নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: করোনা সতর্কতায় আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্য পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)-এর যাবতীয় পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। শুক্রবার প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সূত্রের দাবি, আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বড়, মাঝারি মিলিয়ে প্রায় ছয় থেকে সাতটি লিখিত পরীক্ষার সূচি নির্ধারিত ছিল। যেখানে সব মিলিয়ে প্রায় এক লক্ষ কর্মপ্রার্থী পরীক্ষায় বসতেন।
কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে করোনা সতর্কতায় বলা হয়েছে, জমায়েত কিংবা ভিড় যতটা সম্ভব এড়ানো যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সূত্রেই পিএসসি’র তরফে লিখিত পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। তবে লিখিত পরীক্ষা বাতিল করা হলেও এই সময়ে একাধিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ এবং ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া চালু থাকবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পিএসসি’র চেয়ারম্যান দেবাশিস বসু বলেন, পরীক্ষা নিতে আমরা ১০০ শতাংশ প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হল। নির্ধারিত এই পরীক্ষার দিনক্ষণ স্থির করতে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে কমিশন বৈঠক করবে। দেশ তথা রাজ্যের পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কমিশন সূত্রে দাবি, শনি ও রবিবার কারা, স্বাস্থ্য, উচ্চশিক্ষা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, প্রাণিসম্পদ বিকাশ সহ একাধিক দপ্তরের কয়েকশো পদে নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। আগামী ৪ ও ৫ এপ্রিল ছিল নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের অধীন সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পে (আইসিডিএস) সুপারভাইজার নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা, পরীক্ষার্থী ছিলেন প্রায় ৫০ হাজার। এছাড়াও রবিবার ওয়ার্ড মাস্টার পদে লিখিত পরীক্ষায় ৩০ হাজার পরীক্ষার্থীর বসার কথা ছিল। তাঁদের অ্যাডমিট কার্ডও দেওয়া হয়েছিল।
কমিশনের এক কর্তার দাবি, রাজ্য সরকার পিএসসি সংক্রান্ত পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে সামান্য বিলম্ব করেছে। কেননা আমরা নবান্নের কাছে এ বিষয়ে স্পষ্ট দিশা চেয়ে অনেকদিন আগেই আবেদন করি। শনিবার একাধিক পরীক্ষা রয়েছে। শুক্রবার দুপুর থেকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত তাঁদের জানানো হয়। পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ও ইমেল মারফত এই সিদ্ধান্ত জানানো হয় পিএসসি’র তরফে। তবে এত কম সময়ের মধ্যে ১০০ শতাংশ পরীক্ষার্থীর কাছে খবর পৌঁছনোর ক্ষেত্রে সংশয় রয়েছে। ফায়ার অপারেটর পদে শারীরিক পরীক্ষা ২৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল, সেটি হচ্ছে না বলে কমিশন জানিয়েছে।
এদিকে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষা বাতিল করা হলেও ফলাফল ও ইন্টারভিউয়ের প্রক্রিয়া চলবে। ডব্লুবিসিএস মেইন ২০১৮ এবং ডব্লুবিসিএস প্রিলিমিনারি ২০১৯-এর ফল প্রকাশ হবে। এছাড়াও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধীন লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট পরীক্ষার ইন্টারভিউ মার্চ মাসে হবে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অফিসার ২০১৯-এর ফল মার্চ মাসে প্রকাশিত হবে। খাদ্য দপ্তরের সাব ইন্সপেক্টর পদে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে এপ্রিল মাসে। কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের অধীন একাধিক লেকচারার পদে নিয়োগের ফল চলতি মাসে প্রকাশিত হবে। এছাড়াও মার্চ মাসে বের হবে স্কুল সাব ইন্সপেক্টর ২০১৮-এর চূড়ান্ত মেধাতালিকা। কমিশন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জনশিক্ষা প্রসারের অধীন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্টর সহ একাধিক পদে ইন্টারভিউয়ের প্রক্রিয়া মার্চে হবে। সাবঅর্ডিনেট ফরেস্ট সার্ভিস রিক্রুটমেন্ট পরীক্ষা ২০১৮-এর চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। মিসলেনিয়াস সার্ভিসেস ২০১৮ লিখিত পরীক্ষার ফল মার্চে প্রকাশিত হবে বলে কমিশন সূত্রে খবর।