উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
একটা সময় ছিল, যখন বিএসএনএলের লক্ষ্মীর ভাঁড় পূরণ করত ল্যান্ডলাইন ব্যবসা। সেসব এখন অতীত। বাণিজ্যের বহর বাড়াতে এখন ব্রডব্র্যান্ডের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির মূল ভরসা মোবাইল পরিষেবা। সেখানেও আবার পাখির চোখ প্রিপেড সিম বিক্রি। সেই সিমের বেচাকেনা নিয়ে সংস্থাটি খুশি থাকবে, না চিন্তায় থাকবে, তা নিয়ে সংশয় কাটছিল না। কারণ, গত আর্থিক বছরে দোলাচলে ছিল বিক্রিবাটা। বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনোর হিসেব কষতে গিয়ে অবশ্য হাসি ফুটেছে এ রাজ্যের বিএসএনএল কর্তাদের মুখে।
এখানে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেয় বিএসএনএলের দু’টি সার্কেল। এর মধ্যে কলকাতা সার্কেলে গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়া আর্থিক বছরে সিম কার্ড বিক্রি হয়েছে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার ২৮৪টি। বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লক্ষ ৪০ হাজার। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে প্রায় ৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে, বেঙ্গল সার্কেলে মোট সিম বিক্রির পরিমাণ ৪ লক্ষ ৮০ হাজার ৭৩৩টি। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লক্ষ ১০ হাজার। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে ১৫৫ শতাংশ। বেঙ্গল সার্কেল যেহেতু বড়সড় সাফল্য পেয়েছে, তাই চলিত আর্থিক বছরের জন্য এক লাফে অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে লক্ষ্যমাত্রা। এবার তাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লক্ষ ৫৩ হাজার ৫০০টি। কলকাতায় সেই সংখ্যা ৬ লক্ষ ১৫ হাজার। লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়ার নিরিখে গোটা দেশের ২৬টি সার্কেলের মধ্যে বেঙ্গল সার্কেল সবচেয়ে এগিয়ে। লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনোর দৌড়ে অনেক পিছিয়ে আছে অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তর-পূর্বের কয়েকটি রাজ্য, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কেরল, কর্ণাটক প্রভৃতি। ভালো ফল করেছে অসম, জম্মু-কাশ্মীর, চেন্নাই, গুজরাত, ওড়িশা প্রভৃতি রাজ্য। তবে দেশে সার্বিকভাবে লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ পূরণ করতে পেরেছে বিএসএনএল। তাদের সিম বিক্রি হয়েছে গত এপ্রিল পর্যন্ত ২১ কোটি ৬৪ লক্ষ ৮ হাজার ৮৮টি।
গত বছর থেকে এ বছর পর্যন্ত বেশ কয়েক মাস ধরে বিক্রির হার বাড়লেও, তা থেকে আয় নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট ছিল না রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। বিনা পয়সায় সিম পাওয়ায় যাঁরা তা নিয়েছিলেন, তাঁদের সেই সিম রিচার্জ করতে অনীহা ছিল যথেষ্ট। অবশেষে সেই খরা কাটতে চলেছে বলে দাবি করেছেন সংস্থার কর্তারা। তাঁরা বলছেন, এখন যে সিম তাঁরা বিক্রি করছেন, তাতে আয়ের বহর বাড়ছে। এখানকার কলকাতা সার্কেলের প্রিন্সিপ্যাল জেনারেল ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গত মার্চ মাসেই শুধু প্রিপেড সংযোগ থেকে কলকাতা সার্কেলে আয় হয়েছে ৮ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা। গত ফেব্রুয়ারিতে তা হয়েছিল প্রায় সাড়ে ছ’কোটি টাকা। সৌমেন্দ্রনাথবাবুর কথায়, যে সিম থেকে আয় নেই, তার বিক্রির বহর বেড়ে যাওয়া খুব সুখের বিষয় নয়। তাই আমাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব ছিল আয়ের উপরই। তাতে আমরা সাফল্যের মুখ দেখতে পারছি, এটাই আনন্দের। অর্থাৎ সিম বিক্রি এবং তার থেকে আয়, দু’টি ক্ষেত্রেই আমরা সাফল্য পাচ্ছি। চলতি বছরেও আমরা চেষ্টা করব, যাতে তা ধরে রাখা যায়।