উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
ভোটের বাজারে চাহিদা মতো জোগান দিতে বিভিন্ন জেলাতেই লুকিয়ে চুরিয়ে চলছে বোমা তৈরির কাজ। দুই ২৪ পরগনা, দুর্গাপুর, আসানসোল সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় তা ‘ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে’ পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ। দিনরাত এক করে সেই কাজ করছে গ্রামের ডাকাবুকোদের একাংশ। অবৈধ বোমার কারবারে জড়িতরাও ভালো করে জানে, নির্বাচনের দিন ত্রাস সৃষ্টি করতে বোমাই বড় ভরসা ভোট ম্যানেজারদের। কার বোমা কতটা কার্যকর, তার পরীক্ষা হয় ওই দিনই। সেইমতো পরবর্তী ভোটে অর্ডার আসা নির্ভর করে। একবার কোনও বোমা কারবারির নামডাক হয়ে গেলে, তো কথাই নেই। রাজনৈতিক দাদাদের চাহিদা মতো বিভিন্ন ধরনের বোমার জোগান দিতে রীতিমতো নাভিশ্বাস ওঠে তাদের। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে বোমার দামও। কিন্তু গোপন ডেরায় তৈরি হওয়া বোমার সবটাই যে আসল, এমনটা নয়। তার সঙ্গে মিশছে ভেজালও।
কিন্তু কীভাবে জানা গেল? নির্বাচন পর্ব শান্তিতে করতে বিভিন্ন জেলায় চলছে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা উদ্ধারের কাজ। জেলায় জেলায় ইতিমধ্যেই বিপুল পরিমাণ বোমা উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছে। আর তা করতে গিয়েই ভেজাল বোমার কাহিনী সামনে আসে পুলিস অফিসারদের। বাজেয়াপ্ত হওয়া বোমা জলে ফেলতেই দেখা যায়, প্রায় ৪০ শতাংশই ভাসছে। এখান থেকেই সন্দেহের সূত্রপাত। কারণ বোমার মশলা ও স্প্লিন্টার থাকলে তা ভারী হবে। তাই স্বাভাবিক নিয়মে তা ডুবে যাওয়ারই কথা। ভেসে থাকা বোমার দড়ির পাক খুলতেই বেরিয়ে পড়ে আসল কাহিনী। দেখা যায়, ছোট ছোট ডাব এবং তালের উপর জড়ানো রয়েছে সুতলি দড়ি। ডাবের মুখ কেটে তার মধ্যে ঢোকানো হয়েছে দুএকটি ইটের টুকরো আবার কোনওটিতে তাও নেই। পুরোপুরি ফাঁকা। এমনকী ছোট আকারের তালের গায়ে ভালো করে সুতলি দড়ি বেঁধে তা বোমা বলে চালানো হয়েছে। এমনকী ইটের কুচোয় সুতলির পাক দিয়েও তৈরি করা হয়েছে ভেজাল বোমা। যা দেখে হতভম্ব অফিসাররা।
তদন্তকারী আধিকারিকদের বক্তব্য, আসলে বাড়তি মুনাফার লোভেই নকল বোমা তৈরি হচ্ছে। তা মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে আসল বোমার সঙ্গে। তাতে না আছে বারুদ, না আছে স্প্লিন্টার। ফলে তা বেচে দিতে পারলে পুরোটাই লাভ। জানা গিয়েছে, আসলের সঙ্গে মিশে রয়েছে অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ভেজাল বোমা। যেহেতু ফাটিয়ে দেখে নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই, তাই বিশ্বাসের উপর ভর করেই কিনে নিয়ে যাচ্ছে ভোট-ম্যানেজাররা। আর এর সুযোগটাই নিচ্ছে অবৈধ বোমার কারবারিরা।