কলকাতা

পে-লোডার উল্টে পিষ্ট নবম শ্রেণির পড়ুয়া,  বাঁশদ্রোণীতে ধুন্ধুমার

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গর্তে ভরা বাঁশদ্রোণীর দীনেশনগর রোড। তারই একটি বিশালাকার ‘গহ্বরে’ হেলে পড়ে রয়েছে পে-লোডার। পাশে ভাঙাচোরা রাস্তায় চাপচাপ রক্তের দাগ। পড়ে আছে বই-খাতা ভর্তি নীল ব্যাগ, আর সাইকেল। এলাকায় কান্নার আর্তনাদ, বিক্ষোভ, অবরোধ। ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট বেহালা চৌরাস্তার স্মৃতি উস্কে দিল দীনেশনগর অটোস্ট্যান্ড। ফের মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল স্কুলপড়ুয়ার। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে ধাক্কা, তারপর বছর পনেরোর সৌম্য শীলকে পিষে দিল পে-লোডারটি। বুধবার সাতসকালে টিউশন পড়তে যাচ্ছিল ওই কিশোর। পে-লোডারের চালকের আসনে তখন শিক্ষানবীশ খালাসি। ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিস। সকালে আটক ও রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চালককে। কিন্তু তাতে জনতার ক্ষোভে প্রলেপ দেওয়া যায়নি। দুর্ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। পুলিস ও পুরসভার গাফিলতির বিরুদ্ধে ক্ষোভের বিস্ফোরণ এবং ভাঙচুর। স্থানীয় মহিলাদের হাতে আক্রান্ত হলেন পাটুলি থানার অফিসার ইনচার্জ তীর্থঙ্কর দে’ও। মারধরের ঘটনায় রাত পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করেছে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিস।
নরেন্দ্রপুরের গীতানগরের বাসিন্দা সৌম্য। প্রতিদিন সকাল ৭টা নাগাদ দীনেশনগর অটোস্ট্যান্ডের কাছে টিউশন পড়তে আসে সে। সঙ্গী তার প্রিয় সাইকেল। এদিনও নির্ধারিত সময়ে টিউশন স্যারের বাড়ির সামনে পৌঁছে যায় কিশোর। এলাকাটা কলকাতা পুরসভার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। রাস্তা মেরামতির কাজ চলছিল সেখানে। পে-লোডার পিছতে দেখে সাইকেল নিয়ে থমকে যায় সৌম্য। রাস্তার ধার ঘেঁষে সরে দাঁড়ায় সে। তখনই ভুল হাতলে চাপ দেয় চালকের আসনে বসা খালাসি। ফলে পে-লোডারটির সামনের হাইড্রলিক বেলচার বদলে নেমে আসে পিছনেরটি। সরাসরি আঘাত করে কিশোরের মাথায়। এরপরই গর্তে ভরা রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ রাখতে না হেলে পড়ে পে-লোডারটি। পিছনের হাইড্রলিক বেলচা পিষে দেয় স্কুলপড়ুয়ার মাথা। আশপাশ থেকে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে চম্পট দেয় খালাসি। স্থানীয়রাই কিশোরকে উদ্ধার করে বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে সৌম্যকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। 
বাঙ্গুর হাসপাতালে মৃতের বাবা শঙ্কর শীল তখন শোকে পাথর। বলছিলেন, ‘স্ত্রী ফোন করে বলেছিল তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে এসো। টিউশন স্যার ফোন করে বলেছে, ছেলের কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। তবে ফোনে স্পষ্ট করে কিছুই বলতে চাননি স্যার। আমি আর ওর মা তাড়াতাড়ি অটো করে দীনেশনগরে যেতেই দেখলাম স্থানীয়রা পে-লোডার ভাঙচুর করছেন। পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ঘটনাটা শুনেই হাসপাতালে ছুটেছি। এসে জানলাম ছেলে আর নেই’। শঙ্করবাবুর কথা শেষ করতে না করতেই হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন সৌম্যর মা। মাঝে মাঝেই জ্ঞান হারাচ্ছেন। বলছিলেন, ‘সাত বছর ধরে ওই এলাকায় কাজ হচ্ছে। পুরসভার এই গাফিলতির জন্যই আমার ছেলেকে চলে যেতে হল। একজন খালাসি কীভাবে রাস্তায় পে-লোডার চালাতে পারে? ওটা কি পে-লোডার শেখার জায়গা?’ 
হাসপাতাল চত্বরে যখন কান্না, আর্তনাদের রোল, দীনেশনগর এলাকায় তখন বিক্ষোভ, হাতাহাতি চলছে। পুরসভার তরফে কাজ করা দু’টি পে-লোডার সম্পূর্ণ ভেঙে দেয় উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পৌঁছয় বাঁশদ্রোণী, পাটুলি, গল্ফগ্রিন, নেতাজিনগর, রিজেন্ট পার্ক থানার বিশাল পুলিস বাহিনী। বাঁশদ্রোণী থানার ওসির উপর চড়াও হয় এলাকাবাসী। বিক্ষোভ, মারধরের পাশাপাশি তাঁর গায়ে কাদাজলও ছিটিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ডিসি (এসএসডি) বিদিশা কলিতার নেতৃত্বের ডিভিশনাল রিসার্ভ ফোর্সও মোতায়েন করা হয় ঘটনাস্থলে। প্রায় সাতঘণ্টা বিক্ষোভের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মাও। বিক্ষোভকারীরা বলেন, রাস্তার ভয়াবহ অবস্থার জন্যই এই দুর্ঘটনায়। এর দায় একমাত্র কাউন্সিলারের। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধিকে ঘটনাস্থলে আসার দাবি জানান এলাকার মহিলারা। যদিও তিনি আসেননি। এপ্রসঙ্গে বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অনিতা কর মজুমদারকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। মেসেজ করা হলেও উত্তর মেলেনি। 
9h 9m ago
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাপড়ের ব্যবসায় অগ্রগতি। পেশাদার শিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। উচ্চ/উচ্চতর শিক্ষায় উন্নতি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৯৯ টাকা৮৪.৭৩ টাকা
পাউন্ড১১০.৩৮ টাকা১১০.৩৮ টাকা
ইউরো৯১.৮১ টাকা৯৫.০১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
2nd     October,   2024
দিন পঞ্জিকা