু দূর করতে সব সাবানই সমান কার্যকর, যার অর্থ হল সাধারণ সাবান ও বিজ্ঞাপনে দেখানো অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল সাবানের মধ্যে তেমন কোনও তফাত নেই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সর্বত্র বারবার বলছেন, আতঙ্কের কিছু নেই। তবে, সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে নিশ্চয়ই।
আমাদের দেশে এই মুহূর্তে যে হাওয়া চলছে, তাতে গোমূত্রকে সর্বরোগহর বলে বর্ণনা করছেন একদল বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষ। অসমের বিজেপি বিধায়ক সুমন হরিপ্রিয়া জানিয়েছেন, গোমূত্র এবং গোবরেই করোনা-মহামারী দূর করা যাবে। তবে সেই সঙ্গে একটা যজ্ঞেরও প্রয়োজন রয়েছে। এক বিশেষ সংগঠনের কর্তা বলেছেন, টি-পার্টির মতো ‘গোমূত্র পার্টি’-র আয়োজন করে করোনার সংক্রমণ রোখা যেতে পারে। এসব নিয়েই গুজবে গুজবে ছয়লাপ নেট-ভুবন। এরই মধ্যে কারা যেন রটিয়েছে পাঁঠার মাংসে করোনা! সেটা লিখে আবার তলায় পোস্ট দিয়েছে, যত পারেন এটা ছড়িয়ে দিন, মাংস ২০০ টাকা কিলো হল বলে। ইতিমধ্যে চিকেনের দামে ধস। কারও পৌষমাস, কারও সর্বনাশ! এই আতঙ্কের মধ্যেই একদল অসাধু ব্যবসায়ী বিপুল কামানোর স্বপ্নে দিন গুনছে। মাস্কের কালোবাজারি শুরু হয়ে গিয়েছে। স্যানিটাইজার বিক্রি হচ্ছে হু হু করে। রেকর্ড বিক্রি। কে না জানে, পরিস্থিতি বুঝে দাবার চাল ফেলা রাজনীতির অতি প্রাচীন খেলা। কেউ না কেউ তো চাইছেই, করোনা নিয়ে আতঙ্কে থাকা মানুষ তাঁদের আশপাশের বাকি সমস্যাগুলি কিছুদিনের জন্য তো ভুলে থাকুন।