উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
২০০৮ সালের ৩১ জানুয়ারি ওই শিক্ষক অবসর নেন। গ্র্যাচুইটির টাকা হাতে পান ২০১৪ সালের ১ আগস্ট। ফলে রাজ্যের পেনশন, প্রভিডেন্ড ফান্ড অ্যান্ড গ্রুপ ইনসিওরেন্স দপ্তরের অধিকর্তার কাছে তিনি দেরিতে ওই টাকা দেওয়ার জন্য সুদ প্রার্থনা করেন। সরকার নিরুত্তর থাকে। যে কারণে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি আদালত সরকারকে মামলাকারীর আবেদন বিবেচনা করে সুদের টাকা মিটিয়ে দিতে বলে। সেই নির্দেশমতো আসানসোলের ট্রেজারি অফিস তা মিটিয়ে দেয়। কিন্তু, তাঁর আবেদনটি ওই অধিকর্তা বিবেচনা করেন তার কিছুদিন পরে। ২০১৭ সালের জুন মাসে সেই অধিকর্তা জানান, সংশ্লিষ্ট জেলা স্কুল পরিদর্শকের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেরিতে গ্র্যাচুইটির টাকা দেওয়ার জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। তাই তিনি ওই সুদ পেতে পারেন না।
ওই অধিকর্তার এমন নির্দেশ উপরোক্ত ট্রেজারি অফিসেও পাঠানো হয়। সেইমতো ওই অফিস মামলাকারী ও তাঁর ব্যাঙ্কের কাছে সুদ বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত চায়। তিনি তা ফিরিয়েও দেন। কিন্তু, এমন সরকারি সিদ্ধান্ত তিনি আবারও হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেন। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও সরকারপক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য জমা পড়েনি। ফলে ওই অধিকর্তা কোন তথ্যের ভিত্তিতে উপরোক্ত সিদ্ধান্তে এলেন, তা আদালতের কাছে স্পষ্ট হয়নি। কিন্তু, মামলাকারীর আইনজীবী চন্দন দত্ত আদালতকে জানান, এই প্রাক্তন শিক্ষকেরই অন্য একটি মামলার নথি অনুযায়ী, চাকরিজীবনের শেষ প্রান্তে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল। যে সিদ্ধান্ত তিনি স্কুলশিক্ষা বিভাগের কমিশনারের কাছে চ্যালেঞ্জ করেন। সেই সূত্রে কমিশনার বিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর নির্দেশ দেন, শাস্তি হিসেবে ওই শিক্ষকের বেসিক পে থেকে তিনটি ইনক্রিমেন্ট কেবল বাদ যাবে। কিন্তু, তিনি পূর্ণ অবসরকালীন আর্থিক সুবিধা পাবেন।
এই প্রেক্ষাপটে আদালত তার রায়ে বলেছে, কমিশনার অব স্কুল এডুকেশনের ওই সিদ্ধান্ত কেউ চ্যালেঞ্জ করেছিল কি না জানা নেই। অথচ, তারপরেও সরকারি যুক্তিতে বলা হচ্ছে, দেরিতে গ্র্যাচুইটি দেওয়াটা ইচ্ছাকৃত নয়! অন্যদিকে, ওই দেরির জন্য মামলাকারীও দায়ী নন। ফলে সেই দেরির জন্য মামলাকারীকে কিছুতেই জরিমানা করা যায় না। তাই সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তাদেরই উদ্যোগ নিয়ে মামলাকারীর সুদ বাবদ প্রাপ্য ১ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩২১ টাকা দ্রুত মিটিয়ে দিতে হবে।