খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, দেশ নাকি বদলাচ্ছে। এটা নতুন ভারত। আজ, রবিবার নারীজাতির উদ্দেশে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট উৎসর্গ করেছেন। কারণ, এদিন তিনি নারীশক্তিরই বিজয়গাথায় ভরিয়ে দেবেন ট্যুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট। অথচ, তাঁরই দেশে নির্ভয়ার খুনিদের ফাঁসির সাজা কার্যকর করতে দেরি হয়। উন্নাওয়ের নির্যাতিতাকে রাস্তার মাঝে গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করা হয়। হায়দরাবাদের উপকণ্ঠে যুবতীকে গণধর্ষণ করে জীবন্ত অবস্থায় তার গায়ে আগুন ধরিয়ে খুন করা হয়। এই কি নতুন ভারত? বদলে যাওয়া ভারত? যেখানে প্রায় প্রতি ঘরে সমঝোতা করতে হয় বাড়ির বউকে... কেন তাঁর অফিস থেকে ফিরতে দেরি হবে? কেন সে রান্নাঘর সামলাবে না? কেন সে সব ব্যাপারে মতামত দেবে? এমন বহু প্রশ্নের উত্তর এই ‘নতুন ভারতে’ও দিতে হয় নারী সমাজকে।
অথচ, এই দেশের সবচেয়ে প্রতাপশালী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন একজন মহিলা... ইন্দিরা গান্ধী। যিনি পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করে দু’ভাগ করে দিয়েছিলেন দেশটাকে। যাঁর জন্য জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ। আর তাঁরই জমানায় দেশে জারি হয়েছিল জরুরি অবস্থা। আবার আজ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এক মহিলা... মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছিলেন, বাংলায় গণতন্ত্র আছে। তারপরও এদেশে নির্ভয়া কাণ্ড হয়... কামদুনির ঘটনা ঘটে। নারী সশক্তিকরণের কথা বলি আমরা। অথচ, তাঁদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে ভয় পাই। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ আতঙ্কে থাকে, আমাদের কর্তৃত্ব খর্ব হয়ে যাবে না তো? বাসে ‘লেডিজ’ সিট রাখার কথা বলি... তারপর সে নিয়েই নাক সিঁটকে থাকি।
ভারত বদলেছে। বাইরে থেকে। অন্তর থেকে ততটা নয়! আমরা অনেকেই আসলে হিপোক্রিট। দ্বিচারী। মুখে এক কথা বলি... কাজে করি আর এক। তাই এই পরিস্থিতিতে কোনও একটা নির্দিষ্ট দিনকে নারী সমাজের জন্য উৎসর্গ করার থেকে বেশি প্রহসন আর কিছু হতে পারে না। ঝেড়ে ফেলতে হবে এই মানসিকতা। যে সম্মান তাঁদের প্রাপ্য, দিতে হবে সেটাই। কুর্নিশ করতে হবে তাঁদের লড়াইকে। মান্যতা দিতে হবে মতামতকে। তাঁরা যদি ‘না’ বলেন, তারও যেন গুরুত্ব থাকে। শুধুমাত্র তখনই মা, বোন, স্ত্রীয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে আমরা বলতে পারব, ‘শুভ আন্তর্জাতিক নারী দিবস’।