উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
সাধ্বী প্রজ্ঞা বিজেপির প্রার্থী তালিকায় হিন্দুত্বের অন্যতম মুখ। মালেগাঁও বিস্ফোরণে অন্যতম অভিযুক্ত তিনি। বর্তমানে জামিনে মুক্ত। লড়াই করছেন মধ্যপ্রদেশের ভোপাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে। তাঁর মূল প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা দিগ্বিজয় সিং। ২৬/১১ মুম্বই হামলায় শহিদ হেমন্ত কারকারের মৃত্যুকে তাঁরই ‘শাপের ফল’ বলে মন্তব্য করে কড়া নিন্দার মুখে পড়েছিলেন তিনি। চরম অস্বস্তিতে পড়ে সাধ্বীর মন্তব্যের দায় এড়িয়ে গিয়েছিল বিজেপি। পরে সাধ্বী নিজেও ভুল স্বীকার করে নেন। তবে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাধ্বী প্রজ্ঞার পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, প্রতীকি জবাব দিতেই ভোপাল কেন্দ্রে সাধ্বীকে প্রার্থী করা হয়েছে। যারা হিন্দুদের গায়ে মিথ্যা সন্ত্রাসবাদী তকমা সাঁটিয়ে অপপ্রচার করে, তাঁদের বিরুদ্ধে এই প্রতীকি জবাব।
আর তৎপর্যপূর্ণভাবে গতকালই একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বাবরি মসজিদের প্রসঙ্গ টেনে আনেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। তিনি বলেন, ‘১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর। আমিও অনেক মানুষের সঙ্গে বাবরি মসজিদ ধ্বংসে শামিল হয়েছিলাম। ওই দিন আমরা দেশের সব কালিমা ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছি। আর এটা করতে পেরে আমরা গর্বিত।’ এখানেই থেমে না থেকে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কাজ ‘ঈশ্বরের সুযোগ’ বলেও ওই সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। তাঁর কথায়, ‘সেদিন আমি বাবরি মসজিদের কাঠামোর একেবারে চূড়োয় উঠেছিলাম। তখন এই ভেবে আমি গর্ব অনুভব করেছিলাম যে, ঈশ্বরপ্রদত্ত সুযোগ ছাড়া এ কাজ সম্ভব নয়! আজও বলছি, আমি নিশ্চিত ওখানেই তৈরি হবে রাম মন্দির।’
ওই সাক্ষাৎকার প্রচারিত হওয়ার পর পরই নির্বাচন কমিশন নোটিস ধরায় সাধ্বী প্রজ্ঞাকে। ভোপালে প্রার্থী হওয়ার পর এই নিয়ে পর পর দু’বার কমিশনের ‘নোটিস-কোপে’ পড়লেন প্রজ্ঞা। কারকারেকে নিয়ে মন্তব্যে তিনি ঢোঁক গিলেছিলেন। কিন্তু বাবরি মসজিদ ইস্যুতে কমিশনের নোটিস পাওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘আমি যা বলেছি সত্যি বলেছি। কোনও কিছুই অস্বীকার করিনি। আমি আবারও বলছি, বাবরি মসজিদের কাঠামো আমি ধ্বংস করেছিলাম।’ সেই সঙ্গে সাধ্বী প্রজ্ঞা বলেছেন, আগামীদিনে রাম মন্দির গঠনেও আমি সক্রিয় অংশগ্রহণ করব। এবং কোনও শক্তিই নেই আমাকে রোধ করতে পারে!’ ভোপালে বিজেপির ‘প্রতীকি জবাব’-এর প্রার্থীর গলায় বেশ আত্মবিশ্বাসের সুর। যদিও সাধ্বী প্রজ্ঞার প্রার্থীপদ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে কংগ্রেস। ভোপাল লোকসভা কেন্দ্রে ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তি’র প্রার্থীর অভাব রয়েছে বিজেপিতে। সেই জন্যই মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরকে প্রার্থী করেছে বলে অভিযোগ করলেন ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল। শনিবার জঞ্জগির-চম্পা লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী রবি ভরদ্বাজের হয়ে প্রচারে এসে ওই মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ‘২০০১-০২ সালে বলোদাবাজারের বলাইগড়ে থাকার সময় সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর স্থানীয় এক ব্যক্তিকে ছুরি মেরেছিলেন। ওই ঘটনাটি স্থানীয় বাসিন্দারা জানেন। বিজেপি এমন একজনকে প্রার্থী করেছে, যিনি সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং দেশকে বিভাজন করার চেষ্টার সঙ্গে জড়িত।’ যদিও বাঘেলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। ‘রাজনৈতিক ফায়দা’ তুলতে প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে বিজেপির দাবি।
এদিকে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস প্রার্থী দিগ্বিজয় সিং অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘স্মার্ট সিটি’র গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি। ভোপালের সবুজ ধ্বংস করে কীভাবে স্মার্ট সিটি গড়ে তোলা হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।