শরীর ও স্বাস্থ্য

অ্যারিদমিয়াকে অবহেলা নয়

পরামর্শে অ্যাপেলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ পি সি মণ্ডল।

সুস্থ ও পূর্ণবয়স্ক মানুষের হৃদস্পন্দনের হার মিনিটে ৬০-১০০ বারের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। এর একটি নির্দিষ্ট ছান্দিক গতিও রয়েছে। কিন্তু বহু মানুষের ক্ষেত্রেই এই দুটো নিয়ম হার্ট মেনে চলে না। যদিও হার্টের সঙ্কোচন-প্রসারণের ছন্দ ও সময়ের হেরফের খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। বয়সভেদে এই হেরফেরও অস্বাভাবিক নয়। তবে তারও একটি মাত্রা আছে। মাত্রাহীন অসামঞ্জস্য হলে অবশ্যই চিকিৎসার প্রয়োজন। অনিয়মিত এই হৃদস্পন্দনকে চিকিৎসা পরিভাষায় ‘কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া’ বলা হয়। এই সমস্যা ইদানীং বাঙালি তথা ভারতীয়দের মধ্যে বাড়ছে। একটা সময় বয়স ৬০ পেরলে এসব সমস্যা দেখা দিত, কিন্তু ইদানীং কমবয়সিদের মধ্যেও এই অসুখের প্রবণতা বাড়ছে। 
অ্যারিদমিয়ায় প্লাম্বিং এবং ইলেকট্রিকস এই দু’টি ক্ষেত্রে মূলত সমস্যা দেখা দেয়। রক্তনালিতে ব্লক বা প্লাম্বিং থাকার কারণে হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা দেখা দেয়। প্লাম্বিং নিয়ে কিছুটা সচেতনতা জনমানসে থাকলেও ইলেকট্রিক্যাল ফল্ট সম্পর্কে আমজনতা খুব একটা ওয়াকিবহাল নয়। মূলত এই ধরনের ফল্টের কারণেই অ্যারিদমিয়া হয়।
অ্যারিদমিয়ার নানা ভাগ
অ্যারিদমিয়া হার্টের উপরের প্রকোষ্ঠ অ্যাট্রিয়া বা নীচের প্রকোষ্ঠ ভেনট্রিকলসে দেখা দিতে পারে। শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে তাল রেখে চলতে গিয়ে হৃদস্পন্দন একটু অনিয়মিত হতে পারে, একে সাইনাস অ্যারিদমিয়া বলে। তবে সাইনাস অ্যারিদমিয়া কোনও অসুস্থতার লক্ষণ নয়। তবে উদ্বেগের হয়ে ওঠে ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া এবং ট্যাকিঅ্যারিদমিয়া। কোনও রোগীর হার্টব্লকের কারণে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন হলে তাকে ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া বলে। এই সমস্যা হলে হৃদস্পন্দন ৬০-এর নীচে চলে যায়। ৩৫-এর নীচে চলে গেলে শক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ট্যাকিঅ্যারিদমিয়ার ক্ষেত্রে আবার হার্টরেট ১০০-র উপরে চলে যায়। সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে ব্র্যাডি ও ট্যাকির মাঝে হৃৎস্পন্দনের মাত্রা থাকা স্বাভাবিক। ট্যাকিঅ্যারিদমিয়ারও আবার ভাগ আছে। হার্টরেট বেড়ে যাওয়ার মধ্যে খুব প্রচলিত অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন। বয়সের সঙ্গে এই ধরনের ফিব্রিলেশনের প্রবণতা বাড়ে। 
ট্যাকিঅ্যারিদমিয়ার আর একটি ভাগ সুপ্রা ভেন্টিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া। এতে হার্টরেট বেশি হলেও একটি নির্দিষ্ট ছন্দে চলে। তবে এক্ষেত্রে হার্ট রেট ১৮০ পর্যন্ত উঠে যায়। এসব ক্ষেত্রে ওষুধ দিয়ে নয়তো শক দিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার ঘটনার পিছনে এই সমস্যাই বেশি দেখা যায়।
কেন অনিয়মিত হয় হার্টের ছন্দ?
হার্টের ভিতরে ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস গেলে তবেই আমাদের হার্ট সঙ্কুচিত হয়। এই ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস যেখানে তৈরি হয়, সেই স্থান যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, তা হলে হার্টরেট স্বাভাবিক না থেকে কমে যেতে পারে।
অনেকের ক্ষেত্রে জন্ম থেকেই এই সমস্যা থাকে। হার্টের যে দেওয়াল দান ও বাম প্রকোষ্ঠকে আলাদা করছে, সেই দেওয়ালে ফুটো থাকার কারণেও এমন সমস্যা দেখা দেয়। এক বলে কগনিজেন্টাল হার্ট ডিফেক্ট। এছাড়া অতিরিক্ত ধূমপান, জীবনে চলার পথে নানা স্ট্রেস, উদ্বেগ, হরমোনাল নানা সমস্যা থেকেও এরিদমিয়া হতে পারে। 
উপসর্গ কী কী
অনিয়মিত হার্ট বিটের সঙ্গে মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, শরীর কেঁপে ওঠা, বুক ধড়ফড়, দুর্বলতা সহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। ব্যক্তি ও বয়সভেদে উপসর্গ এক এক রকম হয়। 
কী কী পরীক্ষা করবেন
সাধারণত ইসিজি, হল্টার মনিটর, ইকোকার্ডিয়োগ্রাফ, লুপ রেকর্ডার এবং কয়েকটি  রক্ত পরীক্ষায় মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করা হয়।
আরোগ্যর উপায়
প্রাথমিকভাবে ওষুধ ও স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের উপর নির্ভর করে রোগীর চিকিৎসা করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে জীবনশৈলীর পরিবর্তনও করানো হয়। যাঁদের অনিয়মিত হার্টবিটের সমস্যা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে অত্যধিক ক্যাফিন, কোল্ড ড্রিঙ্ক, কোনও এনার্জি বুস্টার, সিগারেট, অ্যালকোহল, প্রসেসড ফুড, রেড মিট খাদ্যতালিকার বাইরে রাখবেন। যে পেশার সঙ্গেই যুক্ত থাকুন না কেন, এমন সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। 
কোনও রোগী অনিয়মিত হার্টবিটের সমস্যা নিয়ে মাথা ব্যথায় ভুগলে ও অজ্ঞান হয়ে গেলে তাঁর ক্ষেত্রে পেসমেকার বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। আবার কারও হার্টের অবস্থা দুর্বল হলে ও সঙ্গে অনিয়মিত হার্টবিটের সমস্যা থাকলে অটোমেটিক ইমপ্লান্টেবল কার্ডিয়োভার্টার-ডিফিব্রিলেটর বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এই রোগের ক্ষেত্রে সময় খুব বড় ফ্যাক্টর। তাই উপসর্গ ধরা পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
লিখেছেন মনীষা মুখোপাধ্যায়
9h 9m ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাপড়ের ব্যবসায় অগ্রগতি। পেশাদার শিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। উচ্চ/উচ্চতর শিক্ষায় উন্নতি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৯৯ টাকা৮৪.৭৩ টাকা
পাউন্ড১১০.৩৮ টাকা১১০.৩৮ টাকা
ইউরো৯১.৮১ টাকা৯৫.০১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
2nd     October,   2024
দিন পঞ্জিকা